Ajker Patrika

মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ০৮
মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে

নরসিংদীতে অনুকূল আবহাওয়া ও ফলন ভালো হওয়ায় বাড়ছে মাল্টার চাষ। লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। জেলাজুড়ে মাল্টা চাষ বাড়াতে চাষিদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ির আঙিনায় এক দুইটি মাল্টার চারা রোপণের মধ্য দিয়ে নরসিংদী জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে মাল্টার আবাদ করা হয়। এতে ফলন ভালো পাওয়ায় ২০১৩ সালে ৫ হেক্টর জমিতে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়। মাটির গুনাগুণ ভালো হওয়ায় এবং চাহিদা থাকায় বাড়তে থাকে মাল্টার চাষ। প্রতিটি গাছে ৩০০ থেকে ৪০০টি পর্যন্ত মাল্টা ধরে। এতে হেক্টর প্রতি লাখ টাকারও বেশি আয় হচ্ছে। কম খরচ ও লাভ বেশি হওয়ায় শিক্ষিত বেকার যুবকেরাও এখন মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিদেশি এই ফলের চাষ বাড়লে অল্প দিনের মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের শ্রীফুলিয়া গ্রামের কৃষক সৈয়দ আতিকুল রহমান জানান, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় নিজের ৪০ শতক জমিতে ১০০ মাল্টার চারা রোপণ করেন। প্রথম বছরে অল্প ফলন হলেও বর্তমানে প্রতিটি গাছে ২৫০ থেকে ৩০০ মাল্টা ধরে। বাগান করতে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এখন পর্যন্ত তিনি ৪৫ হাজার টাকার মালটা বিক্রি করেছেন। আরও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন। পাশাপাশি একই বাগানে সাথি ফসল হিসাবে পেঁপে চাষ করে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

একই এলাকার মাল্টা চাষি ফোরকান আহমেদ বলেন, এক সময় বেকার ছিলাম পরে সবার দেখা-দেখি আমিও মালটা চাষ শুরু করি। লাভবান ও স্বাবলম্বী হচ্ছি। সবাই যদি মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহী হই তাহলে বিদেশি মাল্টা আমদানি করতে হবে না।

জয়মঙ্গল গ্রামের মাল্টা চাষি সুলতান মিয়া জানান, ২০১৭ সালে ৪০ শতাংশ জমিতে মাল্টা চাষ করেন। এতে তাঁর খরচ হয় ৪৫ হাজার টাকা। ২০২০ সালে থেকে তিনি মাল্টা বিক্রি শুরু করেন। শিবপুরের বাঘাব ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জোসনা বেগম বলেন, ‘আমরা কৃষকদের বিনা মূল্যে মাল্টার চারা, স্প্রে মেশিনসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি। এতে করে দিন দিন কৃষকের পাশাপাশি স্থানীয় বেকার যুবকরাও মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাঁদের আমরা মাল্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহাবুবুর রশিদ বলেন, গত ৮ বছরে ১০৮ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ১২ মেট্রিক টন ফলের আশা করা হচ্ছে। জেলাজুড়ে মাল্টা চাষ বাড়াতে চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত