Ajker Patrika

পর্যটনে আবার স্থবিরতা

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৭
পর্যটনে আবার স্থবিরতা

বান্দরবানে করোনার প্রভাবে দিন দিন কমছে পর্যটকের সংখ্যা। আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট প্রায় পর্যটকশূন্য। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের আনাগোনা নেই। বান্দরবানের পর্যটন খাতে আবারও স্থবিরতা নেমে এসেছে।

গত সোমবার বান্দরবানের মেঘলা ও নীলাচল পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভরা পর্যটন মৌসুম হলেও পর্যটকের সংখ্যা একেবারে হাতে গোনা কয়েকজন। মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রের প্রধান ফটকে (গেট) ভিড় নেই। টিকিট কাউন্টারের সামনে নেই পর্যটকের সারি। সামনের দোকানগুলোও ক্রেতাশূন্য।

জেলা প্রশাসন পরিচালিত মেঘলায় প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা সুকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সোমবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত মাত্র ১০০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর আগের দিন রোববার ৩৯৮টি টিকিট বিক্রি হয়।

সুকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বান্দরবানে পর্যটনের ভরা মৌসুম। এ সময় মেঘলায় বিপুল পর্যটকে মুখর থাকে। অন্য বছরে এ সময় প্রতিদিন মেঘলায় গড়ে দুই হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। কিন্তু করোনার কারণে এবার পর্যটন মৌসুমেও লোকজনের আগমন নেই বলা যায়।

মেঘলার সামনে শ্যামল দাশ নামের এক দোকানি বলেন, আগে যেখানে প্রতিদিন তাঁর দোকানে ৫-৬ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হতো, গত দু-তিন দিন ১ হাজার টাকাও বিক্রি হয় না।

এদিকে সোমবার নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রেও পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম ছিল। জেলা প্রশাসন পরিচালিত এ পর্যটনকেন্দ্রে প্রতিটি টিকিটের দাম ৫০ টাকা। এর দায়িত্বে থাকা আদিব বড়ুয়া জানান, সোমবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত মাত্র ১৫০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে নীলাচলে। গত রোববার টিকিট বিক্রি হয় ৬০০টি।

বান্দরবানের আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টেও পর্যটকের সংখ্যা একেবারে কমে গেছে। হোটেলগুলো প্রায়ই খালি। এতে করে আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়েছেন বান্দরবানের হোটেল-রিসোর্ট মালিকরা।

জেলা হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, জেলায় ৭৮টি হোটেল-রিসোর্ট সমিতির অন্তর্ভুক্ত। এর বাইরে আরও হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। বর্তমানে পর্যটন মৌসুমে হোটেল-রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর থাকার কথা। কিন্তু এখন প্রতিদিন গড়ে এক হাজার পর্যটক হোটেল-রিসোর্টগুলোতে থাকছেন। উপজেলাগুলোতেও পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে।

হোটেল পালকির মালিক আলাউদ্দিন শাহরিয়ার বলেন, বান্দরবান জেলা সদরে থাকা হোটেল-রিসোর্টগুলোতে ২০ হাজারের বেশি লোক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে এসবের বেশির ভাগই খালি বলা যায়। তিনি জানান, তাঁর হোটেলের প্রায় কক্ষই বুকিং নেই। অন্যান্য হোটেল-রিসোর্টেও পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম।

আলাউদ্দিন শাহরিয়ার বলেন, গত দুই বছরই পর্যটন মৌসুমে বান্দরবানের হোটেল-রিসোর্টগুলো বন্ধ ছিল। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে হোটেল-রিসোর্ট করেছেন। প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। পর্যটক কম থাকায় তাঁরা হোটেল পরিচালনা, হোটেল স্টাফদের বেতন, বিদ্যুৎ, পানি ও ইন্টারনেট বিল পরিশোধ করতে চরম বেকায়দায় পড়েছেন। গত দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার সময় আবারও করোনার কারণে তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত