Ajker Patrika

কেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

মাসুদ উর রহমান
কেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

১ জুলাই সোমবার থেকে পেনশন নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ আছে। কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে শিক্ষকদের এ কেমন আন্দোলন? উত্তর হচ্ছে, এ আন্দোলনটি কিন্তু এক দিনে চূড়ান্ত রূপ লাভ করেনি। অনেক দিন থেকেই শিক্ষকেরা এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে আসছেন, পাশাপাশি ছোটখাটো কর্মসূচিও তাঁরা পালন করেছেন কিন্তু কর্ণপাত করেনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

কেন করেনি? কারণ শিক্ষা এখন সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ই না। প্রসঙ্গক্রমে কিছু তথ্য-উপাত্ত দিলে হয়তো পাঠকদের বুঝতে সহজ হবে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে প্রথম বাজেট হয় ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর। সেই বাজেটে শিক্ষা খাতে এ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ১৬ শতাংশ (জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ) সরকারি ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছিল, যা কমতে কমতে বর্তমানে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে এসেছে; অর্থাৎ জিডিপি ৫ শতাংশ থেকে নেমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হয়েছে ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এই ক্রমহ্রাসমান তথ্যই প্রমাণ করে শিক্ষা এখন আর সরকারের প্রায়োরিটির কোনো বিষয় নয়। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে সরকারি বরাদ্দ (জিডিপির অনুপাতে) ২০ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন।

শিক্ষার মূল ভিত্তিটা গড়ে দেয় যাঁরা, সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতন, পরিমাণের দিক দিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৫তম! হাইস্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকান—একই অবস্থা সর্বত্র! আর তাই তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে হরহামেশাই এখন নির্দ্বিধায় অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে মেধাবীরা। একটি উদাহরণ দিই। অনেক বছর আগের ঘটনা। শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা এ বি এম জি কিবরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে তিনি পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। সারদা একাডেমিতে আইজিপি কিবরিয়াকে নতুন প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে তদানীন্তন প্রশিক্ষককে প্রিন্সিপাল বলেন, ‘দে আর ভেরি ব্রিলিয়ান্ট স্যার, ওয়ান অব দেম ওয়াজ আ ইউনিভার্সিটি টিচার।’

অর্থাৎ প্রিন্সিপাল এটিই বোঝাতে চেয়েছিলেন, এই পুলিশ অফিসারদের মধ্যে এমন একজন অতি মেধাবী আছেন, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এখন সেই মর্যাদা নেই কেন কিংবা কেন মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট হচ্ছেন না? সত্যি বলতে কি, মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট হচ্ছেন না এটি–যেমন সত্যি, আবার প্রকৃত মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগবঞ্চিত হওয়ার ঘটনাও পত্রিকার খবরে প্রায়ই দেখা যায়। শুনতে খারাপ লাগলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগের নামে রাজনৈতিক বিবেচনায় এখন চলে ভোটার নিয়োগ! যত ভালো রেজাল্টই থাকুক না কেন কিংবা উচ্চতর গবেষণা—রাজনৈতিক আনুগত্য না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়াটা এখন খুব কঠিন। শুধু কি তা-ই ? টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার খবরও আমরা ইতিমধ্যে হজম করেছি।

পাবলিকের একটা গড়পড়তা বুলি এখন চারদিকে শোনা যায়—ক্লাসে পড়ায় না, টিউশন-বাণিজ্য করে কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম করে—এগুলো একেবারে মিথ্যা নয়। কিন্তু সংখ্যার বিচারে শতকরা কত ভাগ? অর্থাৎ শিক্ষকেরা আর আগের মতো নেই! আরে বাবা থাকবে কেমন করে? শিক্ষক তো এখন ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সরদার! তার না আছে স্বল্প বেতনের বাইরে অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ, না আছে ক্ষমতা।

একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কিংবা একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বেতন স্কেল কলেজের সহকারী অধ্যাপকের সমান। দুজনই বিসিএস পাস করেছেন, কিন্তু অর্থ আর ক্ষমতার বৈষম্যটা অনুভব করেন। কাজেই একজন মেধাবী কেন শিক্ষক হতে চাইবেন? জানপ্রাণ দিয়ে মুখস্থনির্ভর বিসিএস পাস করে প্রশাসন, পুলিশ, কর-ক্যাডার হওয়ার যোগ্য হতে পারাটাই তো কাঙ্ক্ষিত হওয়া উচিত। আর এভাবেই মেধাবীদের শিক্ষকতায় নিরুৎসাহিত করার ব্যবস্থা করে রাষ্ট্র কীভাবে শিক্ষার মান উন্নয়ন আশা করতে পারে?

যদি বলি শিক্ষকদের প্রতি রাষ্ট্রের উদাসীনতা আর অবহেলাই আজ শিক্ষার এ দুরবস্থার জন্য দায়ী, তাহলে একটুও ভুল বলা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আলোচনায় প্রস্তুত এবং দ্রুত ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া শুরু করতে চান। কিন্তু দাবির সুরাহা না হলে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাঁদের উপায় থাকবে না। কেন উপায় থাকবে না, তার কারণটি এই ফাঁকে একটু বলে নেওয়া যাক।

আমরা সবাই জানি, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয় গত বছরের ১৭ আগস্ট। বর্তমানে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় মোট পাঁচটি কর্মসূচি (স্কিম) রয়েছে। এগুলো হলো প্রগতি, সুরক্ষা, প্রবাস, সমতা ও প্রত্যয়। এর মধ্যে প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রত্যয় স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আপত্তি কেন? শিক্ষকেরা বলছেন, প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা (যেটি সর্বনিম্ন) কেটে রাখার কথা বলা হয়েছে, যা বর্তমান পেনশন ব্যবস্থায় নেই। এ ছাড়া প্রত্যয় স্কিমে আনুতোষিকও শূন্য। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশনপ্রাপ্ত হন; কিন্তু প্রত্যয় স্কিমে পেনশনাররা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে তা উল্লেখ নেই। এর বাইরে প্রত্যয় স্কিমে পেনশনধারীদের বয়সসীমা ৬০ বছর রাখা হয়েছে, যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবসরে যান ৬৫ বছরে। আর বর্তমান পেনশনব্যবস্থায় এককালীন বিশাল অঙ্কের অর্থ পাওয়া যায়, যা প্রত্যয় স্কিমে সম্ভব নয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অন্যরা কেন আন্দোলন করছেন না? করছে না এই কারণে যে ব্যতিক্রম বাদ দিলে সরকারি চাকরিজীবীরা চাকরিতে থাকা অবস্থায় যেভাবে গাড়ি-বাড়ির মালিক হতে পারেন, সাধারণ শিক্ষকের ক্ষেত্রে সেটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর কোনো শিক্ষকের হায়াত যদি পরম করুণাময় ৭৫ বছরের বেশি লিখে রাখেন, তাহলে তাঁর অবস্থা কী হবে—একবার অনুমান করতে পারেন?

আমি চাই বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই অচলাবস্থা দীর্ঘদিন চললে তাতে অনেক ফাঁকফোকর সৃষ্টি হতে পারে। অতীতে স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা দাবি আদায়ে রাজপথে দিনের পর দিন অনশন করে শেষ পর্যন্ত লাঠিপেটা খেয়ে ফিরতে হয়েছে—এমন নজিরও কিন্তু এ দেশে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তেমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা যেমন রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাকর হবে, তেমনি সরকারের জন্যও হতে পারে চরম অস্বস্তিকর।

শুভবুদ্ধির উদয় হোক সব পক্ষের।

মাসুদ উর রহমান, কলেজশিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত