Ajker Patrika

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড

অ্যালেন গিনসবার্গ
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১১
সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড

কারও পরোয়া করতেন না অ্যালেন গিনসবার্গ। বোহিমিয়ান এক জীবনধারায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। বিট আন্দোলন তাঁকে তরুণদের কাছে দারুণভাবে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। নিউইয়র্কের লোয়ার সাইডে নেশাখোর আর মাতালদের আড্ডাখানা ছিল তাঁর বসবাসের জায়গা। কবিতাই ছিল তাঁর জীবন। বিট আন্দোলনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুখটি তাঁর। ষাটের দশকে একবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিলেন ভারত ভ্রমণে। সে সময় ভারতে এসে দেখলেন কুসংস্কার আর ধর্মের মিশ্রণে অন্য এক সমাজ দাঁড়িয়ে আছে। তত দিনে মূলধারা থেকে বেরিয়ে তিনি নতুন এক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। কোরিয়ার যুদ্ধ, ভিয়েতনামের যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় তিনি আবার এসেছিলেন ভারতে। তখন তিনি নিউইয়র্কে খণ্ডকালীন অধ্যাপনা করতেন। ভারতে এসে বুঝতে পারলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশে কী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। শরণার্থীশিবিরে গিয়ে তিনি বিস্ময়ে বিমূঢ় হলেন। আমেরিকান কবি তিনি, তাঁর দেশের প্রশাসন পাকিস্তানের পক্ষে, ফলে তেমন একটা দেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে দোষী মনে করেছেন। শরণার্থীদের দুর্দশা স্বচক্ষে দেখার জন্য সীমান্তের কাছাকাছি বেনাপোলে গেলেন। একটা ক্যামেরা আর ফিল্ম ছিল। মানবেতর জীবনযাপনের অনেক ছবি তুললেন। সাদা চামড়া দেখে অনেকেই এগিয়ে এসেছিলেন সাহায্যের আশায়। কিন্তু গিনসবার্গের সে ক্ষমতা ছিল না। ক্যামেরায় যে দৃশ্য ধারণ করেছিলেন নেগেটিভের বাক্সসহ সেটাও হারিয়ে গিয়েছিল।

একাত্তরের অক্টোবর মাসে ফিরে গিয়েছিলেন নিউইয়র্কে এবং সে সময় তিনি ভাবতে থাকলেন বাংলাদেশের জন্য কী করতে পারেন। অন্য কিছুই করার মতো করে নিজেকে গড়ে নেননি। তাই তাঁর মাথায় এল তিনি তো কবিতা লিখতে পারেন। লিখেও তো প্রতিবাদ করা যায়। আর তখন লিখে ফেললেন একটি দীর্ঘ কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’।

কবিতাটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক অবিস্মরণীয় দলিল।

সূত্র: নাসির আলী মামুন, শরণার্থীশিবিরে ঘুরে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত