Ajker Patrika

শঙ্কা কাটিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ৩৫
শঙ্কা কাটিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট

সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার, মৌলভীবাজারের জুড়ী এবং হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণের কারণে নানা শঙ্কা থাকলেও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে উৎসব মুখর পরিবেশে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলে ভোটগ্রহণ। প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি।

ছাতক: উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। কেন্দ্র দখল করলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) মো. অদুদ আলম ও আ. লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ এক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার জাহাঙ্গীর আজাদ ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কেন্দ্রের সামনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হলে আমি তাৎক্ষণিক ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেই।’

অন্যদিকে উপজেলার দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের জাতুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দোয়ারাবাজার: উপজেলায় পুরুষদের তুলনায় নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। উপজেলার নরসিংহপুর ইউনিয়নের বালিউরা ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ভোট কেন্দ্রের বাইরে ইউপি সদস্য প্রার্থী আব্দুল হাকিম ও মতিউরের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেব দুলাল ধর বলেন, ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভোট কেন্দ্রে কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। পরে পুনরায় ভোট গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়।

আজমিরীগঞ্জ: শঙ্কা থাকলেও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের ৫টি ইউপিতে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আজমিরীগঞ্জ সদর, শিবপাশা ও জলসুখা ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকেই নারী ভোটারদের ছিল দীর্ঘ লাইন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে।

এদিকে, ভোট নিয়ে কোনো প্রার্থীরও ছিল না কোনো অভিযোগ। ভোটের পরিবেশ নিয়ে চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড সদস্য ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

যশকেশরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা মতিউর রহমান বলেন, ‘এমন ভোট আর কখনো দেখিনি।’

উপজেলার ৫ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় ও স্বতন্ত্র-বিদ্রোহীসহ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ১৬ জন। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নে ৩, বদলপুর ইউনিয়নে ৩, জলসুখা ইউনিয়নে ৩, কাকাইলছেও ইউনিয়নে ২ ও শিবপাশা ইউনিয়নে ৫ জন প্রার্থী।

এ ছাড়া উপজেলার ৪৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১৭৪ এবং ১৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬০ জন প্রার্থী। উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৭৪ হাজার ৯৯৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৭ হাজার ৯ শত ১৯ এবং মহিলা ভোটার ৩৭ হাজার ৭৫।

জুড়ী: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পাঁচটি ইউপিতে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। পাঁচটি ইউপিতে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২০২ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারজন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত