Ajker Patrika

মোহাম্মদ সুলতান ও পুঁথিপত্র

মোহাম্মদ সুলতান
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ০৮
মোহাম্মদ সুলতান ও পুঁথিপত্র

গাজীউল হক যখন আমতলার সভা থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার কথা বললেন, তখন উত্তাল হয়ে উঠেছিল আমতলা। ১০ জন করে এক একটা মিছিল এগিয়ে যেতে থাকল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের দিকে। এই ছাত্রদের নাম লিখে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল মোহাম্মদ সুলতানের।

পুলিশের মুহুর্মুহু টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ, লাঠিপেটার মধ্য দিয়েই ১০ জনের মিছিলগুলো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। পুলিশ তাঁদের উঠিয়ে নিল ট্রাকে। এই হুলুস্থুলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নাম লিখে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। বেলা ৩টার পর পুলিশ যখন ছাত্রদের ওপর গুলি চালাল, তখনই পাল্টে গেল পুরো পরিস্থিতি। সেই পুরো সময়টাতেই যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সুলতান।

ভাষা আন্দোলনের কয়েক মাস পর মোহাম্মদ সুলতান এবং এম আর আখতার মুকুল ইকবাল হলে ফিরে এলেন। স্থায়ী একটা রুটি-রুজির ব্যবস্থা করার জন্য ঠিক করলেন প্রগতিশীল বই বিক্রির ব্যবস্থা করবেন। দোকানের নাম দিলেন পুঁথিপত্র। নার্সেস কোয়ার্টারের পেছন মসজিদের ওয়াকফ এস্টেটের জমির ওপর টিনের ছাদের ছোট্ট একটি দোকান। ঠিকানা ২৭/৬ বকশীবাজার। ব্যবসা না রাজনীতি আগে—এই প্রশ্নে দুই বন্ধুর মতবিরোধ হলো। এম আর আখতার মুকুল সরে গেলেন পুঁথিপত্র থেকে। মো. সুলতান প্রগতিশীল বইয়ের জন্য পুঁথিপত্রের দুয়ার খোলা রাখলেন। ১৯৫৩ সালে তাঁর প্রকাশনী থেকেই ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ নামে একুশের প্রথম সাহিত্যিক দলিল প্রকাশিত হয়। এটি সম্পাদনা করেছিলেন কবি হাসান হাফিজুর রহমান। সংকলন প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার এটি বাজেয়াপ্ত করে।

মো. সুলতানের পুঁথিপত্র প্রকাশনী তছনছ করে। পুঁথিপত্রের এ ঘরটিতেই একটি নতুন অসাম্প্রদায়িক ছাত্রসংগঠন গড়ে তোলার প্রাথমিক আলোচনা হয়। যার ফসল ছাত্র ইউনিয়ন। কমরেড সুলতান ছিলেন এই সংগঠনের প্রথম সভাপতি।

সূত্র: ফয়েজ আহমদ, মোহাম্মদ সুলতান কয়েকটি রেখায়, পৃষ্ঠা ১৫০-১৫২

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত