Ajker Patrika

অর্থাভাবে শিল্পী খোকনের মানবেতর জীবন

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪, ১৭: ১৯
অর্থাভাবে শিল্পী খোকনের মানবেতর জীবন

ভালো নেই গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী মনিরুল ইসলাম খোকন। একসময়ে বেতার ও বিটিভির তালিকাভুক্ত এই শিল্পীর লেখা গানে সুর দিয়েছেন শেখ সাদী খান, এইচ এম রফিক, ওস্তাদ সুরুয মিয়াসহ অনেকেই। কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা, শাকিলা জাফর, সুজিত মোস্তফা, এম এ হামিদ, সাবিনা আক্তার রুনার মতো শিল্পীরা। পেয়েছেন বাংলাদেশ বেতার, শিল্পকলার জাতীয় সম্মাননাসহ বহু সনদ। নিজেও গাইতেন গান। আজ তাঁর কণ্ঠে নেই সেই সুমধুর সুর। নানা রোগে ভুগে এখন শয্যাশায়ী মানিকগঞ্জের এই শিল্পী। অর্থের অভাবে চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছেন না।

গতকাল মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের খান বানিয়ারা গ্রামে খোকনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ মানবেতর জীবনযাপনের চিত্র। ব্যক্তিগত জীবনে ২ সন্তানের জনক মনিরুল গ্রামের বাড়িতেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। এখন তাঁর জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত কাটে নিজ ঘরের শয়নকক্ষে।

অনেক দিন হলো সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে গানের টিউশনি করে চালাচ্ছিলেন সংসার। জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে বছরে পান সামান্য ভাতা। ৬ মাস আগে হার্ট অ্যাটাক হলে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। সম্প্রতি উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষক পদ থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হলে উপার্জনের আর কোনো উৎস নেই তাঁর। 
খোকন বলেন, ‘১ হাজার ২০০ গান লিখেছি। নিজের লেখা গানগুলো থেকে সুর করেছি ১২০টি। আমি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী। একসময় আমার নামডাক ছিল। ছিল কদর, সম্মান। আজ পঙ্গু হয়ে ঘরে শুয়ে থাকি। কেউ খোঁজ নেয় না। অর্থাভাবে থমকে আছে জীবন।’

২০১৯ সালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ বেতার বা টেলিভিশনের কোনো গানের জন্য ডাকা হয়নি তাঁকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৬ মাস আগে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হার্টের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সিআরটি (পেসমেকার) মেশিন স্থাপন করতে হবে। এতে ব্যয় হতে পারে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। চিকিৎসার ব্যয়ের কথা শুনে খোকনের পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার।

পরিবারের সঙ্গে মনিরুল ইসলাম খোকন খোকনের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার ঝর্ণা বলেন, ‘অনেক অনুষ্ঠানে দেখা যায় শিল্পীর ওপর টাকা ছিটাতে। অথচ টাকার অভাবে একজন শিল্পীকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হচ্ছে।’ স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করছেন তিনি।

মানিকগঞ্জ জেলা কালচারাল অফিসার সেলিনা সাঈয়েদা সুলতানা আক্তার বলেন, ‘খোকন মা‌নিকগঞ্জ জেলার একজন গুণী শিল্পী এবং জেলা শিল্পকলা একা‌ডে‌মি থে‌কে কণ্ঠসংগীতে সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত শিল্পী। জেলার সংস্কৃ‌তি বিকা‌শে তাঁর অবদান‌কে বাঁচিয়ে রাখ‌তে হ‌লে তাঁর চি‌কিৎসা প্রয়োজন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত