Ajker Patrika

কুকুরকে খাওয়ানোয় জরিমানা

আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮: ৫১
কুকুরকে খাওয়ানোয় জরিমানা

পথঘাটে ক্ষুধার্ত কুকুর-বিড়াল দেখলে অনেকেই খেতে দেন। প্রাণী ও পাখিপ্রেমী অনেকে আবার নিয়মিতই এ ধরনের কাজ করে থাকেন। এ ধরনের কাজ সবার কাছে প্রশংসিতও হয়। তবে ভারতের এক নারী প্রশংসিত তো হনইনি, বরং জরিমানার মুখে পড়েছেন মালিকহীন কুকুরকে খাইয়ে। তাও আবার ১-২ রুপি নয়, ৮ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে তাঁকে।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাভি মুম্বাইয়ের একটি আবাসিক এলাকায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, নাভি মুম্বাইয়ের এনআরআই কমপ্লেক্স নামের ওই আবাসিক এলাকায় ৪০টির বেশি আবাসিক ভবন রয়েছে। সেখানে মালিকহীন কুকুরকে খাওয়ানো নিষিদ্ধ। এর জন্য রীতিমতো পাহারাদার নিয়োগ করা আছে, যিনি সার্বক্ষণিক নজর রাখেন কেউ মালিকহীন কুকুরকে খেতে দিচ্ছেন কি না। কাউকে এ ধরনের কুকুরকে খাওয়াতে দেখলে সেই পাহারাদার নাম টুকে রাখেন।

এনআরআই কমপ্লেক্সে মালিকহীন কুকুরকে খাওয়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় গত জুলাইয়ে। এর কারণ হিসেবে কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলেছে, মালিকহীন কুকুরগুলো শিশু-কিশোরদের তাড়া করে, বয়োজ্যেষ্ঠরা অবাধে চলাফেরা করতে পারেন না। এ ছাড়া পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে পড়ে কুকুরগুলোর কারণে।

ওই আবাসন কমপ্লেক্সের যে বাসিন্দাকে ৮ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে, তাঁর নাম অংশু সিং। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই আবাসন কর্তৃপক্ষ মালিকহীন কুকুরকে খাওয়ালে দৈনিক ৫ হাজার রুপি করে জরিমানা করে। আবাসন এলাকার যেকোনো স্থানে এই নিয়ম প্রযোজ্য। তিনি বলেন, ‘আবাসন কমপ্লেক্সের ভেতর প্রায়ই মালিকহীন কুকুরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। আমি মাঝেমধ্যেই একটা-দুটো কুকুরকে খাওয়াই। এ পর্যন্ত আমাকে ৮ লাখ রুপির বেশি জরিমানা করা হয়েছে।’ তিনি জানান, আবাসন কমপ্লেক্সের আরেক বাসিন্দাকে ছয় লাখ রুপি জরিমানা গুণতে হয়েছে একই অপরাধে।

এনআরআই কমপ্লেক্সের আরেক বাসিন্দা লীলা ভার্মা বলেন, আবাসন কমপ্লেক্সের পাহারাদার সব সময় চোখ-কান খোলা রাখেন। যখনই কেউ কোনো মালিকহীন কুকুরকে খাওয়ায়, সঙ্গে সঙ্গে তাঁর নাম টুকে রাখেন ওই পাহারাদার। এরপর তিনি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নিয়মভঙ্গকারীর নাম-পরিচয়সহ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে জরিমানার নোটিশ চলে যায় কুকুরকে খাওয়ানো বাসিন্দার বাসায়।

তবে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব বিনীতা শ্রীনন্দন বলেন, মালিকহীন কুকুরকে খাওয়ালে এ ধরনের কুকুরের আনাগোনা বেড়ে যায় আবাসন কমপ্লেক্সের ভেতর। তখন শিশু-কিশোরদের বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে যায়, বয়োজ্যেষ্ঠদের অবাধে চলাফেরা করার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে। কারণ, এই কুকুরগুলো যাকে-তাকে তাড়া করে। বিনীতা শ্রীনন্দন বলেন, এসব ছাড়াও পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথাও মাথায় রাখতে হয়। এই কুকুরগুলো গাড়ি পার্ক করার জায়গাসহ যেকোনো জায়গা নষ্ট করে, সমস্যার সৃষ্টি করে। এগুলোর ডাকাডাকি-চিৎকারে বাসিন্দাদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়।

বিনীতা শ্রীনন্দন অভিযোগ করেন, আবাসন কর্তৃপক্ষ মালিকহীন কুকুর ঠেকাতে আবাসন কমপ্লেক্সের চারপাশে বেড়া দিয়েছে। সবাইকে সচেতন করারও চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও এই আবাসন এলাকার কিছু সদস্য এখনো প্রকাশ্যে এ ধরনের কুকুরকে খাওয়ান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত