Ajker Patrika

অস্থায়ী বাঁধে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৪৮
অস্থায়ী বাঁধে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা

বন্যা ও পাহাড়ি ঢল থেকে বোরো ফসল রক্ষায় প্রতিবছরই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। এতে শ শ কোটি টাকা ব্যয়ে করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবুও ঢলের পানিতে বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় শঙ্কায় থাকেন কৃষকেরা। কৃষক ও হাওর বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি করা হচ্ছে বারবার। হাওর রক্ষা আন্দোলনের পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হলে সরকারের ব্যয় কমবে। সুফল পাবেন হাওরের কৃষক।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী বাঁধের দাবি করছি। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হলে প্রতিবছর বাঁধ নির্মাণে মাটির সংকট হবে না। ব্যয় কমবে।’

২০১৭ সালে ভয়াবহ বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণ করা বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বোরো ফসল তলিয়ে যায়। বাঁধ নির্মাণে গাফিলতির অভিযোগে মামলা হয় ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের পর ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। তারপরও বাঁধ নির্মাণে রয়েছে নানা অভিযোগ। ২০১৭ সালের পর থেকে সরকার প্রতিবছর এক শ থেকে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করে থাকে। অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ফলে বোরো চাষের সময় কৃষকেরা আতঙ্কিত থাকেন, কখন ঢলের পানিতে তলিয়ে যাবে ফসল।

এই আতঙ্ক থেকে রক্ষার জন্য ২০১৯ সাল থেকে সুনামগঞ্জের কৃষক ও স্থানীয়রা হাওর বাঁচাও আন্দোলনকারী নেতারা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি করেন। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হলেও কৃষকেরা থাকবেন চিন্তামুক্ত। সরকারের অর্থ অপচয় কমবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

সুনামগঞ্জের ৪২টি হাওরে বোরো ফসল রক্ষায় প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করা হয়। ব্যয় ধরা হয় প্রায় এক শ থেকে দেড় শ কোটি টাকা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৮৫টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পাইলট প্রকল্প হিসেবে কজওয়ে নির্মাণ করা হবে। তাহিরপুর উপজেলার সাহেবনগর ও জামালগঞ্জ উপজেলার শনির হাওরে লালুর গোয়ালা এই দুটি এলাকায় দুই কিলোমিটার বাঁধে জিওসেল ব্যবহারের মাধ্যমে বাঁধের ভাঙন রোধ ও টেকসই করার প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। বর্ষার আগে হাওরে পানি প্রবেশ ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে নিষ্কাশন এবং বর্ষায় ঢেউয়ের কারণে ডুবন্ত বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধের ক্ষতি কমানোর জন্য পাইলট জিওসেল প্রোটেকশন প্রকল্পের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘কিছু কিছু বাঁধ আছে এগুলো স্থায়ী করা হলে ফসল নিশ্চিন্তে ঘরে তোলা যাবে।’

জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী গ্রামের ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অস্থায়ী বাঁধের ওপর নির্ভরশীল হতে পারি না। তবে স্থায়ী বাঁধ হলে চিন্তা করতে হতো না।

পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামছুদ্দোহা বলেন, ‘হাওরের দুই কিলোমিটার পাইলট জিওসেল প্রোটেকশন (রক্ষা) বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্প থেকে সুফল পেলে পরে স্থায়ী করার চিন্তা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত