Ajker Patrika

ডোনাল্ড-মন্ত্রে ইবাদতদের দেশে জ্বলে ওঠার অপেক্ষা

বোরহান জাবেদ, চট্টগ্রাম থেকে
আপডেট : ১৩ মে ২০২২, ১০: ৫৫
ডোনাল্ড-মন্ত্রে ইবাদতদের দেশে জ্বলে ওঠার অপেক্ষা

নিজের সময়ের সেরা পেস বোলারদের একজন অ্যালান ডোনাল্ড। ৭২ টেস্টে ৩৩০ উইকেট নেওয়া প্রোটিয়া কিংবদন্তির চোখে-মুখে বাংলাদেশ পেস বোলিং বিভাগ নিয়ে মুগ্ধতা। গত দুই বছর তাঁর মতো আরও অনেকেরই কণ্ঠে প্রশংসা ঝরেছে বাংলাদেশ পেস বোলারদের নিয়ে। অথচ একটা সময় একাদশে দূরে থাক, ভালো মানের পেসার দিয়ে দল ঘোষণাই কঠিন ছিল। সে সময়টা আপাতত অতীতই বলা যায়।

গত মার্চে পেস বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করা ডোনাল্ড শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে তাঁর শিষ্যদের নিয়ে আশার কথাই শুনিয়েছেন। একই সঙ্গে উপমহাদেশের কন্ডিশনে বাংলাদেশের পেসারদের মানসিক শক্তির পরীক্ষার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন ডোনাল্ড।

এটা ঠিক, উন্নতির সোপানে থাকলেও বাংলাদেশের পেস আক্রমণ খুব একটা অভিজ্ঞ নয়। চট্টগ্রাম টেস্টের দলে থাকা পেসারদের লাল বলের অভিজ্ঞতা সাকল্যে ২২ টেস্ট। এর মধ্যে অভিষেকের প্রহর গুনছেন রেজাউর রহমান রেজা আর শহীদুল ইসলাম। পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ টেস্ট খেলেছেন ইবাদত হোসেন। খালেদ আহমেদ আর শরীফুল ইসলামের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা ৮ টেস্টের।

শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে বাংলাদেশের বড় ধাক্কা দলের সেরা পেসার তাসকিন আহমেদকে না পাওয়া। শক্তিশালী স্পিন বিভাগটা আচমকা দুর্বল হয়ে গেছে সাকিব আল হাসান করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবং অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ চোটে পড়ায়। সাফল্য এনে দিতে বোলিং বিভাগের বড় ভরসা হতে পারেন পেসাররা। অনভিজ্ঞ হলেও পেসারদের নিয়ে আশাবাদী ডোনাল্ড। সাবেক প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার পেস আক্রমণ দিয়ে কীভাবে সাফল্যের আলো খুঁজছেন, সেটি গতকাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সবিস্তারেই ব্যাখ্যা করেছেন, ‘নতুন বলে এখানে কিছুটা ফুলার লেংথে বোলিং করতে হবে। ৩০ ওভারের পর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে কতটা চাপ তৈরি করতে পারি, সেটা দেখতে হবে। এখানকার আবহাওয়া খুবই আর্দ্র। আদর্শ উপমহাদেশের কন্ডিশন। এই কন্ডিশন পেসারদের পরীক্ষা নেবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মানসিক শক্তি, সৃষ্টিশীলতা ও শৃঙ্খলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।’

গতকালের অনুশীলনটা অবশ্য পুরোনো বলেই হয়েছে। নির্দিষ্ট সেশনে বল রিভার্স সুইংয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ডোনাল্ড। তবে এ ক্ষেত্রে পেসারদের ধৈর্যশীল হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। উপমহাদেশের কন্ডিশনে বোলিংয়ের মন্ত্র জপে দিয়েছেন ডোনাল্ড, ‘আমার অভিজ্ঞতা বলে, এ ধরনের উইকেটে নতুন বল খুব গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক দিন এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। নতুন বলে আমাদের হট জোন খুঁজে নিতে হবে। লম্বা সময় ওই জোনে বোলিং করতে হবে। চোখধাঁধানো বল ইনসুইং, আউট সুইংয়ের পেছনে ছুটলে হবে না। প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি।’

গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে শরীফুল ইসলামকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ডোনাল্ড। তরুণ বাঁহাতি পেসারকে নিজের দেশে ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই দেখেছিলেন সাবেক এ প্রোটিয়া পেসার। ডোনাল্ডকে গত কিছুদিনে চমকে দিয়েছেন ইবাদত হোসেন আর খালেদ আহমেদ। বলছিলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে বড় চমক ছিল ইবাদত-খালেদ। তাদের টানা বোলিং করার ক্ষমতা আমাকে অবাক করেছে। ফাস্ট বোলিং হলো সাহস আর দৃঢ়চেতা মনোভাবের ব্যাপার। আমি কখনো টেস্টে দুই পেসার আর দুই স্পিনার দেখিনি। কিন্তু তারা (ইবাদত-খালেদ) যেভাবে পরিস্থিতি সামলেছে, বিশেষ করে ডারবান টেস্টে, ওটা দুর্দান্ত ছিল।’

নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার পর এবার ইবাদতদের ঘরের মাঠে জ্বলে ওঠার অপেক্ষা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত