Ajker Patrika

বেড়িবাঁধে ধস, প্লাবনের শঙ্কা

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫৩
বেড়িবাঁধে ধস, প্লাবনের শঙ্কা

সাতক্ষীরার দেবহাটায় ইছামতী নদীর ভাতশালা এলাকার বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। খবর পাওয়া গেছে, বেড়িবাঁধের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ধসে গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে প্লাবিত হবে পুরো এলাকা। তা ছাড়া নদীভাঙনে নদীপাড়ের শত শত মানুষের ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বেড়িবাঁধটির ভাতশালা, উত্তর কোমরপুরসহ কয়েকটি পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধের এক-তৃতীয়াংশ কংক্রিটের ব্লক ধসে নদীতে বিলীন হয়েছে। পানির প্রবল ঢেউয়ে বাঁধের নিচে থাকা জিও ব্যাগ ধসে পড়ে এমনটি ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছরের পর বছর ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় প্রতিবছর বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ধস দেখা দেয়। তা ছাড়া

নদী থেকে উত্তোলন করা বালু বেড়িবাঁধ ঘেঁষে রাখা হয়। ওই বালুর চাপ সহ্য না করতে পেরে প্রথমে জিও ব্যাগগুলো সরে গেছে এবং পরে বাঁধের ব্লকে ধস নেমেছে।

আরও জানা গেছে, নদীর মূল বেড়ি ছিদ্র করে পানি উত্তোলন করাও বেড়িবাঁধে ধসের জন্য দায়ী। যেকোনো মুহূর্তে পুরো বেড়িবাঁধ ধসে পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। প্লাবনে সৃষ্টি হলে নদীর পানি ঢুকে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল ও মৎস্যঘের ভেসে যাওয়াসহ শত শত পরিবার পানি বন্দী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

একাধিক এলাকাবাসী বলেন, ‘কয়েক মাস আগে বেড়িবাঁধের ধস ঠেকাতে সরকারিভাবে জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও সঠিক তদারকির অভাবে তা এখনো ফেলা হয়নি।

বৈশাখের ঝড়ে বেড়িবাঁধের কী অবস্থা হবে, সেটা সৃষ্টিকর্তাই জানেন। বড় ধরনের ক্ষতি হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। যতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে এখনই যদি বেড়িবাঁধটির সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করা হয়, তাহলে অল্প খরচেই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদাউস আলফা বলেন, ‘বেড়িবাঁধের ভাঙন সম্পর্কে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। তবে সার্বিক অবস্থা দেখে যা মনে হচ্ছে, বেড়িবাঁধ পুরোপুরি না ভাঙলে সংস্কারকাজ শুরু হবে না। যত বেশি ভাঙবে বরাদ্দের টাকা তত বেশি পাওয়া যাবে। স্বার্থান্বেষী এক শ্রেণির মানুষের সবকিছু নিয়ে ব্যবসা করার মানসিকতার কারণে নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষগুলো বিপদে পড়েন।’

দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বলেছি। এর আগেও বিষয়টি তাঁদের জানিয়েছিলাম, কিন্তু কাজ হয়নি। শিগগিরই সংস্কারকাজ শুরু করার জন্য আবারও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হবে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। শিগগিরই যাতে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।’

দেবহাটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এসও সাইদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি, কিন্তু ওপর মহলের নির্দেশনা ও বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত সংস্কারকাজ শুরু করা সম্ভব না। তবে উপর মহলের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। নির্দেশ পেলে শিগগিরই সংস্কারকাজ শুরু করা সম্ভব হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘শিগগিরই বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো পরিদর্শন করব। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত