Ajker Patrika

নতুন টুপিতে মসজিদের পানে

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা
নতুন টুপিতে মসজিদের পানে

সন্ধ্যার আকাশে নতুন চাঁদ দেখে খুশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। অপেক্ষার প্রহর শেষ। এবার পুরো মাস কাটবে ইবাদতে। বাড়িতে বাড়িতে ইফতারি বানানোর ধুম শুরু হবে আজ থেকে। জীবনযাপনের এক ভিন্ন আয়োজন  এক মাসের জন্য।

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, নীলক্ষেত, হাতিরপুল, পলাশী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে রোজা ও তারাবিহ নিয়ে ছিল দিনভর আলোচনা। প্রথম তারাবিহ পড়তে নতুন টুপি আর পরিচ্ছন্ন পোশাকে মসজিদে মসজিদে ছিল মুসল্লিদের সমাগম। নিবেদনের সে এক দারুণ আবেগ। রমজান কেবল রোজার মাসই নয়, এর সঙ্গে জুড়ে যায় এই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের পালিত চর্চা। খাদ্যে, সহবতে সেই যাপনের আলাদা এক মাধুর্য আছে।

বাবার হাত ধরে রাজধানীর কাঁটাবন মসজিদে নামাজ আদায় করতে এসেছিল ৭ বছরের শিশু আয়মান সালেহ। ছোট্ট আয়মান বলল, ‘রোজা রাখব আজ, তাই চলে এসেছি। বাবা আমাকে পাঞ্জাবি পরিয়ে নিয়ে এসেছে। আম্মু বলেছে, আজকে নাকি রোজা শুরু। আমি রোজাও রাখব, ইফতারও করব।’ আয়মানের বাবা সাদিকুল ইসলাম জানান, আয়মান তার মায়ের কাছে রমজানের কথা শোনার পর থেকে মসজিদে আসতে চাচ্ছে। তাই তিনি ছেলেকে নিয়ে এসেছেন ধর্মের বৃহত্তর পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।

কাঁটাবন মসজিদের ডান পাশ দিয়ে উত্তর দিকের একটু সামনে গেলেই হাতিরপুল বাজার। বাজারে গিয়ে দেখা যায়, লোকজন বাজার-সদাই করতে ব্যস্ত। বাজারে ঢুকলেই এখন শোনা যায় হরেক রকম কথা। দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মন-কষাকষি আমাদের ঐতিহ্যেরই অংশ। রোজার বাজারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না বলেই মনে হলো। দোকানিদের উদ্দেশে ক্রেতারা বলছেন, ‘ভালো জিনিস দেন, রোজা রাখতে হবে। ভেজাল খেয়ে রোজা রেখে কষ্ট করতে পারব না।’ এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দামের কারণে ক্রেতাদের যে নাভিশ্বাস উঠছে, সেটাও স্পষ্ট বোঝা যায় জিনিসপত্রের পরিমাণ দেখলে।

হুসনে আরা ফাতেমা এসেছিলেন হাতিরপুল বাজারে কেনাকাটা করতে। আজিজ সুপার মার্কেটের আবাসিক অংশের ভাড়া বাসায় থাকেন পরিবার নিয়ে। স্বামী হাসনাত ফেরদৌস ঢাকার একটি করপোরেট অফিসে চাকরি করেন। হুসনে আরা জানান, সাধারণত তাঁর স্বামীই বাজার-সদাই করেন। আজ তাঁর ফিরতে দেরি হবে বলে নিজেই বাজার করতে এসেছেন। সাহ্‌রিতে রান্নার জন্য তিনি মাছ, সবজি কিনেছেন। কিনেছেন ছোলা, মসুর ডাল, খেসারি, খেজুরসহ কিছু অরগানিক খাদ্যদ্রব্য। দাম নিয়ে খানিকটা অসন্তোষ দেখা গেল তাঁর মধ্যে। কিন্তু প্রয়োজনের ওপর কোনো কথা চলে না বলে কিনতে হলো বেশি দামেই।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে জমে উঠেছে রোজার আমেজ। প্রতিদিন ক্যানটিনের খাবার খেয়ে জীবন পার করা শিক্ষার্থীরাও ছুটছেন ‘কিছুটা ভালো খাবার’-এর ব্যবস্থা করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিচালিত মেসগুলোকে অনেকে দেখছেন ভরসার আশ্রয় হিসেবে। অনেকে আগের মতো খাবেন ক্যানটিনে। কেউ কেউ আবার বাজার-সদাই করেছেন বন্ধুবান্ধব, সহপাঠীদের সঙ্গে মিলেমিশে রান্না করে খাওয়ার জন্য। বিজয় একাত্তর হলের মেসে সাহ্‌রি খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়েছেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রোজা রাখব, ভালো কিছু খেতে হবে। ক্যানটিনের চেয়ে মেসের ওপরই ভরসা রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

এস আলমের জামাতার পেটে ৩৭৪৫ কোটি টাকা

হেফাজতের সমাবেশে জুলাইয়ের নারীদের গালিগালাজের নিন্দা জানাই: রিফাত রশিদ

ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নেই ১ শতাংশও

জামায়াতের ‘রোহিঙ্গা রাজ্যের প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করল মিয়ানমার সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত