Ajker Patrika

স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করার ঘোষণা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ২২
স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করার ঘোষণা

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ল্যাব টেকনলজিস্ট সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এদিকে পুলিশ বলছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হত্যাকারীদের শনাক্তে চেষ্টা চলছে।

গতকাল বুধবার হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এ ঘোষণা দেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হিমাংশু লাল দাশ।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় পিটিয়ে মেরে ফেলা খুবই ন্যক্কারজনক। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাই। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

হবিগঞ্জ জেলা বিএমএর সভাপতি ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম করোনার সময় হাজারো মানুষকে সেবা দিয়েছেন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি করোনার নমুনা সংগ্রহ করেছেন। অথচ তাঁকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। এতে শুধু আমরা স্বাস্থ্যকর্মীরা নই, পুরো হবিগঞ্জের মানুষ মর্মাহত। স্বাস্থ্য বিভাগ যে কর্মসূচি ঘোষণা দেবে আমরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’

প্রতিবাদ সভা শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তারা। পরে তাঁরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এর আগে মঙ্গলবার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেন।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ আহমেদ ইমতিয়াজ তুহিন জানান, সাইফুলের মা বাবা কেউই বেঁচে নেই। তিনি নবীগঞ্জের পুরানগাঁও গ্রামের তাহমিনা বেগম চৌধুরী নামে এক নারীকে ধর্ম মা ডেকেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাহমিনা বেগম সদর হাসপাতালে করোনা টিকা নিতে আসেন। টিকা নেওয়া শেষে সাইফুল তাহমিনা বেগমকে বাড়ি যেতে রিকশাযোগে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড যাচ্ছিলেন।

পথে শহরের টাউন হল এলাকায় কয়েকজন যুবক তাঁকে বেধরক পিটিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা সাইফুলকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়া পথে সাইফুল মারা যান।

সাইফুলের সঙ্গে থাকা নারী তাহমিনা বেগম চৌধুরী বলেন, ‘দুপুরে দুই যুবক রক্ত দিতে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসেন। এ সময় সাইফুলের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা সাইফুলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান।’

তিনি বলেন, ‘সাইফুল আমাকে গাড়িতে তুলে দিতে রিকশা দিয়ে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড উদ্দেশ্যে রওনা হন। টাউন হল রোড এলাকায় রিকশা থেকে হঠাৎ তাকে টেনে নামায় এক যুবক। এ সময় পেছন থেকে আরও এক যুবক বড় একটি বাঁশ দিয়ে সাইফুলের মাথায় আঘাত করে। এরপর তাঁরা সাইফুলকে মাটিতে ফেলে আবারও মারতে থাকে।’

‘যখন তাকে সাইফুলকে মারছিল তখন সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। দুই যুবক সাইফুলকে মেরে চলে যাওয়ার পর লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’ বলেন তাহমিনা বেগম।

হবিগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আমরা কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেখান থেকে হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দনবাস চান পুতিন—ন্যাটো তো নয়ই, পশ্চিমা সেনাও থাকবে না ইউক্রেনে

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেবা বন্ধের ঘোষণা

তথ্য যাচাইয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করবেন—ইউটিউব চ্যানেলে সিইসির বার্তা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত