Ajker Patrika

জাবিতে সহিংসতাকারীরা বহিরাগত, ক্ষতি পাঁচ কোটি টাকার

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৪, ১১: ০২
জাবিতে সহিংসতাকারীরা বহিরাগত, ক্ষতি পাঁচ কোটি টাকার

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এখন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ভাঙচুরের ক্ষতচিহ্ন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, সহিংসতায় ক্যাম্পাসে ক্ষতি হয়েছে ৫ কোটি টাকার বেশি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, জাবিতে ভাঙচুরে জড়িত ছিলেন বহিরাগতরা।

গতকাল বুধবার রাজধানীর অদূরে সাভারে জাবি ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, হলগুলোতে ঝুলছে তালা। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সব অফিস খোলা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোটা আন্দোলনে উপাচার্যের বাসভবন ও গাড়ি, বিভিন্ন হল, অ্যাম্বুলেন্সসহ ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। এ ছাড়া নতুন প্রশাসনিক ভবনেও ভাঙচুরের চিহ্ন চোখে পড়েছে। সিসি ক্যামেরাগুলো ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের বাইরে ব্যক্তিগত সম্পদও ক্ষতির মুখে পড়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও শতাধিক। আহত হয়েছেন শিক্ষক ও সাংবাদিকেরাও।

এ নিয়ে কথা হলে সজীব আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর আঘাত আমাদের কাম্য নয়; আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হিসেবে তা আমরা কখনোই প্রত্যাশা করি না। তবে নানা ধরনের মানুষ থাকায় এর মধ্যে থেকে কেউ এমন করে থাকতে পারে। তাদের মধ্যে দুরভিসন্ধি থাকতে পারে আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য। এই দায়ভার কখনো ছাত্রসমাজ নেবে না। এটা যারা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, যখন আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল, তখন যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হতো, তাহলে কিন্তু দেশে এত সহিংসতা হতো না বলে আমি মনে করি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও হয়নি। অনুপ্রবেশকারীরাই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এই কাজ করেছে।’

জাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহেদ রানা বলেন, ‘সব পক্ষের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের আলোচনা করা প্রয়োজন, যেন পরবর্তী সময়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হোক।’

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, ‘আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো ফাইনাল করতে পারিনি, তবে ৫ কোটির ওপরে। আমার হাতে সব হিসাব এলে আমি নির্দিষ্ট করে বলতে পারব।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য বলছে, অরাজকতা সৃষ্টিতে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল বহিরাগতরা। ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, ‘বহিরাগত ও নৈরাজ্যকারীরা প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছে। জাহাঙ্গীরনগরে যে সহিংসতা ও ভাঙচুর হয়েছে, এটা মূলত বহিরাগতরা সংঘটিত করেছে। শিক্ষার্থী ভাইবোনকে সতর্ক থাকতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেন বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে। যদি কেউ প্রবেশ করে, তাকে যেন চিহ্নিত করতে পারে, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও এ ধরনের ব্যবস্থাপনা থাকা প্রয়োজন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত