Ajker Patrika

৪৪ পদের অর্ধেকই শূন্য

হোসাইন আলী কাজী, আমতলী (বরগুনা)
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৫১
৪৪ পদের অর্ধেকই শূন্য

শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে আমতলী সরকারি কলেজের পাঠদান। কলেজে অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মচারী ও অফিস সহায়কসহ ৪৪ জনের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২২ জন। অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারীর নিয়োগ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে আমতলী উপজেলায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন শিক্ষানুরাগী ও সাবেক এমপিএ মফিজ উদ্দিন তালুকদার। মানসম্মত পাঠদান দেওয়ায় ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণ হওয়ার পরপরই অনেক শিক্ষক অবসরে যান। ওই সময় থেকে দেখা দেয় শিক্ষক সংকট। বর্তমানে কলেজটিতে চরম শিক্ষক সংকট রয়েছে।

কলেজে স্নাতক ও একাদশ–দ্বাদশ শ্রেণিতে ২ হাজার ৭৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজে ২২টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। জাতীয়করণের পর থেকে এই ২২ বিষয়ের মধ্যে ৮টি বিষয়ের শিক্ষক নেই। শিক্ষক না থাকায় ওই ৮ বিষয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

আবশ্যিক বিষয় বাংলার শিক্ষক রেহেনা খানম ২০১৬ সালে অবসরে যান। ওই সময়ে থেকে এ বিষয়ে শিক্ষক নেই। গত ১ অক্টোবর আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলাম তালুকদার অবসরে যান। গত ১৫ বছর ধরে কলেজে ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিষয়ের কোনো শিক্ষক নেই। ২০১৯ সাল থেকে ইসলামের ইতিহাস, ইতিহাস, অর্থনীতি, পৌরনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ের শিক্ষক নেই।

লাইব্রেরিয়ান ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নেই দীর্ঘদিন ধরে। তিনজন করণিকের মধ্যে আছে মাত্র ১ জন। ৫ জন প্রদর্শক শিক্ষকের বিপরীতে আছেন ২ জন। ১১ জনের অফিস সহায়ক পদের জায়গায় কর্মরত আছেন মাত্র ৫ জন। অফিস সহায়ক ৬ জনের পদই শূন্য।

এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান অবসরে যান। বর্তমানে কলেজটিতে অধ্যক্ষ পদও শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে কলেজের কার্যক্রম। গত ৫ বছর ধরে শিক্ষকেরা অবসরে গেলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে না এমন অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হোসেন আহম্মেদের। দ্রুত অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমতলী সরকারি কলেজে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হওয়া মানে শিক্ষাজীবনকে বিপদে ঠেলে দেওয়া। দীর্ঘদিন ধরে এই বিভাগে ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিষয়ের শিক্ষক নেই।

ইতিহাস বিষয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক না থাকায় ক্লাস হচ্ছে না। এতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা। এ বিষয়ে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাই।’

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ বলেন, ‘শিক্ষক না থাকায় গত ২ বছর ধরে অর্থনীতি বিষয়ের ক্লাস হয় না। এমন একটি জটিল বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় আমরা চরম বিপদে পড়েছি।’

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হোসেন আহম্মেদ বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট দপ্তরে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেছি, কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত চাহিদামত শিক্ষক, করণিক ও অফিস সহায়ক নিয়োগ না দেওয়া হলে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত