Ajker Patrika

ছয় ছয় ছয় অস্ট্রেলিয়ার জয়

রানা আব্বাস, দুবাই থেকে
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১০: ১৮
ছয় ছয় ছয় অস্ট্রেলিয়ার জয়

ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে শাহিন আফ্রিদিকে ৯৬ মিটার দূরে যখন আছড়ে ফেললেন ম্যাথু ওয়েড, দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম তখন ডুবে গেছে আশ্চর্য নীরবতায়। গ্যালারিপূর্ণ পাকিস্তানি সমর্থকদের সঙ্গে প্রেসবক্সে পাকিস্তানি সাংবাদিকদেরও উত্তেজনা অনেকটাই মিইয়ে এসেছে।

হতাশা আর অবিশ্বাসের চোখে পাকিস্তানি সমর্থকেরা শাপ-শাপান্ত করছে হাসান আলীকে; যিনি শাহিনের করা ১৮.৩ ওভারে ডিপ মিডউইকেটে ওয়েডের ক্যাচ ছেড়েছেন। ম্যাচে দুই দলের ফিল্ডাররাই একাধিক ক্যাচ ফসকেছেন। কিন্তু এই ক্যাচটা ছিল সবচেয়ে মূল্যবান। হাসান ক্যাচ হাতছাড়া করাতেই ওয়েড যেন সংকেত পেয়ে গেলেন—ম্যাচটা এবার নিজেদের করে নাও! অস্ট্রেলিয়ান উইকেটকিপার ব্যাটার গত পরশু নিউজিল্যান্ড ম্যাচেই দেখেছেন শেষ ওভারের জন্য কাজ ফেলে রাখতে নেই। ১২ বলে ২২ রানের সমীকরণ ওয়েড মিলিয়ে দিয়েছেন ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে টানা তিন ছক্কা মেরে। দুবাইয়ে গতকাল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত হতেই পাকিস্তান শিবিরে যখন মৌনতা, অস্ট্রেলিয়া দলে তখন উচ্ছ্বাসের ঢেউ—যে ঢেউয়ের রং শুধুই হলুদ। দ্বিতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালে ওঠায় রোববার শিরোপা লড়াইটা হয়ে গেলে আন্ততাসমান লড়াই!

টস জিতে দুবাইয়ে গতকাল অস্ট্রেলিয়া দল যে ফিল্ডিং নেবে, অনুমিতই ছিল। শিশির ফ্যাক্টর তো ছিল। রেকর্ডও অস্ট্রেলীয়কে উদ্বুদ্ধ করেছে ফিল্ডিং নিতে, দুবাইয়ে সর্বশেষ ১২ টি-টোয়েন্টির ১১টিই জিতেছে পরে ব্যাটিং করা দল। কিন্তু পাকিস্তানের ব্যাটাররা যেন এই রেকর্ডকে বুড়ো

আঙুল দেখানোর চ্যালেঞ্জটাই নিয়েছিলেন। সেমিফাইনালের আগে ফ্লুতে আক্রান্ত মোহাম্মদ রিজওয়ান অনিশ্চয়তা কাটিয়ে খেললেন ৬৭ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। বাবর আজমের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে এনে দিলেন ৭১ রানের অসাধারণ এক শুরু।

প্রথম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রিজওয়ানের এক পঞ্জিকাবর্ষে হাজার রান, বাবরের এই সংস্করণে দ্রুততম ২৫০০ রান—এসব মাইলফলকের রাতে আলো ছড়ালেন ফখর জামানও। তিনে নেমে তাঁর ৩২ বলে অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংসটা শুধু মুগ্ধতাই ছড়াল।

অস্ট্রেলিয়াকে ১৭৭ রানের লক্ষ্য দিয়ে পাকিস্তান যখন এক যুগ পর ফের ফাইনালে ওঠার স্বপ্নে বিভোর, তখন অস্ট্রেলিয়ার ভাবনায় বোধ হয় ছিল সেন্ট লুসিয়া। ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। অস্ট্রেলিয়াকে ১৯২ রানের কঠিন লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। কঠিন চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে সে ম্যাচে ১২.৩ ওভারে ১০৫ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। গতকালও দৃশ্য অনেকটা তেমনই। পাকিস্তানি বোলারদের বিশেষ করে লেগ স্পিনার শাদাব খানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে (৪/২৬) ১২.২ ওভারে ৯৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সামনে কঠিন হয়ে যায় জয়ের পথ।

২০১০ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার লোয়ার মিডল অর্ডারে ক্যামেরন হোয়াইট-মাইক হাসি যে কাজটা করেছিলেন, গতকাল সেটিই করলেন ওয়েড আর মার্কাস স্টয়নিস। দুজন যখন উইকেটে আসেন, অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৪৬ বল ৮১ রান। দলটা অস্ট্রেলিয়া—তীব্র স্নায়ুচাপে দুর্দান্ত খেলার ইতিহাস যাদের সমৃদ্ধ। সে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে স্টয়নিস খেললেন ৩১ বলে অপরাজিত ৪০ আর ওয়েড ৪১ রানের ঝড় তুললেন ১৭ বলে।

রোমাঞ্চকর দুটি সেমিফাইনাল পেরিয়ে ফাইনালে ওঠা অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কার হাতে উঠছে শিরোপা, জানা যাবে পরশু। তবে এটা তো নিশ্চিত—নতুন এক চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

সিঙ্গাপুরে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদন ফি মাত্র ৭ হাজার টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত