Ajker Patrika

নার্গিস ও তিন বোন

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৪৪
নার্গিস ও তিন বোন

সাদত হাসান মান্টো তখন কাজ করেন ফলমিস্তানে। সকাল আটটায় ঘর থেকে বেরিয়ে যান, ফেরেন রাত আটটায়। বাড়িতে স্ত্রী ও দুই শ্যালিকা থাকেন। একদিন স্টুডিও থেকে বাড়ি ফিরেছেন দুপুরে। ঘরে ঢুকতেই স্ত্রী এবং শ্যালিকাদ্বয় একটু অস্বস্তিতে পড়লেন।

মান্টো ভাবলেন, তিনজন মিলে হয়তো সিনেমায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, অথবা কোনো বান্ধবীর নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে চলেছেন। আসল কারণটা জানা গেল একটু পরেই।

‘আজ নার্গিস আসছেন আমাদের বাসায়।’

প্রতিবেশী নার্গিসের মা একজন মুসলমানকে বিয়ে করে তাঁর ঘরণী হয়েছেন। তাই নার্গিস এলে এত সাজুগুজুর কারণটা ধরতে না পারায় মান্টোর স্ত্রী সাফিয়া বুঝিয়ে বললেন, ‘সেই নার্গিস নয়। ফিল্ম স্টার নার্গিস।’

নার্গিস! এ বাড়িতে! অথচ মান্টো কিছু জানেন না!

ঘটনা পরিষ্কার হলো। বাড়ির ফোন থেকে বন্ধুদের সঙ্গে কথা যখন শেষ হয়ে যায়, তখন অ্যাডভেঞ্চারের জন্য ফিল্ম স্টারদের নম্বর খুঁজে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন তিন বোন। বলেন, আপনাকে দেখতেই দিল্লি থেকে এসেছি। বেপর্দা হতে পারি না বলে আপনার বাড়ি আসতে পারি না ইত্যাদি ইত্যাদি।

এভাবেই নার্গিসের সঙ্গে তিন বোন ফোনে আলাপ জুড়ে দিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই তাঁদের সঙ্গে নার্গিসের কথা হয়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে নার্গিসের। একদিন নার্গিসই বাড়ির ঠিকানা জানতে চান, বেড়াতে আসতে চান। আজ নার্গিস আসছেন।

বাইখোলার কোনো হোটেল থেকে ফোন করলেই তিন বোন নার্গিসকে নিয়ে আসবেন, সে কথাও হয়ে গেছে। নার্গিসের ফোন এল। এবার নার্গিসকে বরণ করে নিয়ে আসার দায়িত্ব পড়ল মান্টোর ওপর। মান্টো এগিয়ে গেলেন। দেখলেন বিশাল এক গাড়িতে বসে আছেন নার্গিস। মান্টো এলেন কোথা থেকে, জিজ্ঞেস করলে মান্টো ফাঁস করে দেন তিন বোনের এই রসিকতা।

এরপর নার্গিসের সঙ্গে ভালোই আড্ডা জমেছিল মান্টোর বাড়িতে।

সূত্র: সাদত হাসান মান্টো, গাঞ্জে ফেরেশতে, পৃষ্ঠা ৭৪-৭৫

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত