Ajker Patrika

হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত ১০ হাজার মামলার বিচার

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত ১০ হাজার মামলার বিচার

ফৌজদারি মামলায় নিম্ন আদালতের চলমান কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১/এ ধারায় হাইকোর্টে আবেদন করা যায়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের বিচারাধীন মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। অধস্তন আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার কারণে ওই সব মামলার শুনানি বা বিচার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে বিচারে বিলম্ব ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত হন ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার তুলনায় সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির সংখ্যা অনেক কম। তাই স্থগিতসহ অন্যান্য মামলার জট নিরসন করতে অধিকসংখ্যক বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে। সেই সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে। কেননা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলায় আসামিপক্ষ উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে থাকে। রাষ্ট্রপক্ষ তথা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের দায়িত্ব হচ্ছে স্থগিত থাকা এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া।

নথিসূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশে সারা দেশের আদালতগুলোতে স্থগিত রয়েছে ১০ হাজার ৯৯ মামলার বিচার; যার মধ্যে ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় প্রকার মামলা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি স্থগিত রয়েছে ঢাকা বিভাগের মামলা। ঢাকা বিভাগের ৪ হাজার ৭৩৫টি মামলার মধ্যে ঢাকা জেলার মামলাই ৩ হাজার ৯৩৭টি। এরপরে নারায়ণগঞ্জের ১৮৬ এবং গাজীপুরের ১২৭টি মামলা। আর ঢাকা বিভাগের সব চেয়ে কম মামলা স্থগিত রয়েছে টাঙ্গাইল জেলার। টাঙ্গাইলের কেবল ১৫টি মামলা স্থগিত রয়েছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে।

ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ২ হাজার ৩৭০টি, রাজশাহী বিভাগের ৪৮৭, খুলনা বিভাগের ৬৯৬, বরিশাল বিভাগের ৪৯৯, সিলেট বিভাগের ৬২৯, রংপুর বিভাগের ৩৬২ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৩২১টি মামলা স্থগিত রয়েছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে। এর আগে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশে সারা দেশে স্থগিত থাকা মামলার সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৪৮৭টি। এর মধ্যে দেওয়ানি মামলা ৬ হাজার ২৮৬টি। আর ফৌজদারি মামলা ৮ হাজার ২০১টি।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থগিত থাকা এসব মামলা বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে শুনানির উদ্যোগ নিতে হবে। বিচারক-সংকটের কারণে বেঞ্চ গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হয়েছে। তিনি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দিলে স্থগিত মামলার শুনানি হতে পারে। সেখানে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলেই নিম্ন আদালতে আবার বিচারকাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির নির্দেশে ৮ বিভাগের জন্য ৮টি মনিটরিং কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটি নির্দেশ দিয়েছে এসব স্থগিত থাকা মামলার তালিকা সংগ্রহ করতে। আমরা এরই মধ্যে সারা দেশের জেলা আদালত থেকে স্থগিত থাকা মামলার তালিকা সংগ্রহ করেছি। এগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। জোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছে, যেন এসব দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।’

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। গত ২৭ জানুয়ারি ৮ বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের ৮ জন বিচারপতির নেতৃত্বে গঠন করা হয় ৮টি মনিটরিং কমিটি। মনিটরিং কমিটি গঠনের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতিরা বিভিন্ন আদালত পরিদর্শন করেছেন। গত ১৪ মার্চ জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সাত দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রতি। মূলত মনিটরিং কমিটির নির্দেশেই সারা দেশ থেকে স্থগিত থাকা মামলার তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত