Ajker Patrika

কয়েক লাখ মানুষ সেদিন প্রাণ হারান

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৫৫
কয়েক লাখ মানুষ সেদিন প্রাণ হারান

আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। ইতিহাসের এক শোকাবহ ও বেদনাদায়ক দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভোলাসহ উপকূলীয় অঞ্চল ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়। কয়েক লাখ মানুষ সেদিন প্রাণ হারান। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনটি স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা গেছে, উপমহাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়। অসংখ্য জনপদ বিরান ভূমিতে পরিণত হয়। উত্তাল মেঘনা নদী আর তার শাখা-প্রশাখাগুলো রূপান্তরিত হয়েছিল লাশের ভাগাড়ে। সে এক ভয়াল দৃশ্য।

১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের সেই ভয়াল দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভোলার প্রবীণ শিক্ষক ও সাংবাদিক এম ফারুকুর রহমান (৭৮) বলেন, ‘১৯৭০ সালের ১১ নভেম্বর সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে থাকে। আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। আমরা তখনই আন্দাজ করেছিলাম রাতে ভয়াল কাণ্ড ঘটে যেতে পারে। পরদিন ১২ নভেম্বর আবহাওয়া আরও খারাপ হতে লাগল। রাত ১২টার পর থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস শুরু হলো। আমার বাড়ির উঠোনেই প্রায় এক বুক পানি ছিল।’

নাজিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এম ফারুকুর রহমান বলেন, ‘দোতলা টিনের ঘরে থাকতাম। আমার ঘরের ভিটাও ছিল মাটি থেকে প্রায় আড়াই হাত উঁচু। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি আমার ঘরের মেঝের ওপরে প্রায় এক হাত পর্যন্ত পানি উঠেছে। একপর্যায়ে ঘূর্ণিঝড়ের রুদ্র রূপ থেমে যায়। পরদিন সকালে পানি কমলেও বেড়েছে মানুষের আহাজারি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। ভোলা সদর সড়কেও ছিল হাঁটু পরিমাণ পানি। অনেকে আবার সেই পানিতে জাল ফেলে মাছ ধরছে। বিভিন্ন গাছে মানুষের লাশ আর মৃত পশুপাখি ঝুলতে দেখা গেছে। মানুষ, পশুপাখি, সাপ, বেজি একাকার হয়ে গেছে। কয়েক মাস মানুষ কোনো মাছ খাননি।’

প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের এই দিনকে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। উপকূলবাসী দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেছেন। কোস্টাল জার্নালিজম নেটওয়ার্ক-সিজেনেট ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ’র উদ্যোগে উপকূলের ১৬ জেলার ৪১ উপজেলার ৫৫ স্থানে একযোগে ‘উপকূল দিবস’ পালিত হচ্ছে। ‘উপকূল দিবস’ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বে থাকা রফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন, ‘উপকূলবাসীর জীবনমান উন্নয়ন ঘটানোই এই দিবসের লক্ষ্য।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে জানান, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর দুর্যোগকালে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্র ছিল না বললেই চলে। এ কারণে মানুষ ও গবাদিপশুর প্রাণহানি বেশি হয়েছে। কিন্তু এখন ভোলায় পর্যাপ্ত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভোলায় ৩৪টি মুজিব কেল্লা স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে উপকূলীয় এলাকার বহু মানুষ ও গবাদিপশু আশ্রয় নিতে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত