হাসান মামুন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কখন কোথায় আঘাত হানে, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে লিখতে বসে পড়েছি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে। লোডশেডিং পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছিল তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি খারাপ। বিদ্যুৎঘাটতি হলে গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকদের বঞ্চিত করে শহরাঞ্চলে তথা ‘গ্রোথ সেন্টারগুলোয়’ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার একটা চেষ্টা বরাবরই নিয়ে থাকে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এর পক্ষে যুক্তিও আছে। উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য যেখানে কেন্দ্রীভূত, সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা গেলে অর্থনীতিতে এর রিটার্ন পাওয়া যায় বেশি। কৃষি ও গ্রামাঞ্চলের অকৃষি খাত সচল রাখাটাও খাদ্যনিরাপত্তাসহ আয়বৈষম্য কমিয়ে রাখার জন্য জরুরি। সেচের বেলায় বিদ্যুতের বিকল্প হলো ডিজেল। এর দাম তো অনেক বাড়ানো হয়েছে। সব রকম সারের দামও বাড়ানো হয়েছে দুই দফায়। তাতে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যয় বাড়বে।
যা-ই হোক, এই মুহূর্তে দেশজুড়ে চলছে এসএসসি পরীক্ষা। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং যেভাবে বাড়ছিল, তাতে এই পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিশ্চয়ই ব্যাহত হয়েছে। মানুষ বিদ্যুতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে মুশকিল। চট করে কোনো বিকল্প ব্যবস্থায় চলে যাওয়া তার পক্ষে তখন কঠিন হয়ে পড়ে। মাঝে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতির বড় উন্নতি হয়েছিল। শহরাঞ্চলের মানুষ লোডশেডিংয়ের কথা ভুলেই গিয়েছিল প্রায়। সেদিনগুলো কিছুটা হলেও ফিরে আসতে শুরু করেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সরবরাহ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায়।
এই মুহূর্তে যে লোডশেডিংয়ে বসে নিবন্ধটি তৈরি করছি, তার কারণ অবশ্য ভিন্ন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাড়তি এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে যে দুটি এলএনজি টার্মিনাল আমদানি করা এই গ্যাস প্রক্রিয়াকরণের কাজটি করত, সেগুলোকে গ্যাসলাইন থেকে বিযুক্ত করে নিরাপদ সমুদ্র অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রক্রিয়াকরণের জন্য এলএনজি হাতে থাকলেও তা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে বাসাবাড়িসহ জরুরি ক্ষেত্রে কমে গেছে গ্যাসের সরবরাহ ও চাপ।
বেশ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ বা সীমিত করতে হয়েছে। এখন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, তার বড় একটা অংশ আমরা পাই গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে। দেশ থেকে আহরিত গ্যাসই এ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় বেশি। তবে এতে বড় ঘাটতি আছে বলে এলএনজি তথা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করে ব্যবহার করা হচ্ছিল। তাতেও ঘাটতি রয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এলএনজি টার্মিনালগুলো ব্যবহৃত হতে না পারায় স্বভাবতই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহেও পড়েছে এর প্রভাব। শীত শেষে লোডশেডিং পরিস্থিতির যে ক্রমাবনতি হচ্ছিল, তাতে শহরাঞ্চলের মানুষের গায়ে আঁচ না লাগলেও এ কয়েক দিনে তা লাগতে শুরু করেছে। এখন তাঁরাও অনুভব করতে পারছেন, মাঝে এ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও একটা ভিন্ন প্রকৃতির সংকট এখানে ক্রমে ঘনীভূত হয়েছে।
কক্সবাজার অঞ্চলে আঘাত হানুক বা না হানুক, ঘূর্ণিঝড় ও এর প্রভাব তো দু-এক দিনের মধ্যে কেটে যাবে। এলএনজি টার্মিনাল দুটি আবার এনে জায়গামতো যুক্ত করা গেলে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতিরও কিছুটা উন্নতি ঘটানো যাবে। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক বাজারে, বিশেষ করে ‘স্পট মার্কেটে’ এলএনজির দাম কিন্তু অনেক কমে এসেছে এবং এটা এখন নিম্নমুখী বলা যায়। তাতে আমাদের মতো যেসব দেশ এই জ্বালানিপণ্যের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল, তাদের বিশেষ সুবিধা হওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে আসার প্রবণতাও রয়েছে। তাতে যেকোনো পণ্য আমদানিতে জাহাজভাড়াও কম পড়ার কথা। কিন্তু বিদেশি মুদ্রা তথা ডলারসংকট কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বলে আমরা স্পট মার্কেট থেকে কম দামে এলএনজি এনে ব্যবহার করতেও হিমশিম খাচ্ছি। চীন, জাপানের মতো বড় অর্থনীতির দেশ এই বাজারের প্রধান ক্রেতা।
তারা অনেক এলএনজি কিনে মজুত করেও রাখতে পারে। আর আমরা এর সরবরাহও স্বাভাবিক রাখতে পারছি না প্রধানত ডলারসংকটে। গ্যাসের ক্ষেত্রে এলএনজিনির্ভরতা নিয়ে শুরু থেকেই অবশ্য বিতর্ক ছিল। নিজ দেশে সম্ভাবনাময় গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান ও তা থেকে প্রয়োজনীয় গ্যাস উত্তোলনে মনোযোগী না হয়ে এলএনজি আমদানিতে চলে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করা হচ্ছিল। মাঝে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে অন্যান্য জরুরি পণ্যের সঙ্গে এলএনজির বাজারও অস্থির হয়ে ওঠায় এই সমালোচনা আরও বাড়ে। সরকারকে একপর্যায়ে এলএনজি আমদানি হ্রাস, এমনকি বন্ধও করে দিতে হয়। তাতে বিদ্যুৎ খাত, শিল্পকারখানা ও বাসাবাড়িতে ভারসাম্য রেখে গ্যাস সরবরাহের কাজটি হয় বিঘ্নিত। সরকারকে স্বভাবতই অগ্রাধিকার বিবেচনা করে পথ চলতে হয়।
এর মধ্যে পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে চলে আসায় পরিস্থিতির অবনতি অবশ্য রোধ করা গিয়েছিল। নানান প্রশ্নের মুখেও চীন ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সরকার এ দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যায় শুধু মোট উৎপাদন বাড়াতে নয়; বরং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্প খাত বিকাশে সহায়তার জন্য। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ওই অঞ্চলে শিল্প ও ব্যবসা বিকাশের সুযোগ সত্যিই বেড়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো, অধিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় শুরু থেকেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। এর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি বা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না, সেটাও ডলারসংকটে।
একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আপাতত বন্ধই রাখতে হচ্ছে; অন্যটিও ভুগছে কয়লাসংকটে। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দামও কিন্তু কমে এসেছে অনেক। অবস্থাটি এলএনজির সঙ্গেই তুল্য এবং এ ক্ষেত্রেও আমরা প্রয়োজনীয় কয়লা সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছি আমদানির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় বা এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি উপস্থিত হওয়ায়। এলএনজিসংকটে বিশেষজ্ঞরা আশা করেছিলেন, নতুন দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহার নিয়ে পরিবেশবাদীদের আপত্তি থাকলেও এগুলো সচল রাখা গেলে গ্রীষ্মে যখন চাহিদা তুঙ্গে থাকে, তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ জুগিয়ে পরিস্থিতি সামলানো যাবে। সেই আশার গুড়েও বালি পড়েছে আমদানি ক্ষমতা কমে যাওয়ায়। আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একাধিক জরুরি উপকরণের দাম কমে এলেও তার সুফল নিতে আমরা পারছি না, এটা দুর্ভাগ্যজনক।
বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোয় বিশেষ মনোযোগ দিয়েছিল। এটা ছিল তাদের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকারও। ২০৪১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনাও ঘোষণা করা হয়। তারই আওতায় বাড়ানো হয়েছিল উৎপাদন ক্ষমতা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতা বাড়ানো গেলেও তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিপুল উৎপাদন ক্ষমতা নাকি অব্যবহৃত! কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপকরণ আহরণ ও আমদানিতে সংকট বেড়ে যাওয়া। দেশের ভেতর থেকে গ্যাসের সরবরাহ কম এবং সেটা ক্রমে আরও কমে যাওয়া। এলএনজি আমদানিতেও দেখা দিল সংকট। প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানিতেও আমরা আর সক্ষম নই দেখা যাচ্ছে। সবকিছুর জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার প্রভাবকে দায়ী করার একটা প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এর অভিঘাত কমে এলেও আমরা তার সুফল নিতে অক্ষম। কারণ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি ভালো নয়। আমরা রিজার্ভ যেভাবে হিসাব করতাম, সেটাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। রিজার্ভ বাড়িয়ে দেখিয়ে তো লাভ নেই, যদি জরুরি মুহূর্তে তা ব্যবহার করা না যায় জাতীয় স্বার্থে। আমাদের রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ দুটোই দুর্বল এবং গেল ঈদের সময়েও রেমিট্যান্স আশানুরূপ হয়নি।
এ অবস্থায় আবার অব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার জন্য বহুল আলোচিত ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ পরিশোধ করতে হচ্ছে ডলার রেটে। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকলেও এ ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। উঠেপড়ে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর এমন কার্যক্রমও তাই পড়ে গেছে তীব্র সমালোচনার মুখে। সরকার বর্ধিত এ ক্ষমতা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারলে কিন্তু এতটা সমালোচনা হতো না।
কিছু বিদ্যুৎ তো আমদানিও করা হচ্ছে। সে-সংক্রান্ত চুক্তি নিয়েও রয়েছে সমালোচনা। সমালোচনা আছে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় এবং তা মেটাতে গিয়ে এর দাম অব্যাহতভাবে বাড়ানো নিয়ে। এর অভিঘাত পড়ছে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত তথা জনজীবনেও। শেষ পর্যন্ত এতে আরও বেড়ে যাচ্ছে মূল্যস্ফীতি। এটা কমিয়ে
আনা মোটেও সহজ হচ্ছে না যেসব কারণে, তার মধ্যে ভূমিকা রাখছে অব্যাহতভাবে আলোচনায় থাকা বিদ্যুৎ খাত। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট পরিস্থিতি সেটা শহরাঞ্চলের মানুষকেও গভীরভাবে মনে করিয়ে দিল বলে মনে হচ্ছে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কখন কোথায় আঘাত হানে, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে লিখতে বসে পড়েছি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে। লোডশেডিং পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছিল তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি খারাপ। বিদ্যুৎঘাটতি হলে গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকদের বঞ্চিত করে শহরাঞ্চলে তথা ‘গ্রোথ সেন্টারগুলোয়’ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার একটা চেষ্টা বরাবরই নিয়ে থাকে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এর পক্ষে যুক্তিও আছে। উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য যেখানে কেন্দ্রীভূত, সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা গেলে অর্থনীতিতে এর রিটার্ন পাওয়া যায় বেশি। কৃষি ও গ্রামাঞ্চলের অকৃষি খাত সচল রাখাটাও খাদ্যনিরাপত্তাসহ আয়বৈষম্য কমিয়ে রাখার জন্য জরুরি। সেচের বেলায় বিদ্যুতের বিকল্প হলো ডিজেল। এর দাম তো অনেক বাড়ানো হয়েছে। সব রকম সারের দামও বাড়ানো হয়েছে দুই দফায়। তাতে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যয় বাড়বে।
যা-ই হোক, এই মুহূর্তে দেশজুড়ে চলছে এসএসসি পরীক্ষা। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং যেভাবে বাড়ছিল, তাতে এই পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিশ্চয়ই ব্যাহত হয়েছে। মানুষ বিদ্যুতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে মুশকিল। চট করে কোনো বিকল্প ব্যবস্থায় চলে যাওয়া তার পক্ষে তখন কঠিন হয়ে পড়ে। মাঝে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতির বড় উন্নতি হয়েছিল। শহরাঞ্চলের মানুষ লোডশেডিংয়ের কথা ভুলেই গিয়েছিল প্রায়। সেদিনগুলো কিছুটা হলেও ফিরে আসতে শুরু করেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সরবরাহ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায়।
এই মুহূর্তে যে লোডশেডিংয়ে বসে নিবন্ধটি তৈরি করছি, তার কারণ অবশ্য ভিন্ন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাড়তি এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে যে দুটি এলএনজি টার্মিনাল আমদানি করা এই গ্যাস প্রক্রিয়াকরণের কাজটি করত, সেগুলোকে গ্যাসলাইন থেকে বিযুক্ত করে নিরাপদ সমুদ্র অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রক্রিয়াকরণের জন্য এলএনজি হাতে থাকলেও তা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে বাসাবাড়িসহ জরুরি ক্ষেত্রে কমে গেছে গ্যাসের সরবরাহ ও চাপ।
বেশ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ বা সীমিত করতে হয়েছে। এখন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, তার বড় একটা অংশ আমরা পাই গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে। দেশ থেকে আহরিত গ্যাসই এ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় বেশি। তবে এতে বড় ঘাটতি আছে বলে এলএনজি তথা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করে ব্যবহার করা হচ্ছিল। তাতেও ঘাটতি রয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এলএনজি টার্মিনালগুলো ব্যবহৃত হতে না পারায় স্বভাবতই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহেও পড়েছে এর প্রভাব। শীত শেষে লোডশেডিং পরিস্থিতির যে ক্রমাবনতি হচ্ছিল, তাতে শহরাঞ্চলের মানুষের গায়ে আঁচ না লাগলেও এ কয়েক দিনে তা লাগতে শুরু করেছে। এখন তাঁরাও অনুভব করতে পারছেন, মাঝে এ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও একটা ভিন্ন প্রকৃতির সংকট এখানে ক্রমে ঘনীভূত হয়েছে।
কক্সবাজার অঞ্চলে আঘাত হানুক বা না হানুক, ঘূর্ণিঝড় ও এর প্রভাব তো দু-এক দিনের মধ্যে কেটে যাবে। এলএনজি টার্মিনাল দুটি আবার এনে জায়গামতো যুক্ত করা গেলে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতিরও কিছুটা উন্নতি ঘটানো যাবে। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক বাজারে, বিশেষ করে ‘স্পট মার্কেটে’ এলএনজির দাম কিন্তু অনেক কমে এসেছে এবং এটা এখন নিম্নমুখী বলা যায়। তাতে আমাদের মতো যেসব দেশ এই জ্বালানিপণ্যের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল, তাদের বিশেষ সুবিধা হওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে আসার প্রবণতাও রয়েছে। তাতে যেকোনো পণ্য আমদানিতে জাহাজভাড়াও কম পড়ার কথা। কিন্তু বিদেশি মুদ্রা তথা ডলারসংকট কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বলে আমরা স্পট মার্কেট থেকে কম দামে এলএনজি এনে ব্যবহার করতেও হিমশিম খাচ্ছি। চীন, জাপানের মতো বড় অর্থনীতির দেশ এই বাজারের প্রধান ক্রেতা।
তারা অনেক এলএনজি কিনে মজুত করেও রাখতে পারে। আর আমরা এর সরবরাহও স্বাভাবিক রাখতে পারছি না প্রধানত ডলারসংকটে। গ্যাসের ক্ষেত্রে এলএনজিনির্ভরতা নিয়ে শুরু থেকেই অবশ্য বিতর্ক ছিল। নিজ দেশে সম্ভাবনাময় গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান ও তা থেকে প্রয়োজনীয় গ্যাস উত্তোলনে মনোযোগী না হয়ে এলএনজি আমদানিতে চলে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করা হচ্ছিল। মাঝে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে অন্যান্য জরুরি পণ্যের সঙ্গে এলএনজির বাজারও অস্থির হয়ে ওঠায় এই সমালোচনা আরও বাড়ে। সরকারকে একপর্যায়ে এলএনজি আমদানি হ্রাস, এমনকি বন্ধও করে দিতে হয়। তাতে বিদ্যুৎ খাত, শিল্পকারখানা ও বাসাবাড়িতে ভারসাম্য রেখে গ্যাস সরবরাহের কাজটি হয় বিঘ্নিত। সরকারকে স্বভাবতই অগ্রাধিকার বিবেচনা করে পথ চলতে হয়।
এর মধ্যে পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে চলে আসায় পরিস্থিতির অবনতি অবশ্য রোধ করা গিয়েছিল। নানান প্রশ্নের মুখেও চীন ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সরকার এ দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যায় শুধু মোট উৎপাদন বাড়াতে নয়; বরং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্প খাত বিকাশে সহায়তার জন্য। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ওই অঞ্চলে শিল্প ও ব্যবসা বিকাশের সুযোগ সত্যিই বেড়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো, অধিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় শুরু থেকেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। এর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি বা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না, সেটাও ডলারসংকটে।
একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আপাতত বন্ধই রাখতে হচ্ছে; অন্যটিও ভুগছে কয়লাসংকটে। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দামও কিন্তু কমে এসেছে অনেক। অবস্থাটি এলএনজির সঙ্গেই তুল্য এবং এ ক্ষেত্রেও আমরা প্রয়োজনীয় কয়লা সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছি আমদানির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় বা এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি উপস্থিত হওয়ায়। এলএনজিসংকটে বিশেষজ্ঞরা আশা করেছিলেন, নতুন দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহার নিয়ে পরিবেশবাদীদের আপত্তি থাকলেও এগুলো সচল রাখা গেলে গ্রীষ্মে যখন চাহিদা তুঙ্গে থাকে, তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ জুগিয়ে পরিস্থিতি সামলানো যাবে। সেই আশার গুড়েও বালি পড়েছে আমদানি ক্ষমতা কমে যাওয়ায়। আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একাধিক জরুরি উপকরণের দাম কমে এলেও তার সুফল নিতে আমরা পারছি না, এটা দুর্ভাগ্যজনক।
বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোয় বিশেষ মনোযোগ দিয়েছিল। এটা ছিল তাদের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকারও। ২০৪১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনাও ঘোষণা করা হয়। তারই আওতায় বাড়ানো হয়েছিল উৎপাদন ক্ষমতা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতা বাড়ানো গেলেও তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিপুল উৎপাদন ক্ষমতা নাকি অব্যবহৃত! কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপকরণ আহরণ ও আমদানিতে সংকট বেড়ে যাওয়া। দেশের ভেতর থেকে গ্যাসের সরবরাহ কম এবং সেটা ক্রমে আরও কমে যাওয়া। এলএনজি আমদানিতেও দেখা দিল সংকট। প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানিতেও আমরা আর সক্ষম নই দেখা যাচ্ছে। সবকিছুর জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার প্রভাবকে দায়ী করার একটা প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এর অভিঘাত কমে এলেও আমরা তার সুফল নিতে অক্ষম। কারণ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি ভালো নয়। আমরা রিজার্ভ যেভাবে হিসাব করতাম, সেটাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। রিজার্ভ বাড়িয়ে দেখিয়ে তো লাভ নেই, যদি জরুরি মুহূর্তে তা ব্যবহার করা না যায় জাতীয় স্বার্থে। আমাদের রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ দুটোই দুর্বল এবং গেল ঈদের সময়েও রেমিট্যান্স আশানুরূপ হয়নি।
এ অবস্থায় আবার অব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার জন্য বহুল আলোচিত ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ পরিশোধ করতে হচ্ছে ডলার রেটে। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকলেও এ ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। উঠেপড়ে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর এমন কার্যক্রমও তাই পড়ে গেছে তীব্র সমালোচনার মুখে। সরকার বর্ধিত এ ক্ষমতা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারলে কিন্তু এতটা সমালোচনা হতো না।
কিছু বিদ্যুৎ তো আমদানিও করা হচ্ছে। সে-সংক্রান্ত চুক্তি নিয়েও রয়েছে সমালোচনা। সমালোচনা আছে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় এবং তা মেটাতে গিয়ে এর দাম অব্যাহতভাবে বাড়ানো নিয়ে। এর অভিঘাত পড়ছে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত তথা জনজীবনেও। শেষ পর্যন্ত এতে আরও বেড়ে যাচ্ছে মূল্যস্ফীতি। এটা কমিয়ে
আনা মোটেও সহজ হচ্ছে না যেসব কারণে, তার মধ্যে ভূমিকা রাখছে অব্যাহতভাবে আলোচনায় থাকা বিদ্যুৎ খাত। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট পরিস্থিতি সেটা শহরাঞ্চলের মানুষকেও গভীরভাবে মনে করিয়ে দিল বলে মনে হচ্ছে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কখন কোথায় আঘাত হানে, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে লিখতে বসে পড়েছি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে। লোডশেডিং পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছিল তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি খারাপ।
১৫ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কখন কোথায় আঘাত হানে, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে লিখতে বসে পড়েছি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে। লোডশেডিং পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছিল তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি খারাপ।
১৫ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কখন কোথায় আঘাত হানে, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে লিখতে বসে পড়েছি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে। লোডশেডিং পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছিল তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি খারাপ।
১৫ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ কখন কোথায় আঘাত হানে, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে লিখতে বসে পড়েছি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে। লোডশেডিং পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছিল তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি খারাপ।
১৫ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫