Ajker Patrika

বেড়েছে রোগী, সেবায় হিমশিম

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ০৮
বেড়েছে রোগী, সেবায় হিমশিম

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়েছে। মেঝেতেও ঠাঁই হচ্ছে না অনেকের। এতে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে স্বাভাবিকভাবে আড়াই হাজারের মতো রোগী চিকিৎসা নেন। সেখানে এখন চার থেকে পাঁচ শ জন বেশি রোগীকে সেবা দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এর সঙ্গে করোনা রোগীদেরও বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সেবা দিচ্ছে হাসপাতালটি। তীব্র জনবল সংকট থাকলেও রোগীদের জন্য সেবার মান ঠিক রেখে সবকিছু সামলানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও কয়েক জন রোগী অভিযোগ করেছেন, রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালে সেবার মান কিছুটা কমেছে।

শম্ভুগঞ্জ এলাকার আব্দুল হালিম বলেন, গত শুক্রবার নাতিন জামাইকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন। আসন খালি না থাকায় হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। রোগীর এমন চাপ যে, হেঁটে যাওয়ারও জায়গা নেই। চিকিৎসক দিনে একবার আসলেও নার্সরা দুই-তিনবার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

ঈশ্বরগঞ্জ থেকে ভাগনেকে নিয়ে গত শনিবার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন দুলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রুমের ভেতরে সিট পাওয়া তো দূরের কথা বারান্দায় জায়গা নেই। কোনোভাবে এক কোণে বসার মতো একটু জায়গা পেয়েছি।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ছাড়াও আশপাশের আরও কয়েকটি জেলার রোগীরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন সেবা নিতে। চিকিৎসার মান ভালো হওয়ায় সম্প্রতি রোগীর চাপ বেড়েছে হাসপাতালে।

অতিরিক্ত রোগীর চাপে হাসপাতালের বারান্দাতেও ঠাঁই হচ্ছে না অনেকের। এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি রয়েছেন প্রায় দুই হাজার ৯ শ জনের মতো।

এ বিষয়ে মমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘সেবার মান ভালো হওয়ায় রোগীর অনেক চাপ বেড়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে দৈনিক গড় রোগী ছিল আড়াই হাজার থেকে তিন হাজারের মধ্যে। অক্টোবর মাসে তা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার থেকে ৩২ শ’র মধ্যে। তবুও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

শেরপুরের ঝিনাইগাতী থেকে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘এবারের মতো রোগীর চাপ হাসপাতালে আর দেখিনি। বসে থাকার মতোও একটু ঠাঁই পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষের ওপর মানুষ।’ এত রোগীর মধ্যে সেবার মান একটু কমে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

গাইনি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘লেবার ওয়ার্ড মানেই রোগীর চাপ। তবে কয়েক দিন ধরে রোগীর একটু চাপ বেশি। তাই কাজেরও চাপ বাড়ছে।’

একই ওয়ার্ডের নার্স চিত্রালেখা রায় বলেন, রোগীর চাপে বেগ পোহাতে হচ্ছে তাঁদের। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে বেডের তুলনায় রোগী দুই থেকে তিন গুন। তবুও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, ‘সেবার মান ভালো হওয়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক হাজার এক শ নার্স রয়েছে। সেবা নিশ্চিত করতে আরও এক হাজার নার্স দরকার।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী বলেন, ‘মৌসুম পরিবর্তন হওয়ায় রোগী একটু বাড়ছে। এক হাজার শয্যার হাসপাতালে প্রায় দুই হাজার ৯ শ রোগী ভর্তি রয়েছে। জনবল সংকট থাকার পরেও আমরা চেষ্টা করছি সেবার মান ঠিক রাখার জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত