Ajker Patrika

বেড়ে যাওয়া দামে স্থির হচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বেড়ে যাওয়া দামে স্থির হচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজার

এক লাফে ২০ টাকা বাড়ানোর পরে ৫ টাকা কমিয়ে দাম স্থির হয়। এতে আগের চেয়ে ১৫ টাকা বাড়তিই গুনতে হয় ভোক্তাকে। এভাবেই চলছে নিত্যপণ্যের বাজার। প্রায় প্রতিটি পণ্যেই এমন কৌশলে অতিরিক্ত মুনাফা লুটে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

নির্বাচনের পরে প্রতি কেজি চালের দাম ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। কিছু দোকানে সেই দাম ২-৩ টাকা কমালেও বেশির ভাগ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি আটাশ চাল ৫৮-৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০-৭২, নাজিরশাল ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শুধু চাল নয়, সবজি, মাছ-মাংসসহ প্রায় সব খাদ্যপণ্যের বাজারদর এখন আগের বছরগুলোর তুলনায় বেশি। ঊর্ধ্বমূল্যের এই বাজারে দুই বেলা দুমুঠো পেটপুরে খেতে পারাই দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের।  

কথা হয় কারওয়ান বাজারের খুদে ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। ৬৩ বছরের বৃদ্ধ দেলোয়ার এক কাপ চা ও সঙ্গে একটা বনরুটি খেয়েই সকাল-দুপুর পার করেন। রাতে দুমুঠো ভাত খান, তবে প্রতিদিন তাও জোটে না। দেলোয়ার হোসেন জানান, কারওয়ান বাজারে টুকরিতে করে কখনো ফল, কখনো শাকসবজি বিক্রি করেন তিনি। ভারী টুকরি নিয়ে চলার শক্তি নেই বলে বাজারের কোনো এক কোণে ফল নিয়ে বসেন। নোয়াখালীর রামগঞ্জের গ্রামে তাঁর স্ত্রী এবং তিন মেয়ে থাকেন। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।ছোট দুই মেয়েকে ক্লাস সিক্সের পর আর পড়াতে পারেননি। পরিবারে উপার্জনকারী ব্যক্তি একমাত্র তিনিই। আজকের পত্রিকাকে দোলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সারা দিন কেনাবেচার পর কোনো দিন ২০০, কোনো দিন ৩০০ টাকা থাকে। কোনো দিন আবার থাকেও না। দুই বেলা ভাত-তরকারি খাইতে গেলে দেড় শ দুই শ টাকা লাগে। দুই বেলা যে ভাত খামু, সেই টাকা পামু কই?’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে দোলোয়ার হোসেনের মতো মানুষদের টিকে থাকাটাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি, অসময়ের বৃষ্টি, হরতাল, অবরোধ, নির্বাচনসহ নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়েই চলেছেন। কখনো ২০ টাকা বাড়িয়ে কমানো হচ্ছে দুই টাকা। ফলে বেশির ভাগ পণ্য উচ্চমূল্যেই স্থির থাকছে। 
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা বাজার ও মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল, সবজি, মাংসসহ প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তি।

বাজারে রমজাননির্ভর পণ্যের দাম ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়ে গেছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।কারওয়ান বাজারে ছোলার ডাল কিনতে আসা আফসানা আকতার বলেন, রোজার দুই মাস আগেই ছোলার দাম ১০০ টাকা করছে। রোজার সময় এই দাম কোথায় পৌঁছাবে? বিক্রেতা হারুনুর রশিদ উত্তরে শুধু বললেন, ‘আমরা তো কিনে এনে বিক্রি করি। ডলারের দাম অনেক বাড়ছে। তাই সবকিছুর দামই বেশি।’

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের কিছু কিছু সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমলেও তা স্বাভাবিক দামের তুলনায় বেশি। প্রতিটি ফুলকপি-বাঁধাকপি ৪০-৬০, লাউ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি শিম ৫০-৮০, বেগুন ৫০-৮০, গাজর ৪০-৬০, মুলা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রসুন ২৪০-২৮০, আদা ২২০-২৮০, পেঁয়াজ ৯০-১০০, আলু ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

চিংড়িসহ দেশি মাছের দামও গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের মাছবিক্রেতা মোহাম্মদ রোকন বলেন, এই সময়ে চিংড়ি কম ওঠে। তাই দামটা এখন একটু বাড়ছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, বড় রুই ৪৫০-৪৮০, ছোট রুই ৩০০-৩২০, বাগদা চিংড়ি ৭০০-৮০০, হরিণা চিংড়ি ৭৫০-৮০০, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ব্রয়লার মুরগি আগের মতোই ১৯০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়ে ১৪৫ টাকায় পৌঁছেছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭০০-৭৫০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি ১১০০-১১৫০ টাকা আর ছাগলের মাংস ১০০০-১০৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত