Ajker Patrika

অভিমান

অভিমান

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ওপর একটা অভিমান ছিল মুর্তজা বশীরের। অন্তরে ছিল বেদনা। তিনি মনে করতেন, জয়নুল আবেদিন তাঁর জন্য কিছুই করেননি। প্রথম বিভাগে চারুকলা থেকে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন মুর্তজা বশীর, কিন্তু শিল্পাচার্য তাঁকে আর্ট কলেজে চাকরি দেননি। বিদেশে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেননি। অন্য অনেকেই চারুকলার মাধ্যমে স্কলারশিপ পেয়ে দেশের বাইরে পড়তে গেছেন। মুর্তজা বশীর সেই সুযোগ পাননি। বাবার টাকায় ইতালিতে দুই বছর পড়াশোনা করেছেন তিনি। তাই মুর্তজা বশীর পার্থিব এ দুটি ব্যাপারে জয়নুল আবেদিনের ওপর অভিমান করেছিলেন। বন্ধুমহলে শিল্পাচার্যকে নিয়ে কথা বলতে গেলে এই দুটি বিষয় ধরে মুর্তজা বশীর তাঁর সমালোচনা করতেন।

এতে বিস্মিত হতেন বন্ধুরা। বলতেন, শিল্পাচার্য যখনই সমকালীন চিত্র আন্দোলনের কথা আলোচনা করেন বা সমসাময়িক শিল্পীদের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন, তখনই মুর্তজা বশীরের প্রশংসা করেন।

মৃত্যুর আগে যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন জয়নুল আবেদিন, তখন একদিন রশিদ চৌধুরীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলেন মুর্তজা বশীর। মুর্তজা বশীরকে দেখেই বুকে জড়িয়ে ধরেন জয়নুল আবেদিন। বললেন, ‘এত দিন কেন আসোনি?’

সেই বিশেষ পরিবেশে কী উত্তর দেওয়া যায়, সেটা ভেবে বের করতে পারলেন না মুর্তজা বশীর। একটি ছবির ক্যাটালগ এনেছিলেন, সেটি বাড়িয়ে দিলেন শিল্পাচার্যের দিকে। শিল্পাচার্য বললেন, ‘এমনি নেব না। কিছু লিখে দাও।’ যেন মুর্তজা বশীর একজন বিশিষ্ট শিল্পী।

একদিন কাছে টেনে নিয়ে বললেন, ‘তোমাকে দোয়া করে গেলাম।’

মুর্তজা বশীরের সব অভিমান অশ্রু হয়ে গড়িয়ে পড়ল। শিল্পাচার্যকে ভুল বোঝার অবসান হলো।

এবং এ রকম একদিন শিল্পাচার্য বললেন এক আশ্চর্য কথা, ‘নিজেকে এমনভাবে গড়ে তোলো, যখন কেউ প্রশংসা করবে তোমার, তুমি হাসবে। যখন কেউ সমালোচনা করবে, তখনো তুমি হাসবে।’ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, ‘কেননা তুমি জানো, তুমি কী।’ 

সূত্র: মুর্তজা বশীর, আমার জীবন ও অন্যান্য, পৃষ্ঠা: ১৩৯-১৪৬ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তাকে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত