Ajker Patrika

বিয়ে আর গান

সম্পাদকীয়
বিয়ে আর গান

বরযাত্রী হয়ে এক বিয়েতে যাচ্ছিলেন নজরুল। ভবানীপুর থেকে বাগবাজার। বরের গাড়ির পর যে বাস দাঁড়িয়ে আছে, তাতেই সওয়ার হয়েছিলেন তিনি।কালোপাড়ের তাঁতের ধুতি, খদ্দরের পাঞ্জাবি আর রঙিন উড়নি তাঁর পোশাক। দূর থেকে অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তকে দেখতে পেয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন নজরুল, ‘চলে এস।’

এমনিতেই বাসে চাপাচাপি, সেখানে কোথায় গিয়ে বসবেন অচিন্ত্য? কিন্তু কে শোনে কার কথা! নজরুল বললেন, ‘আমাদের আবার কষ্ট! দে গরুর গা ধুইয়ে!’

পুরো রাস্তায় একাই কথা বলে গেলেন নজরুল। বরের গাড়ি আগে পৌঁছেছিল, মামুলি উলু আর শঙ্খধ্বনিও উঠেছিল, কিন্তু যখন নজরুলকে নিয়ে বাসটা পৌঁছাল, 
তখন শুরু হলো উল্লাস। সঙ্গে সঙ্গে চলে এল হারমোনিয়াম। কে আর তখন বরের খোঁজ করে। নজরুলের সামনেই বসে গেল শ্রোতার দল।

নজরুল কিন্তু শুরুতে নিজের গান ধরলেন না। ধরলেন রবীন্দ্রসংগীত, ‘তোমার সুখের ধারা ঝরে যেথায় তারি পারে’। সেখানে ছিলেন ফেলুদা, তিনি ধরলেন, ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে...’। নজরুল উত্তর দিলেন, ‘দাঁড়িয়ে আছো তুমি আমার গানের ওপারে...’।

হঠাৎ আলো চলে গেল। চারদিকে অন্ধকার। তাতে কী! চলতে থাকল গান। এবার নিজের গান ধরলেন নজরুল, ‘মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর...’। আলো যখন ফিরে এল, তখন নজরুল গাইছেন নিজের লেখা গজল, ‘আমারে চোখ ইশারায় ডাক দিলে হায় কে গো দরদি...’। সেটা শেষ হতেই ‘এত জল ও কাজল চোখে পাষাণী আনলে বলো কে?...’ এবং তারপর ‘ভুলি কেমনে আজো যে মনে বেদনা সনে রহিল আঁকা...’।

অন্য কেউ গান করলে মানুষ প্রশ্ন করে, ‘ও থামতে জানে তো...?’ অচিন্ত্যকুমারের মনে হলো নজরুলই একমাত্র ব্যতিক্রম, যে থামলে মানুষ ভাবে, ‘ও থামে কেন...?’

পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানটা হয়ে উঠল নজরুলের সংগীতসন্ধ্যা। তাতে অবশ্য কেউই অখুশি হলো না। 

সূত্র: অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, নজরুল সঙ্গ ও প্রসঙ্গ, পৃষ্ঠা ৩০-৩১

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত