Ajker Patrika

খড়ের সাজে উৎসবের বার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ০৬
খড়ের সাজে উৎসবের বার্তা

ঠক! ঠক! ঠক! উৎসবের দিন দরজায় এমন কড়া নাড়ার শব্দ মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে আসে। এই বুঝি কাছের কোনো আত্মীয় খোঁজ নিতে এল। কিন্তু দরজা খুলেই দেখা মিলল কিম্ভূতকিমাকার এক দল লোকের। খড় দিয়ে মুখ ঢাকা! হাত, পা আর দেহের বিভিন্ন জায়গায় খড়ের গয়না। হাতে নিয়ে গান-বাজনার সরঞ্জাম। মুখে উৎসবের বার্তা।

এ দৃশ্য অদ্ভুত মনে হলেও প্রায় ৪০০ বছর ধরে আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দারা এর সঙ্গে পরিচিত। প্রতিবছর বড়দিনের সময় এমন লোকেদের দেখতে পাওয়া যায়। দেশটির সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে উৎসবের এ বাহারি প্রথা। করোনাভাইরাসের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যখন আতঙ্কের নাম, তখন তাঁরা এসে শুনিয়ে যান আনন্দের বার্তা। ঘর থেকে ঘরে ঘুরে আলোকিত করেন উৎসবের রং। কবিতা, ছড়া, গান আর নাচের পাশাপাশি করেন অভিনয়ও।

মার্কিন সাময়িকী ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রথা প্রায় হারিয়ে যেতে বসে। আয়ারল্যান্ডে সামাজিক গোষ্ঠীর ভাঙনের ফলে গুরুত্ব হারায় খড়ের এ সাজ। সাত বছর আগে এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বড় প্রকল্প হাতে নেন লেইট্রিম কাউন্টির একজন চিত্রশিল্পী এডউইনা গুকিয়ান। তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয় স্থানীয় কয়েকটি মাইম বা মূকাভিনয় ক্লাব। জমিতে প্রথমে চাষ করা হয় এসব খড়। এরপর সেগুলো দিয়ে হাতে হাতে বানানো হয় মাস্ক এবং পোশাক। বানানো শেষে প্রায় ৩০০ মূকাভিনয় শিল্পী এগুলো পরে পুরো ডিসেম্বর মাস ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। শেষে খড় পুড়িয়ে আয়োজন করা হয় ভোজের।

তবে এদের মূকাভিনয় শিল্পী বলা যাবে না। আবার ‘খড়ের মানুষ’ও নয়। স্থানীয়ভাবে নাম দেওয়া হয়েছে ‘মমার্স’। শব্দটি মূকাভিনয়ের ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড ছাড়াও ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং কানাডায়ও ব্যবহার করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত স্থানীয় তত্ত্বাবধায়ক অ্যান ও’ডাউড জানান, ষোড়শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ড থেকে এ প্রথা প্রথম আয়ারল্যান্ডে আসে। খড়ের পোশাক পরা প্রত্যেকে আইরিশ ইতিহাসের বীরদের প্রতিনিধিত্ব করেন। এদের মধ্যে একজন সেন্ট প্যাট্রিক। কখনো ভিলেন সেজে মঞ্চস্থ করে ছোট্ট নাটিকা।

ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল ফোকলোর কালেকশন বিভাগের পরিচালক ক্রিস্টোর ম্যাক কারথাই বলেন, কখনো এরা ঘরের কাউকে না জানিয়েই চুপি চুপি তাঁদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। প্রথমে অদ্ভুত সাজে বাচ্চারা ভয় পেলেও পরে মজা পেতে শুরু করে। আইরিশ সাহিত্যেও এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।

প্রত্যেক দলে একজন থাকেন, যিনি এসেই আগমনী বার্তা দেন। এরপর ইতিহাস, ঐতিহ্য আর বীরত্বের কাহিনি বলতে শুরু করেন। কখনো গান গেয়ে, কখনো কবিতা আবৃত্তি করে কিংবা অভিনয় করে। কেউ খুশি হয়ে অর্থ সহায়তা করলে তার একটা বড় অংশ চলে যায় দাতব্য প্রতিষ্ঠানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত