Ajker Patrika

শিক্ষকও ভেজাল

সম্পাদকীয়
শিক্ষকও ভেজাল

যে শিক্ষক পড়ালেখা শেখাবেন, সেই শিক্ষকেরাই যদি অযোগ্য হন এবং অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে থাকেন, তাহলে তাঁরা শিক্ষার্থীদের কী শেখাবেন? বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ-প্রক্রিয়া যথাযথভাবে না ঘটলে অযোগ্য ব্যক্তিরাই যে নিয়োগ পান, তার অসংখ্য প্রমাণ আমাদের দেশে আছে।

জাল সনদ দিয়ে কম্পিউটার বিষয়ের শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান ও নৈশপ্রহরী নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের ত্রিমোহনী বিডি ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ঘটেছে। আর আশ্চর্যের বিষয় হলো, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা দেড় যুগ ধরে বহাল তবিয়তে আছেন।

আমাদের দেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ঘটনা টাকাপয়সা লেনদেনের মাধ্যমে ঘটে থাকে। কোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ধরনের যোগ্যতা থাকা দরকার, সেই যোগ্যতা না থাকলেও হয়। কারণ, যাঁর যে যোগ্যতা আছে, সেটা না থাকলেও কোনো না কোনো প্রক্রিয়ায় তাঁরা তাঁদের পদটা দখল করে নেন। এটা যে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে, তা কি আর নতুন করে বলার দরকার আছে। এসব অনাচার থেকে কি আমাদের মুক্তি নেই?

আমাদের কথা হলো, যখন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তখন যাঁরা নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন, তাঁরা কি নিয়োগপ্রাপ্তদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই-বাছাই করে দেখেননি? যদি দেখে থাকেন, তাহলে তাঁরা কীভাবে নিয়োগ পেলেন? এ জায়গাটায় আসলে খতিয়ে দেখতে হবে, কারা নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন। তাঁদের কোনো গাফিলতি এবং অন্য কোনো অনিয়ম ছিল কি না? সেই সঙ্গে খতিয়ে দেখতে হবে কোনো পেশিশক্তি এবং ক্ষমতার চাপ ছিল কি না। উপরিউক্ত ব্যাপারগুলো একটু তদন্ত করলেই প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটন হওয়ার সুযোগ আছে।

আমাদের দেশে, বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থ ও পেশিশক্তির বলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অসাধ্যসাধন করা কোনো ঘটনাই নয়। আর যদি কেউ এভাবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে সরানো যে কঠিন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ওই স্কুলে জাল সনদ দিয়ে কম্পিউটার বিষয়ের যে ব্যক্তিটি শিক্ষকতা করছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের কিছু শেখানোর যোগ্যতা রাখেন কি? অবশ্যই না। এ কারণে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন বুনছি, সেই স্বপ্ন তো এ রকম শিক্ষক দিয়ে সম্ভব নয়।

শৃঙ্খলা ও সততার যথাযথ প্রয়োগ ছাড়া এসব থেকে বের হয়ে আসা অসম্ভব। এসব শুধু এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই বিষয় না। এ জন্য যথাযথ তদন্ত করা দরকার। 
তাই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবৈধ ও অসততার মাধ্যমে নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে, সেখানে সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে অপরাধীদের আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে সৎ, মেধাবী ও যোগ্যদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করা যাবে না। তা ছাড়া নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে জেলার শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও নির্মোহভাবে নজরদারি থাকতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত