Ajker Patrika

নিম্ন আয়ের মানুষ বাঁচবে কীভাবে

সম্পাদকীয়
নিম্ন আয়ের মানুষ বাঁচবে কীভাবে

মানুষের সুস্থ থাকার জন্য আমিষ খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শরীর গঠন ও বৃদ্ধির জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। মাছ, মাংস—বিশেষ করে ডিমের মধ্যে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকে। বাংলাদেশে এখনো প্রতি আটজনের একজন আমিষজাতীয় খাবার খেতে পায় না।

আর আমিষের প্রধান উপাদান হলো মাছ। রাজধানীর বাজারগুলোতে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চাষের মাছ। বাড়তি দামের কারণে স্বল্প আয়ের মানুষকে বাজার থেকে মাছ না কিনেই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘সব মাছের দাম চড়া’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

২০২২ সালের জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। শুধু এ খাতে নয়, ১৩টি খাতে বিশ্বে বাংলাদেশ গৌরবোজ্জ্বল অবস্থান তৈরি করেছে। এসব খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে। এমন অবস্থান তৈরি করতে সরকারের নীতি-পরিকল্পনা যেমন ভূমিকা রেখেছে, তেমনি উদ্যমী সাধারণ মানুষের অবদানও কম নয়। এভাবে সবার অবদানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে উত্থান ঘটেছে, তা আজ বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছে।

স্বাস্থ্যবিদদের মতে, আমিষ আমাদের খাদ্যের ছয়টি উপাদানের মধ্যে অন্যতম একটি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমিষজাতীয় খাদ্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাংলাদেশের একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক আমিষ লাগে ৩৩-৬৬ গ্রাম। তাই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতিদিন দুই-তিনবার আমিষযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। আর গর্ভবতী মা যদি প্রয়োজনীয় পরিমাণ আমিষ না পান, তাহলে পেটের শিশুর বিকাশ ধীরগতিতে হয়। খাদ্যে আমিষের ঘাটতিজনিত কারণে শিশুদের গা ফোলা রোগ হয়। আমিষের অভাবে শিশুদের মস্তিষ্ক ঠিকমতো বিকাশ লাভ করে না।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যের কারণে আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। যেখানে তিন বেলা পেট পুরে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, সেখানে আমিষের কথা ভাবা আকাশ-কুসুম কল্পনা তাদের কাছে। কিছুদিন আগেও ইলিশ, রুই, কাতলা মাছের বিকল্প হিসেবে সিলভার কার্প, তেলাপিয়া ও পাঙাশের মতো কম দামি মাছ দিয়ে তারা আমিষের চাহিদা পূরণ করত। কিন্তু সেই সব মাছও এখন নাগালের বাইরে চলে গেছে। আর মাছের বিকল্প হিসেবে গরিব মানুষেরা যে ডিম খেত, সেটাও তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাহলে তারা কীভাবে আমিষের চাহিদা পূরণ করবে?

মাছ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, প্রজনন মৌসুমে ১২ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ আছে। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে সমুদ্রে জেলেরা জাল ফেলতে পারছেন না। ফলে বাজারে ইলিশ না থাকার অজুহাতে দেশি মাছের দাম বেড়েছে। কথাগুলো কতটুকু যৌক্তিক? আসলে বাজারে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর মতো মাছের দামও বাড়ানো হয়েছে। এখানেও সিন্ডিকেট ক্রিয়াশীল বলে ধারণা করা যায়।

বাজার তদারকির মাধ্যমে মাছের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। সাধারণ মানুষ সরকারের এই ইতিবাচক নিয়ন্ত্রণ দেখতে পাবে কি?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় স্কুলশিক্ষক গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত