Ajker Patrika

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ষোলকুড়ি খালের ওপর নির্মিত সেতু প্রায় দেড় বছর আগে দেবে যায়।

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৪
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ষোলকুড়ি খালের ওপর নির্মিত সেতু প্রায় দেড় বছর আগে দেবে যায়।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় খালের ওপর নির্মিত সেতু প্রায় দেড় বছর আগে দেবে যায়। স্থানীয়রা দেবে যাওয়া স্থানে মাটি ও কলাগাছ ফেলে কোনোমতে চলাচল উপযোগী করলেও ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিপাকে পড়েছেন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।

অটোরিকশাসহ ছোট ছোট বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করলেও যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের জাটিয়া বাজার থেকে জাটিয়া চৌরাস্তার সংযোগ সড়কের মাঝামাঝি স্থানে ষোলকুড়ি খালের ওপর ওই সেতু। প্রায় দেড় বছর আগে সেতুটি দেবে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা দেবে যাওয়া স্থানে মাটি ফেলে, দুই পাশে কলাগাছ ও বাঁশের খুঁটি দিয়ে কোনোমতে চলাচল উপযোগী করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর দু-এক আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ষোলকুড়ি খালের নাব্য বাড়াতে খনন করা হয়। এ খালের উৎসমুখ কুমুরিয়া বিল সংলগ্ন উত্তমপুরে আর পতিত মুখ কুমারুলীর বাঘজুড়ি খালে। অপরিকল্পিত খননের ফলে নিচের মাটি সরে যাওয়ায় সেতুর একটি অংশ ধসে পড়ে দেবে যায়। এরপর থেকেই এলাকাবাসীর দুর্ভোগ শুরু হয়। বিকল্প সড়ক না থাকায় আশপাশের কমপক্ষে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ধসে পড়া এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করেন।

মোস্তাকিম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ধসে পড়া সেতুর ওপর দিয়ে আশপাশের ৮-১০ গ্রামের লোকজন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী চলাচল করেন। এ ছাড়া কৃষিপ্রধান এলাকা হওয়ায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্যও এই সড়ক দিয়েই বহন করতে হয়। সেতুর এমন বেহাল দশায় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন না কেউই।

কাঞ্চন মিয়া নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, সেতুর এমন বেহাল দশায় দিনের বেলায় দেখেশুনে চলাচল করতে পারলেও, রাতের বেলায় সেতু পার হওয়ার সময় মনে হয়, এই বুঝি গাড়ি উল্টে খালে পড়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আব্দুল কাইয়ূম বলেন, ‘এই সেতুর ওপর দিয়ে আমার মতো ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এত দিন হয়ে গেছে এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙে পড়ে আছে। এ পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু নির্মাণের জন্য একাধিকবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় উত্থাপন করেছি। এ ছাড়া স্থানীয় সাংসদ এবং উপজেলা প্রকৌশলীকেও অবহিত করেছি। আশা করি, অচিরেই হয়তো সেতু নির্মাণ হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) তৌহিদ আহমেদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের ফলেই সেতুটি ধসে পড়েছে। অতিরিক্ত গভীরতায় খাল খননের ফলে আগে যেখানে ৫.৫ মিটার সেতু ছিল, সেখানে খাল বড় হয়ে গিয়ে এখন অন্তত ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করতে হবে। এলজিইডির একটি নতুন প্রকল্প তৈরি প্রক্রিয়াধীন আছে। সেখানে এই সেতুটি নতুনভাবে নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সেতু নির্মাণকাজ শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত