রহমান মৃধা
সুইডেনে ‘এ’ থেকে ‘ই’ প্রাইমারি স্কুলের পাসের গ্রেড। ‘এ’ সর্বোচ্চ পাসের হার আর ‘ই’ সর্বনিম্ন। ‘এফ’ যারা পায়, তারা ফেলের দলে পড়ে। হাইস্কুলে পাসের গ্রেড এমভিজি (MVG), ভিজি (VG) ও জি (G)।
এরা পাস করার পর নানা জনে নানা জায়গা বেছে নেয়।
হাইস্কুল পাসের পর কেউ উচ্চশিক্ষা বেছে নেয়, আবার কেউ বিভিন্ন পেশায় যোগ দেয়। উচ্চশিক্ষা বেছে নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীর বা নিজ দেশের বড় বড় জটিল সমস্যার সমাধান করা। অনেকে নতুনত্বের আবির্ভাব ঘটিয়ে নোবেল পুরস্কারের মতো খ্যাতি অর্জন করে।
পরীক্ষায় ভালো ফল করা মানে তাকে নিয়ে মা-বাবা, সমাজ এবং দেশ স্বপ্ন দেখে। কারণ, এসব মেধাবী দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করবে। যারা কর্মজীবন বেছে নেয়, তারা দেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নে সাহায্য করবে—এটাই সবাই আশা করে।
দেশ গড়ায় সবার সর্বাঙ্গীণ অংশগ্রহণ করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই নিয়ম হাজারো সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশের মানুষের জন্য আরও বেশি প্রযোজ্য হওয়ার কথা। কিন্তু মনে হচ্ছে বাংলাদেশে বিষয়টি এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে সবাই লেখাপড়া শিখে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা প্রশাসনের দায়িত্ব নেয়। দেশ তাদের থেকে অনেক কিছু আশা করে, তাদের নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু তাদের কর্মজীবনের ফল জিপিএ-৫-এর মতো গর্বিত করে না; বরং তাদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে!
কারণ, তারা তাদের নিজেদের জীবনের মান বাড়াতে বালিশের কভারের দাম ১০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ধনী হতে উঠেপড়ে লাগে। অনেকে বড় চাকরিতে ঢুকে অন্যকে ঠকিয়ে নিজের জীবনের মান উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। নানা রকম দুর্নীতি করে বড়লোক হয়। কারণ, তারা তাদের নিজেদের প্রেস্টিজ এবং লাজ-শরমের মাথা খেয়ে কুকর্মে উঠেপড়ে লাগে। তারা সব করতে রাজি জীবনে টাকা রোজগার করার জন্য। আর যারা কোনো রকম পাস করে কর্মরত, তারা কেরানি হয়ে কোটি কোটি টাকা মেরে বড়লোক হয়েছে। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বর্জন করার কথা দুর্নীতি এবং অনীতি। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষার ফল পুরোটাই উল্টো হয়েছে। কী অন্যায় দেশ করেছে যে এমনটি হলো?
যদি এমন হতো যে শুধু ৩৩-এ পাস করে যারা তারাই শুধু সমাজের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে, তাহলে বলতাম পাসের মান বাড়ানো হোক। সর্বনিম্ন পাসের হার ৩৩, তাই হয়তো অধঃপতনের কারণ। কিন্তু তা নয়; বরং যত ভালো ফলাফল, তত বেশি দুর্নীতি! জিপিএ-৫ পেয়ে যদি কেউ বালিশের কভারের দাম ১০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করতে পারে, তবে ৩৩ পেয়ে কেন কোটি টাকার মালিক হতে পারবে না?
জিনিসের দাম বেড়েছে, মানুষের অহংকার বেড়েছে, অথচ চরিত্রের সর্বনিম্ন মান ৩৩-এর নিচেই রয়েছে। মনের মানের মূল্য যে শিক্ষা বাড়াতে ব্যর্থ হয়, সে শিক্ষার নাম কুশিক্ষা।
বাংলাদেশের শিক্ষার মান কমেছে। কারণ, শিক্ষায় কারচুপি ঢুকেছে, যার ফলে মনুষ্যত্বের অবক্ষয়ের সঙ্গে জাতির নৈতিক অবনতি ঘটেছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে মন্ত্রীর পরিবর্তন হয়েছে। সিস্টেমের পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে যথাযথভাবে পরিবর্তন আনতে, কিন্তু তেমন ভালো ফল দেখা যাচ্ছে না। কী কারণ থাকতে পারে এই মূল্যবোধের অধঃপতনের পেছনে? বিবেকের অবক্ষয়, নাকি মনুষ্যত্বের অধঃপতন? শুধু আত্মসুখই কি প্রকৃত সুখ?
প্রকৃত সুখ হতে হবে সমষ্টিগতভাবে। কারণ, আমরা মানবজাতি একে অন্যের সঙ্গে আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ। তাই আমাদের সমষ্টিগতভাবে পরস্পরের সান্নিধ্যে জীবনকে সুখময় করে তোলার মধ্যেই আমাদের প্রকৃত সুখ নিহিত।
জীবনের প্রশিক্ষণ শুধু পাঠশালাতে সীমাবদ্ধ নয়, তার শুরু ঘরে, পরিবারে এবং সর্বোপরি নিজের মধ্যে। সচেতন জাতি নিজ থেকে পরিবর্তনের পথ খুঁজে বের করে। আমরাও নিশ্চয়ই সেই পরিবর্তনের পথ খুঁজে বের করব এবং নতুন করে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব।
লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
সুইডেনে ‘এ’ থেকে ‘ই’ প্রাইমারি স্কুলের পাসের গ্রেড। ‘এ’ সর্বোচ্চ পাসের হার আর ‘ই’ সর্বনিম্ন। ‘এফ’ যারা পায়, তারা ফেলের দলে পড়ে। হাইস্কুলে পাসের গ্রেড এমভিজি (MVG), ভিজি (VG) ও জি (G)।
এরা পাস করার পর নানা জনে নানা জায়গা বেছে নেয়।
হাইস্কুল পাসের পর কেউ উচ্চশিক্ষা বেছে নেয়, আবার কেউ বিভিন্ন পেশায় যোগ দেয়। উচ্চশিক্ষা বেছে নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীর বা নিজ দেশের বড় বড় জটিল সমস্যার সমাধান করা। অনেকে নতুনত্বের আবির্ভাব ঘটিয়ে নোবেল পুরস্কারের মতো খ্যাতি অর্জন করে।
পরীক্ষায় ভালো ফল করা মানে তাকে নিয়ে মা-বাবা, সমাজ এবং দেশ স্বপ্ন দেখে। কারণ, এসব মেধাবী দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করবে। যারা কর্মজীবন বেছে নেয়, তারা দেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নে সাহায্য করবে—এটাই সবাই আশা করে।
দেশ গড়ায় সবার সর্বাঙ্গীণ অংশগ্রহণ করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই নিয়ম হাজারো সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশের মানুষের জন্য আরও বেশি প্রযোজ্য হওয়ার কথা। কিন্তু মনে হচ্ছে বাংলাদেশে বিষয়টি এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে সবাই লেখাপড়া শিখে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা প্রশাসনের দায়িত্ব নেয়। দেশ তাদের থেকে অনেক কিছু আশা করে, তাদের নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু তাদের কর্মজীবনের ফল জিপিএ-৫-এর মতো গর্বিত করে না; বরং তাদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে!
কারণ, তারা তাদের নিজেদের জীবনের মান বাড়াতে বালিশের কভারের দাম ১০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ধনী হতে উঠেপড়ে লাগে। অনেকে বড় চাকরিতে ঢুকে অন্যকে ঠকিয়ে নিজের জীবনের মান উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। নানা রকম দুর্নীতি করে বড়লোক হয়। কারণ, তারা তাদের নিজেদের প্রেস্টিজ এবং লাজ-শরমের মাথা খেয়ে কুকর্মে উঠেপড়ে লাগে। তারা সব করতে রাজি জীবনে টাকা রোজগার করার জন্য। আর যারা কোনো রকম পাস করে কর্মরত, তারা কেরানি হয়ে কোটি কোটি টাকা মেরে বড়লোক হয়েছে। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বর্জন করার কথা দুর্নীতি এবং অনীতি। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষার ফল পুরোটাই উল্টো হয়েছে। কী অন্যায় দেশ করেছে যে এমনটি হলো?
যদি এমন হতো যে শুধু ৩৩-এ পাস করে যারা তারাই শুধু সমাজের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে, তাহলে বলতাম পাসের মান বাড়ানো হোক। সর্বনিম্ন পাসের হার ৩৩, তাই হয়তো অধঃপতনের কারণ। কিন্তু তা নয়; বরং যত ভালো ফলাফল, তত বেশি দুর্নীতি! জিপিএ-৫ পেয়ে যদি কেউ বালিশের কভারের দাম ১০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করতে পারে, তবে ৩৩ পেয়ে কেন কোটি টাকার মালিক হতে পারবে না?
জিনিসের দাম বেড়েছে, মানুষের অহংকার বেড়েছে, অথচ চরিত্রের সর্বনিম্ন মান ৩৩-এর নিচেই রয়েছে। মনের মানের মূল্য যে শিক্ষা বাড়াতে ব্যর্থ হয়, সে শিক্ষার নাম কুশিক্ষা।
বাংলাদেশের শিক্ষার মান কমেছে। কারণ, শিক্ষায় কারচুপি ঢুকেছে, যার ফলে মনুষ্যত্বের অবক্ষয়ের সঙ্গে জাতির নৈতিক অবনতি ঘটেছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে মন্ত্রীর পরিবর্তন হয়েছে। সিস্টেমের পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে যথাযথভাবে পরিবর্তন আনতে, কিন্তু তেমন ভালো ফল দেখা যাচ্ছে না। কী কারণ থাকতে পারে এই মূল্যবোধের অধঃপতনের পেছনে? বিবেকের অবক্ষয়, নাকি মনুষ্যত্বের অধঃপতন? শুধু আত্মসুখই কি প্রকৃত সুখ?
প্রকৃত সুখ হতে হবে সমষ্টিগতভাবে। কারণ, আমরা মানবজাতি একে অন্যের সঙ্গে আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ। তাই আমাদের সমষ্টিগতভাবে পরস্পরের সান্নিধ্যে জীবনকে সুখময় করে তোলার মধ্যেই আমাদের প্রকৃত সুখ নিহিত।
জীবনের প্রশিক্ষণ শুধু পাঠশালাতে সীমাবদ্ধ নয়, তার শুরু ঘরে, পরিবারে এবং সর্বোপরি নিজের মধ্যে। সচেতন জাতি নিজ থেকে পরিবর্তনের পথ খুঁজে বের করে। আমরাও নিশ্চয়ই সেই পরিবর্তনের পথ খুঁজে বের করব এবং নতুন করে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব।
লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪