Ajker Patrika

সমঝোতার বিকল্প নেই

সম্পাদকীয়
সমঝোতার বিকল্প নেই

বাংলাদেশে পাঁচ বছর পরপর রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়। বলা হয়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হলো বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা সেভাবে চোখে পড়ে না। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।

প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করতেও পিছপা হয় না। এ ক্ষেত্রে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন বিএনপিও একই কাজ করেছে। বর্তমানে সেই একই সংকটের অবতারণা দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তাদের দাবি আদায়ে আবার অবরোধের আন্দোলন শুরু করেছে। এটা যে কবে শেষ হবে, তা কেউ জানে না।

অবরোধের কারণে রংপুরের পরিবহনশ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আসলে দেশের অধিকাংশ জেলাসহ রাজধানীর একই চিত্র। ঘটনা আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। অবরোধের কারণে পরিবহনশ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ, খুচরা ব্যবসায়ী ও কৃষক পর্যন্ত সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।

বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের সূত্রপাত হয় ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ এবং আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে। আগে থেকে বিএনপির নেতারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বললেও তাঁদের সমাবেশে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি বলছে, ‘পুলিশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সহিংসতা সৃষ্টি করেছে।’ অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, ‘বিএনপির প্রকৃত সহিংস চেহারা ফুটে উঠেছে।’ আসলে এ ঘটনায় দুই পক্ষ, নাকি তৃতীয় কোনো পক্ষ জড়িত, তা সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়।

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। দিন দিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বগতি। অবরোধের কারণে সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকে না। এ কারণে শাকসবজিসহ জিনিসপত্রের দাম আরও বেড়ে যায়। অবরোধের কারণে ২৮ অক্টোবর থেকে গত সোমবার বিকেল পর্যন্ত মোট ১১০টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে। শুধু তা-ই নয়, বিরোধী দলগুলোর হরতাল-অবরোধের প্রভাব পড়েছে দেশের ৪ কোটি পেশাজীবীর ওপরও।

রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়বে বিনিয়োগের ওপর। এ জায়গায় সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিরোধী দলও তাদের দায় এড়াতে পারে না। যাতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতির মুখে না পড়ে, সেদিকে সবার দৃষ্টি দেওয়া দরকার।

দেশের এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। এতে বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপ এড়ানো সম্ভব। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট সংকট নিরসন করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্যও এটা দরকার। কিন্তু সরকার বা বিরোধীপক্ষ থেকে এ ক্ষেত্রে সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না। ফলে বিরোধী দল তাদের অবস্থানে অনড় থেকে ধারাবাহিক অবরোধের ডাক দিয়ে মেহনতি মানুষের দুঃখ-কষ্ট বাড়িয়ে দিচ্ছে। সরকার বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছে।

তাই দেশের এবং জনগণের কথা চিন্তা করে সমঝোতায় পৌঁছানো জরুরি। এ জন্য দুই পক্ষকেই নমনীয় হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত