Ajker Patrika

জলসাঘর ও রবীন্দ্রনাথ

সম্পাদকীয়
জলসাঘর ও রবীন্দ্রনাথ

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জলসাঘর’ বই হিসেবে বের হয়ে গেছে। ক্ষয়িষ্ণু জমিদারবাড়ির সে আখ্যান নিয়ে পরে সত্যজিৎ রায় দারুণ এক সিনেমা তৈরি করেছিলেন। জমিদার বিশ্বম্ভর রায়ের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন ছবি বিশ্বাস।

বইটি বের হওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ তাঁর নৃত্যনাট্যের দল নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। তারাশঙ্কর তাঁর ‘জলসাঘর’ বইটি হাতে নিয়ে হাজির হলেন বিচিত্রা ভবনে। রবীন্দ্রনাথকে প্রণাম করে সেটা তুলে দিলেন কবির হাতে।

রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় ছিলেন সাত-আট দিন। এই সময়ের মধ্যে যাঁরা রবীন্দ্রনাথের কাছে গেছেন, তাঁদের মুখে তারাশঙ্কর শুনলেন ‘জলসাঘর’-এর প্রশংসা করেছেন কবি।

নৃত্যনাট্যের পর্ব শেষ করে রবীন্দ্রনাথ ফিরে গেলেন শান্তিনিকেতনে। ফেরার পথে তাঁর হাতে ‘জলসাঘর’ বইটি ছিল। ট্রেনেই কবি ইরিসিপ্লাসের আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন। এরপর কয়েক দিন ছিলেন চেতনাহীন।

একসময় নিরাশার মেঘ কেটে গেল। রবীন্দ্রনাথ চোখ মেললেন। এর ঠিক তিন দিন পর শান্তিনিকেতন থেকে দুটো চিঠি পেলেন তারাশঙ্কর। একটি লিখেছেন কবির ব্যক্তিগত সচিব সুধীর কর, অন্যটি কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সুধীর করের চিঠিতে জানা গেল, চোখ খুলেই কবি জলসাঘর বইটির খোঁজ করেছেন। কিন্তু কবিকে দেখতে এসে কোনো সুরসিক ব্যক্তি বইটা নিজের মনে করে নিয়ে গেছেন। সুধীর অনুরোধ করেছেন, তারাশঙ্কর যেন আগের মতোই একইভাবে কবিকে লিখে আরেকটি বই পাঠান। এখন বইটা না পেলে কবি ক্রুদ্ধ হবেন।

রথীন্দ্রনাথ সংক্ষেপে লিখেছিলেন, ‘শ্রীসুধীর কর আপনাকে পত্র লিখছেন। একখানি বই পাঠালে অত্যন্ত খুশি হব।’

এর কয়েক দিন পর তারাশঙ্কর জানলেন, জ্ঞান হওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ দুটো জিনিস খুঁজেছিলেন। একটি হলো বিজ্ঞানের বইয়ের প্রুফ, অন্যটি জলসাঘর। গঙ্গার ঘাটে গিয়ে নৌকায় ওঠার সময় অন্ধকার রায়বাড়ির জলসাঘরে আবার আলো জ্বলেছে দেখে বিশ্বম্ভর রায় ফিরে আসেন, তাঁর সঙ্গে নিজের চৈতন্য-অচৈতন্যের মিল খুঁজে পেয়েছেন কবি।

সম্ভবত সুরেশ মৈত্রের কাছে লেখা এক চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ ইউরোপের গল্পলেখকদের সঙ্গে তারাশঙ্করের তুলনা করেছিলেন। 

সূত্র: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, আমার সাহিত্যজীবন, পৃষ্ঠা ১৫৮-১৫৯

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত