Ajker Patrika

ইটভাটায় হুমকিতে পরিবেশ

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৭
ইটভাটায় হুমকিতে পরিবেশ

জামালপুরের মেলান্দহে ফসলি জমি থেকে মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। এতে কমছে ফসলি জমি। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। লোকালয়ে ফসলি জমিতে ইটভাটা গড়ে তোলায় হুমকির মুখে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র। উপজেলা প্রশাসন বলছে, পরিবেশের ক্ষতির জন্য দায়ি ইটভাটা চিহ্নিত করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এসব ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ২৭টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার মধ্যে কয়েকটি ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে বেশি ইটভাটা হচ্ছে উপজেলার নয়ানগর ইউনিয়নে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী একটি ইটভাটা পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, লাইসেন্স এবং আয়কর পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকতে হবে। এ ছাড়া ট্যাক্স, ভ্যাট পরিশোধের সনদপত্র, আপত্তি নেই মর্মে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সনদপত্র, ভূমি কর পরিশোধের রসিদ ও জমির মালিকানা অথবা ভাড়ার চুক্তিপত্র জেলা প্রশাসক অফিসে দাখিল করার নিয়ম রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জেলা প্রশাসকের কাছে ইট প্রস্তুত করণের জন্য (ইটভাটা স্থাপনের) লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করতে হয়। অনুসন্ধান কমিটি অনুসন্ধান পূর্বক জেলা প্রশাসকের কাছে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে সুপারিশ করবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক বিষয়টি নিজে যাচাই করবেন। তারপর নির্ধারিত ফি নিয়ে লাইসেন্স প্রদান করবেন। আইনে বলা আছে, ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য ভাটা মালিকেরা আবেদনে মাটির উৎস উল্লেখ করবেন। কিন্তু উপজেলায় ইটভাটা মালিকেরা এসব নিয়মের অনেক কিছু মানছেন না।

শ্যামপুর এলাকার লোকজন বলছেন, ‘ইটভাটার আশপাশের বাড়িগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। ঘরবাড়ি ইটভাটায় ছাইয়ে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ইটভাটার জন্য বাড়িতে কোনো ধরনের গাছ হচ্ছে না। বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছগুলোও মরে গেছে ইটভাটার কারণে। ইট পোড়ানোর সময় বাতাসের সঙ্গে এক ধরনের ধুলো কণা উড়ে এসে গায়ে পড়ে। লোকালয়, ফসলি জমি ও এলজিইডির পাকা সড়ক থেকে ন্যূনতম আধা কিলোমিটার দূরে ইটভাটার অবস্থান হওয়ার পরিবেশগত বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ফসলি জমিতে ও বাড়ির আশপাশে যেসব ইটভাটা রয়েছে সেগুলো বন্ধের দাবি জানান এলাকাবাসী।

পরিবেশবিদ জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, কয়লা বা কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরির কারণে ইটভাটা থেকে যে ধোঁয়া বের হয় তা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসব কালো ধোঁয়া মানবদেহে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্ট, ক্যানসারসহ ফুসফুসে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। লোকালয়ের কাছে ও ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা ইটভাটা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ দরকার। তা না হলে পরিবেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে পরিবেশ।

মেলান্দহ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন ‘ফসলি জমির ওপরের অংশের মাটি কেটে নিলে ফসলের গুণগত মান কমে যা। ফসলি জমিতে ইটভাটার ছাই পড়লে ফলন কম হয়। পরিবেশবান্ধব সঠিক মাপে চিমনি যদি হয় তাহলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। আমরা এক বছর ধরে ইটভাটার ছাড়পত্র দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতির জন্য যে সব ইটভাটা দায়ী সেগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এসব ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত