রহমান মৃধা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সামাজিক সমতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমি প্রথমেই একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই: আমি তিনটি দেশের নাগরিক হলেও বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই, সংবিধান তা অনুমোদন করে না। যদিও সরাসরি রাজনীতিতে জড়াইনি, তবু সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এবং মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ, সুইডেন এবং স্পেনের প্রতি আমার বিশেষ ভালোবাসা আছে; তবে বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা একটু বেশি, কারণ এখানে আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের কিছু মূল্যবান সময় কেটেছে।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতাসংগ্রামের পর, বাংলাদেশ আমাকে একটি পাসপোর্ট দিয়েছে, যা আমার জীবনের অনেক বড় অর্জন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা বাক্স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি, যা আমাদের সবার প্রাপ্য। এত দিনে যা সম্ভব হয়নি, তা হঠাৎ করে পাওয়া সহজ নয়। তবে আমাদের মধ্যে বিশ্বাস থাকলে, চেষ্টা করলে নৈতিকতা বজায় রেখে একটি সুন্দর, সৃজনশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
আমাদের সমাজে এখনো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়ে গেছে, যা সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। সব ধরনের বৈষম্য দূর করার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে প্রত্যেক মানুষ তার অধিকার ও মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারে। ধর্মীয় সমতা এই প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান রয়েছে, তাই রাষ্ট্রের উচিত সব ধর্মের প্রতি সমান গুরুত্ব প্রদান করা। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বা কার্যক্রমে ধর্মীয় রীতির গুরুত্বের ক্ষেত্রে অবশ্যই সবার অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় বৈষম্য একটি সাধারণ সমস্যা, তবে বাংলাদেশের জন্য এটি সমাধানের একটি সুযোগও হতে পারে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের উচিত সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে অবদান রাখা। কিন্তু যুগের পর যুগ ধরে এ বিষয়ে কথা বললেও বাস্তবে তা এখনো পুরোপুরি অর্জিত হয়নি।
আমি দেশে স্থায়ীভাবে বাস করি না, দেশের সম্পদের অপচয় করি না, তবে গত ৪০ বছরে অন্তত ৬৫০ জনকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছি, শুধু দেশের ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে। আমি জানি, বাংলাদেশ আমার বিলাসিতার চাহিদা পূরণ করতে পারবে না, কিন্তু দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে শত শত শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা ও অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছি। এবারের কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বলেছিলাম, ‘দেশের এই দুর্দিনে পারলে পালিয়ে না গিয়ে শহীদ হও, তবু অন্যায়কে জিততে দিও না।’ তারা আমাকে হতাশ করেনি, বরং দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা আরও শক্তিশালী করেছে।
আমরা সবাই দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার কথা বলছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কথার সঙ্গে কাজের মিল দেখছি না। উদাহরণস্বরূপ, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু তা শতভাগ বাস্তবায়িত হয়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, তবে শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমিকের জীবনের নিশ্চয়তা আমরা এখনো দিতে পারিনি। মারামারি, লুটপাট ও সামাজিক অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।
একটি উদার ও সহনশীল জাতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ দিতে হবে। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে, যা তাদের বাস্তব জীবনের শিক্ষায় সাহায্য করছে। সরকারকে এখন শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম অনুদান প্রদান করা উচিত।
আমি নিজেও কর্মজীবনের পাশাপাশি কৃষিকাজ, রান্না ও পরিবারের দেখাশোনা করি। দেশের মানুষ কর্মঠ হলেও অনেকেই ফাঁকিবাজ, দুর্নীতিপরায়ণ। তাদের সৎপথে ফিরিয়ে আনতে, কাজে উদ্বুদ্ধ করতে এবং দায়িত্বপূর্ণ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার।
কোনো কাজ করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে—কেন করছি, কার জন্য করছি? রাজনীতি করবেন সেবা দিতে, নাকি সেবা নিতে? যদি সেবা দিতে চান, তবে সৎপথে থাকুন। গণতন্ত্র মানে হলো মত এবং দ্বিমত থাকার অধিকার, কিন্তু খুন-গুম নয়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সবার মতামতকে সম্মান করা এবং মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একে অপরের সঙ্গে কথা বলা। মনে রাখবেন, ‘উই ক্যান অ্যাগ্রি টু ডিসঅ্যাগ্রি বাট স্টিল টক টু ইচ আদার।’ আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে চলতে হবে এবং উদার হতে শিখতে হবে।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সামাজিক সমতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমি প্রথমেই একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই: আমি তিনটি দেশের নাগরিক হলেও বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই, সংবিধান তা অনুমোদন করে না। যদিও সরাসরি রাজনীতিতে জড়াইনি, তবু সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এবং মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ, সুইডেন এবং স্পেনের প্রতি আমার বিশেষ ভালোবাসা আছে; তবে বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা একটু বেশি, কারণ এখানে আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের কিছু মূল্যবান সময় কেটেছে।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতাসংগ্রামের পর, বাংলাদেশ আমাকে একটি পাসপোর্ট দিয়েছে, যা আমার জীবনের অনেক বড় অর্জন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা বাক্স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি, যা আমাদের সবার প্রাপ্য। এত দিনে যা সম্ভব হয়নি, তা হঠাৎ করে পাওয়া সহজ নয়। তবে আমাদের মধ্যে বিশ্বাস থাকলে, চেষ্টা করলে নৈতিকতা বজায় রেখে একটি সুন্দর, সৃজনশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
আমাদের সমাজে এখনো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়ে গেছে, যা সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। সব ধরনের বৈষম্য দূর করার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে প্রত্যেক মানুষ তার অধিকার ও মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারে। ধর্মীয় সমতা এই প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান রয়েছে, তাই রাষ্ট্রের উচিত সব ধর্মের প্রতি সমান গুরুত্ব প্রদান করা। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বা কার্যক্রমে ধর্মীয় রীতির গুরুত্বের ক্ষেত্রে অবশ্যই সবার অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় বৈষম্য একটি সাধারণ সমস্যা, তবে বাংলাদেশের জন্য এটি সমাধানের একটি সুযোগও হতে পারে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের উচিত সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে অবদান রাখা। কিন্তু যুগের পর যুগ ধরে এ বিষয়ে কথা বললেও বাস্তবে তা এখনো পুরোপুরি অর্জিত হয়নি।
আমি দেশে স্থায়ীভাবে বাস করি না, দেশের সম্পদের অপচয় করি না, তবে গত ৪০ বছরে অন্তত ৬৫০ জনকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছি, শুধু দেশের ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে। আমি জানি, বাংলাদেশ আমার বিলাসিতার চাহিদা পূরণ করতে পারবে না, কিন্তু দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে শত শত শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা ও অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছি। এবারের কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বলেছিলাম, ‘দেশের এই দুর্দিনে পারলে পালিয়ে না গিয়ে শহীদ হও, তবু অন্যায়কে জিততে দিও না।’ তারা আমাকে হতাশ করেনি, বরং দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা আরও শক্তিশালী করেছে।
আমরা সবাই দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার কথা বলছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কথার সঙ্গে কাজের মিল দেখছি না। উদাহরণস্বরূপ, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু তা শতভাগ বাস্তবায়িত হয়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, তবে শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমিকের জীবনের নিশ্চয়তা আমরা এখনো দিতে পারিনি। মারামারি, লুটপাট ও সামাজিক অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।
একটি উদার ও সহনশীল জাতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ দিতে হবে। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে, যা তাদের বাস্তব জীবনের শিক্ষায় সাহায্য করছে। সরকারকে এখন শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম অনুদান প্রদান করা উচিত।
আমি নিজেও কর্মজীবনের পাশাপাশি কৃষিকাজ, রান্না ও পরিবারের দেখাশোনা করি। দেশের মানুষ কর্মঠ হলেও অনেকেই ফাঁকিবাজ, দুর্নীতিপরায়ণ। তাদের সৎপথে ফিরিয়ে আনতে, কাজে উদ্বুদ্ধ করতে এবং দায়িত্বপূর্ণ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার।
কোনো কাজ করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে—কেন করছি, কার জন্য করছি? রাজনীতি করবেন সেবা দিতে, নাকি সেবা নিতে? যদি সেবা দিতে চান, তবে সৎপথে থাকুন। গণতন্ত্র মানে হলো মত এবং দ্বিমত থাকার অধিকার, কিন্তু খুন-গুম নয়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সবার মতামতকে সম্মান করা এবং মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একে অপরের সঙ্গে কথা বলা। মনে রাখবেন, ‘উই ক্যান অ্যাগ্রি টু ডিসঅ্যাগ্রি বাট স্টিল টক টু ইচ আদার।’ আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে চলতে হবে এবং উদার হতে শিখতে হবে।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫