Ajker Patrika

বিমান কেন ওড়ে না ক্রীড়াঙ্গনে

ওমর ফারুক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২২, ১২: ১১
বিমান কেন ওড়ে না  ক্রীড়াঙ্গনে

কদিন আগে জমকালো এক অনুষ্ঠানে ১০ বছরের জমা ৮০টি ট্রফি ক্লাবগুলোকে বুঝিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)। অনুষ্ঠানে অনেক টেবিলের মধ্যে ছিল ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস’ ক্লাবের একটি টেবিলও। শিরোপা নিতে এলেও এক যুগ ধরে দেশের ক্রিকেটে বিমান ক্লাবের এখন কোনো অস্তিত্ব নেই।

শুধু ক্রিকেটেই নয়, ক্রীড়াঙ্গনের কোথাও আগের মতো বিমানের কার্যক্রম সেভাবে চোখে পড়ে না। অথচ স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ভালোভাবেই জড়িয়ে ছিল বিমান। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুম থেকে ঢাকা ক্রিকেট লিগে অভ্যুদয় বিমানের। সে সময় থেকে ক্রিকেটারদের আত্মমর্যাদার সঙ্গে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দিয়েছিল বিমান। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ প্রথম যে আইসিসি ট্রফি খেলতে গিয়েছিল, সেটিতেও বিমানের অবদান আছে।

তখন ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এতটা আকাশচুম্বী ছিল না। ফুটবলই ছিল বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা। ওই সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছিল সংস্থাটি। ২০১০-১১ মৌসুম পর্যন্ত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ছিল বিমানের দল। ঐতিহ্যবাহী আবাহনী, মোহামেডান, ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে লড়াই করে পাঁচবার শিরোপাও জিতেছে তারা। বাংলাদেশ জাতীয় দলের পাইপলাইনও শক্ত করতে বড় ভূমিকা রেখেছিল সংস্থাটি।

এ সময়ের মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটার হাবিবুল বাশার সুমন, ফারুক আহমেদ, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সানোয়ার হোসেন, মুশফিক বাবু, আতহার আলী, হাসানুজ্জামান ঝড়ুদের মতো ক্রিকেটারদের পছন্দের ক্লাব ছিল বিমান।

শুধু ক্রিকেটারই নন; দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার, বাংলাদেশ দাবার কিংবদন্তি খেলোয়াড় নিয়াজ মোর্শেদ, প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক দাবা মাস্টার রানী হামিদ, গিনেস বুকে রেকর্ড গড়া প্রখ্যাত টেবিল টেনিস খেলোয়াড় জোবেরা রহমান লিনুরাও বিমানের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন।

দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল অধিনায়ক ও বর্তমানে জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন তো বিমানের ক্রিকেটার হিসেবেই বেশি পরিচিত পেয়েছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে। বিমানের কথা তুলতেই সুমনও স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন, ‘আমার খেলোয়াড় হয়ে ওঠাই বিমান ক্লাব থেকে। শুরুতে ব্রাদার্সে দুই বছর খেলেছিলাম। এরপর বিমানে আসার পরই আমার ক্যারিয়ার শুরু হয়। বিমানের কাছে আমার অনেক ঋণ নয়, পুরোটাই ঋণ।’

২০০৭ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রানার্সআপ হয়েছিল বিমান। এরপর সংস্থাটির পরিচালনা পরিষদে কিছুটা পরিবর্তন আসে। দেশের ক্লাব ক্রিকেটেও বড় বড় নাম যোগ হতে থাকে। আর ব্যবসায়িক দিক থেকে সাফল্য কমে গেলে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় বিমান। তখনকার কর্মকর্তারা ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকে টেনেটুনে ২০১৪-১৫ মৌসুম পর্যন্ত ঢাকার ক্রিকেটে বিমানকে ধরে রেখেছিল। এরপর বিলুপ্ত হয়ে যায় ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস’ নামের ক্লাবটি।

ক্রীড়াঙ্গন থেকে বিমানের বিলুপ্তি নিয়ে বিমানের জেনারেল ম্যানেজার (এমটি) ও বিমান ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক শাকিল মিরাজ আজকের পত্রিকাকে বলছেন, ‘বিমান তার হারানো গৌরব-ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ক্রিকেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতা করছে। ক্লাব ক্রিকেটে ফেরাটা কঠিন হলেও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) মো. যাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমাদের ক্রীড়া কমিটি সক্রিয় আছে। এখন হয়তো অন্য কাজে ব্যস্ত আছি। মৌসুম এলে তো খেলাধুলার সঙ্গে থাকি। এবার আমরা ম্যারাথন ও দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলাধুলার সঙ্গে সব সময় সম্পৃক্ত থাকব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত: রণধীর জয়সওয়াল

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত