Ajker Patrika

কালের সাক্ষী চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদ

সাইফুল ইসলাম আকাশ, বোরহানউদ্দিন (ভোলা)
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১২: ০৩
কালের সাক্ষী চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদ

ভোলা শহর থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দক্ষিণে বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদ দেউলা-সাচরা ইউনিয়ন। ওই এলাকার প্রবেশপথে সড়কের পাশেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেড় শ বছরের পুরোনো দৃষ্টিনন্দন চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদ। মসজিদটি নির্মাণ করেন দক্ষিণ বাংলার তৎকালীন জমিদার বোরহানউদ্দিন চৌধুরী। ঐতিহ্যবাহী চৌধুরীবাড়ির নামেই এ মসজিদের নামকরণ করা হয়।

১২০ বিশ বছরের বেশি সময় ধরে ওই এলাকায় কোনো মসজিদ না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা নামাজ পড়তে এই মসজিদেই আসতেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৮৬০ সালে তৎকালীন জমিদার বোরহানউদ্দিন চৌধুরী মসজিদটি নির্মাণ করেন। ১ একর ৪০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি নির্মিত। তিনি ভারতের দিল্লি থেকে শ্বেতপাথর এবং রাজমিস্ত্রিদের এনে মসজিদের অবকাঠামো নির্মাণ করেন। মসজিদে ব্যবহৃত লোহার বিমগুলো আনা হয়েছিল সুদূর বেলজিয়াম থেকে। মসজিদের ভেতর ও বাইরে রয়েছে অপূর্ব কারুকাজ। এই মসজিদে ব্যবহৃত প্রদীপগুলোতে একসময় সরিষার তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মসজিদটির পশ্চিমাংশে রয়েছে তালগাছবেষ্টিত শানবাঁধানো পুকুর।

এককালে মসজিদের পূর্বপাশে ছিল তিনটি কাচারি। ওই কাঁচারিগুলোতে শত শত মুসাফির বিশ্রাম নিতেন। একসময় মসজিদের নামে থাকা ২৬০ বিঘা জমি থেকে আয়ের অর্থ দিয়ে মুসাফিরদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হতো। কিন্তু এখন আর সেসব ঐতিহ্য নেই। কালের আবর্তে তেঁতুলিয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ২০০ বিঘা জমি। বর্তমানে মাত্র ৫০ বিঘা জমির আয়ে মসজিদের সার্বিক কার্যক্রম চলছে কোনোমতে। ২০০৮ সালে প্রথম মসজিদটি সংস্কার করা হয়।

মসজিদটির তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব আলম চৌধুরী জানান, চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদ বোরহানউদ্দিন চৌধুরী ১৮৬০ সালে নির্মাণ করেন। এ জন্য ১৭২ বিঘা জমি দান করেন এবং ওয়াক্ফ করেন। তিনি মোতোয়ালি থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাঁর ছেলে আব্দুল কাদের চৌধুরী মোতোয়ালি নিযুক্ত হন।’

তিনি জানান, মসজিদের নামে থাকা অধিকাংশ জমি সরকারের খাস খতিয়ানে চলে গেছে। কিছু জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে ভোগদখল করছেন। প্রশাসনের কাছে দাবি, খাসজমি এবং অন্যায়ভাবে দখল করা জমি পুনরুদ্ধার করে দেওয়া হোক।’

স্থানীয় বাসিন্দা মিথেল চৌধুরী বলেন, ‘দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদের ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়, সে বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বোরহানউদ্দিন চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদটি অপরূপ সৌন্দর্যের নিদর্শন ও মনোমুগ্ধকর। মসজিদের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত