Ajker Patrika

দুই সোনিয়ার এত মিল

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৫৫
দুই সোনিয়ার এত মিল

নাম নিয়ে বিভ্রাটের বিষয়টা এখন বেশ ভালোই উপভোগ করেন তাঁরা দুজন। হয়তো সাফল্য পেয়েছেন সোনিয়া আক্তার কিন্তু পত্রিকায় গেল সোনিয়া খাতুনের ছবি। আবার কখনো এর উল্টোও হয়। নামের মতো দুই সোনিয়াকে ঘিরে এত মিল, বিভ্রাট না হওয়াটাই যে এখানে অস্বাভাবিক!

নামের মতো সোনিয়া আক্তার ও সোনিয়া খাতুনের উঠে আসা একই গ্রাম থেকে। দুজনই এসেছেন ঝিনাইদহ জেলার ভুটিয়ারগাতি গ্রাম থেকে। পড়াশোনাও করেছেন একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে। এমনকি নৌবাহিনীতে সোনিয়াদের কোচও এক। এবং দুই সোনিয়া পছন্দের ইভেন্ট ফ্রি-স্টাইল ও বাটারফ্লাই।

যেকোনো প্রতিযোগিতাতেই পুলে সমানে পাল্লা দিয়ে পদক জয়ের কারণেই এখন অনেক বেশি শিরোনাম হচ্ছেন দুই ‘সোনিয়া’। সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় সাঁতারে যেমন যৌথভাবে সেরা সাঁতারু হয়েছেন ঝিনাইদহের দুই ‘সোনিয়া’। সমান ৫টি করে সোনার সঙ্গে একটি করে রুপা। দুজন জাতীয় রেকর্ডও গড়েছেন একটি করে। সোনিয়া খাতুনের রেকর্ড তাঁর ‘প্রিয়’ ১০০ মিটার বাটারফ্লাই ইভেন্টে। সোনিয়া আক্তার রেকর্ড গড়েছেন ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে।

নামের মতো সবকিছুতেই যখন এত মিল, তালগোল পাকিয়ে যায় না? প্রশ্নটা শুনে হাসলেন সোনিয়া খাতুন। বললেন, ‘এ সমস্যা প্রায়ই হয়। দেখা গেল পদক জিতেছি আমি কিন্তু ছবি আর খবর প্রকাশিত হয়েছে তাঁর (পাশে দাঁড়ানো সোনিয়া আক্তারের)।’ দুজনের কর্মস্থল একই বাহিনীতে হওয়ায় দুজনের সম্পর্কটাও দারুণ। তবে পুলে নামলেই দুজনে একে অপরের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। একে অপরকে পাল্লা দেওয়ার এই বিষয়টি নিজেদের সেরাটা করে আনে বলে জানালেন সোনিয়া আক্তার, ‘আমাদের আসল লড়াই পানিতে। ওপরে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। যার যত শক্তি, সেটা আমরা পুলে পদক জয়ের জন্যই দেখাই।’

দুই সোনিয়ার এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু ২০১৬ সাল থেকে। ২০০৩ সালে প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারে নামা সোনিয়া আক্তার তখন ক্যারিয়ারের দারুণ ছন্দে। বয়সভিত্তিক সাঁতার থেকে তখন মাত্র বড়দের প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছেন সোনিয়া খাতুন। দুজনের প্রথম ১০০ মিটার বাটারফ্লাই ইভেন্টে সোনিয়া আক্তার হয়েছিলেন প্রথম আর সোনিয়া খাতুন দ্বিতীয়। সেই থেকে পুলে তাঁদের লড়াইটা জমে দারুণ।

চারিত্রিকভাবে দুই সোনিয়ার মধ্যে অবশ্য পার্থক্যও আছে। পুলে নিজের দলের কোনো প্রতিযোগী থাকলে পুলের পাশে দাঁড়িয়ে গলা ছেড়ে উৎসাহ দিতে দেখা যায় সোনিয়া আক্তারকে। সোনিয়া খাতুন খানিকটা শান্ত আর লাজুক স্বভাবের। এবারের জাতীয় সাঁতারে কেউ কাউকে হারাতে না পারলেও এক জায়গায় ‘সিনিয়র’ সোনিয়া আক্তারকে ছাপিয়ে গেছেন সোনিয়া খাতুন। বার্মিংহাম কমনওয়েলথের বাংলাদেশ দলের পাঁচজনের দলে নাম আছে তাঁর। যদিও এই সাফল্যের পেছনে সোনিয়া আক্তারের অবদান আছে বলেও জানালেন সোনিয়া খাতুন, ‘তাঁর উৎসাহেই এত দূর আসা। আপু সব সময়ই আমাকে সাহস দেন। কোথাও ভুল করলে দেখিয়ে দেন। আমাদের ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগই নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত