মামুনুর রশীদ

সরকারের বাজেট ঘোষণা হবে। নানানভাবেই বাজেটে কোন পণ্যের দাম কত টাকা বাড়বে—এ ব্যাপারটি আগেই ফাঁস হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী পণ্যগুলো গুদামজাত হয়ে যায়, উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মজুত থাকে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আরও একটি সুযোগ তৈরি হয়।
একদা বাজেট ছিল খুবই ক্ষুদ্র এবং অর্থনীতিটাও ছিল ছোট। এখন অর্থের বাজার বড় হয়েছে, বাজেটও স্ফীত হয়েছে। সেই সঙ্গে টাকার মূল্যমান কমে গিয়ে একটা স্ফীত নয়া মুদ্রাস্ফীতি গড়ে উঠেছে। এর সুবিধাভোগী হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীরা, যাঁদের বেতন এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ঘুষের টাকাও দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর সুবিধা হয়েছে ব্যবসায়ীদের, পরিবহন মালিকদের, যাঁরা দাম বাড়াতে একটুও দ্বিধাবোধ করেন না। কতজন এই মূল্যবৃদ্ধিতে জীবন হারাল, হাহাকারে পড়ে গেল, এ নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই আর সরকার তো ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও দুর্নীতিবাজ কমিশন এজেন্টদের ওপর নির্ভর করে। এ রকম অবস্থায় মুনাফা, কমিশনের টাকা, ঘুষের টাকা সব চলে যাচ্ছে বিদেশের ব্যাংকে। বিত্তবানদের টাকায় বিদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফুলেফেঁপে উঠেছে।
এ কথা স্বীকার করছি, দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সেই উন্নয়নের খরচও হচ্ছে বিশাল। ধীরগতিতে চলা এই অবকাঠামো উন্নয়নে বারবার প্রাক্কলিত মূল্য বেড়েই চলেছে। ষাটের দশকে দেখেছি সৎ সরকারি চাকরিজীবীরা পে-কমিশন দিলেই আতঙ্কিত হয়ে যেতেন। কারণ একেবারেই অকারণে জিনিসপাতির দাম বেড়ে যেত, টাকার মূল্য কমে যেত। বাজেট এলেও তাই। এমনি করেই দশকের পর দশক চলছে, কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি কমানো বা মানুষের ব্যয়ের বোঝা কমানোর কোনো প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
বাজেট কিছু অর্ধশিক্ষিত অর্থনীতি জানা আমলাদের হাতে। কারণ রাজনীতিবিদেরা বাজেট বোঝার চেষ্টা করেন না এবং খুব মনোযোগ দিয়ে তো নয়ই, একেবারে সামান্য মনোযোগ দিয়েও বাজেটটা বোঝার চেষ্টা করেন না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে বাজেটেরই গুণগান গাইতে থাকেন। সংসদের বাইরে থাকা রাজনীতিবিদেরা বিরোধিতার জন্যই কিছু বিরোধিতা করেন, কিন্তু জনগণ এর মধ্যে সম্পৃক্ত হতে পারে না।
এযাবৎ পৃথিবীতে বহু অর্থনীতিবিদ এসেছেন, অর্থনীতিতে প্রচুর অঙ্কের কারসাজি ঢুকেছে, কিন্তু অর্থনীতিকে রাজনৈতিক এবং মানবিক করার প্রচেষ্টা তেমন একটা দেখা যায়নি। একমাত্র সহজ বোধগম্য অর্থনীতি হচ্ছে কার্ল মার্ক্সের ডাস ক্যাপিটাল। যেখানে পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে ব্যাখ্যা করে একটা সহজ পথের সন্ধান দেওয়া হয়েছে। তাতে রাশিয়ার মতো একটি বিশাল দেশ ৭০ বছর ধরে একটা নতুন অর্থনীতির জন্ম দিয়েছিল। এই অর্থনীতি প্রয়োগের ফলে দেশে ব্যাপক উন্নয়নসাধন করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা হয়ে পৃথিবীর দেশে দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং অধনবাদী বিকাশের ব্যবস্থা হয়েছে।
চীন দেশেও বিপ্লবের পর একই ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু পুঁজিবাদের তীব্র আক্রমণে এবং কিছু মানুষের লোভ-লালসা আকাশচুম্বী হওয়ায় তারা ফিরে গেছে আবার পুরোনো ব্যবস্থায়। এখানে ধনবিজ্ঞানীদের একটা বড় ভূমিকা আছে। এই বিজ্ঞানীরা শুধু অর্থনীতির কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকেননি। তাঁরা বিপণনকে একটা শিল্পে পরিণত করেছেন। বিপণনের নতুন নতুন কলাকৌশলে এবং গণমাধ্যমের বিকাশকে এমনভাবে কাজে লাগিয়েছেন যে মানুষ পণ্য এবং ভোগে বিপুলভাবে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আজকাল সৃজনশীল শিল্পের ক্ষেত্রেও এই বিপণন প্রভূতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই অর্থনীতি এখন আর অর্থনীতির জায়গায় নেই। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ধনবিজ্ঞান। কীভাবে ধনী হওয়া যায়, এ বিজ্ঞানটি এখন মুখ্য।
সামগ্রিক বণ্টনব্যবস্থা এমনভাবে ভেঙে পড়েছে যে অর্থনীতি তাকে সামাল দিতে পারছে না। রাষ্ট্র জনগণের ওপর বিপুল ট্যাক্স বসিয়ে দিলেও ধনী লোকেরা ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার নানা কৌশল আবিষ্কার করেছেন। একমাত্র চাকরিজীবী এবং মধ্যবিত্তরা, যাঁদের রাজনৈতিক প্রভাব নেই, তাঁরাই এই ট্যাক্সের বোঝা বহন করে চলেছেন। ধনবিজ্ঞানীরা অর্থ উপার্জনের নানা পথ বের করে ফেলেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা কোনো উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তাঁরা শুধু তথ্য বিক্রি করে বিপুল পরিমাণে অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদেরা রাষ্ট্রের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কালক্রমে সেই জায়গাগুলো চলে গেছে সবজান্তা আমলাদের হাতে। এই আমলারা শুধু বোঝেন ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট। একপর্যায়ে তাঁরা ভিক্ষা করে দেশের অর্থনীতি চালাতেন। এই আমলাদের তখন ভিক্ষুক বলে আখ্যায়িত করা হতো। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ এবং অন্য সব দাতা সংস্থার কাছে নতজানু হয়ে দেশ চালাতেন এবং সেই থেকে উন্নত বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মিসকিন বলে অভিহিত হতো। কালক্রমে সেই অপবাদ কিছুটা ঘুচেছে। ধনবিজ্ঞানীদের পরামর্শে অদূরদর্শী আমলাদের ব্যবস্থাপনায় দেশের বণ্টনব্যবস্থায় একটা নতুন অভিঘাত এসেছে। সেই অভিঘাতে মধ্যবিত্তশ্রেণি প্রায় ধ্বংসের পথে, কিন্তু উচ্চবিত্তের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। যে মধ্যবিত্তশ্রেণি শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করত, সেই শ্রেণির ভূমিকা পালনে আর কোনো অবকাশ থাকেনি।
শিক্ষার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে মাদ্রাসা শিক্ষা দারিদ্র্য ও বেকারত্বের পথ খুলে দিয়েছে আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি স্কুল একধরনের অভিবাসনমুখী সম্প্রদায় গড়ে তুলেছে। এই অভিবাসনমুখী সম্প্রদায় আসলে দেশের অর্থ পাচারের মূল কারণ। তাঁরা ছোটবেলা থেকেই দেশকে বসবাসের অযোগ্য বলে মনে করেন, যদিও তাঁরা দেশের অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। তাঁরা পড়ালেখা করতে বিদেশে যান এবং সেখান থেকে আর ফেরেন না। আবার আরেক শ্রেণি সপরিবারেই বিদেশে অবস্থান করেন।
অর্থনীতিবিদেরা এটা পরিমাপ করতে পারবেন যে পঞ্চাশ বছরে আমাদের দেশের বিত্ত কী পরিমাণে বিদেশে পাচার হয়েছে। সেই পরিমাণ অর্থ যদি দেশে বিনিয়োগ হতো তাহলে দেশে কত বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারত।
সব দেশেরই আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল হচ্ছে রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা। বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শে সংস্কৃতিমান লোকদের সংস্পর্শে এসে দেশের সব ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। এমনকি বিরোধী দলের পরামর্শও নিয়ে থাকে ক্ষমতাসীন দল। আমাদের দেশের রাজনীতিটা সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, রাজনীতি ও সংস্কৃতি কীভাবে পাশাপাশি অবস্থান করেছে। ষাটের দশকের আন্দোলন এবং ছয় দফা রাজনীতি-অর্থনীতি ও সংস্কৃতির এক যুগপৎ ফলাফল।
প্রকৃত মেধা দেশপ্রেমিকদের নানা ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের রাজনৈতিক বিশ্লেষণের গুরুত্ব দিয়েই দেশের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দীর্ঘ দিন জবাবদিহিহীন রাজনীতি এসব মহৎ ভাবনাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। জাতীয় সংসদকে বারবার অকার্যকর করে আমলাতন্ত্রের আধিপত্যকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমলাতন্ত্রের আধিপত্যের ক্ষেত্রে কোনো সংস্কারকাজ ৫০ বছরে হয়নি। থানা থেকে উপজেলা, মহকুমা থেকে জেলা এসব ঘটেছে, কিন্তু কার্যকর ক্ষমতার ক্ষেত্রে আমলাদের আধিপত্য রয়ে গেছে। সংসদ সদস্যরা অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও ক্ষমতার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি।
একবার বিশ্বব্যাংকের এক কর্মকর্তা কোনো এক জেলা থেকে ঘুরে এসে বলেছিলেন, জেলা প্রশাসকদের ক্ষমতার এ রকম অপব্যবহার তিনি কোথাও দেখেননি। কোটি টাকার ওপরে গাড়ি, অঢেল তেল, নানা ধরনের উৎসবের আয়োজন, এলআর ফান্ড নামের একটি জবাবদিহিহীন ফান্ড নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের দিন-রাত অতিবাহিত হয়।
বর্তমানে যদিও একটু-আধটু নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, তবু অকারণে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশযাত্রার এক অপচয়ী সংস্কৃতি রয়ে গেছে। অথচ অর্থ বরাদ্দের একটা বড় খাত হওয়া উচিত ছিল শিক্ষা এবং দুর্ভাগ্যজনক হলো, শিক্ষকদের এখনো তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে রাখা হয়েছে, যাঁদের বেতন ত্রয়োদশ গ্রেডে। তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী উচ্চশিক্ষিত হলেও তিনি কী শিক্ষা দেবেন? আমলা, রাজনীতিবিদেরা ওই প্রাইমারি স্কুল থেকে পাস করলেও তাঁরা শিক্ষকদের শ্রদ্ধার চোখে দেখেন না; বরং কোচিং ও নিয়োগ-বাণিজ্যের মধ্যে তাঁদের বেঁধে রেখেছেন।
যদিও এ লেখাটি অনেকের চিন্তার ও লেখার চর্বিত চর্বণ, তবুও একমাত্র মানুষেরই শুভবুদ্ধির উদয় হয় বলে সেই শুভবুদ্ধির প্রত্যাশায় রইলাম।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

সরকারের বাজেট ঘোষণা হবে। নানানভাবেই বাজেটে কোন পণ্যের দাম কত টাকা বাড়বে—এ ব্যাপারটি আগেই ফাঁস হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী পণ্যগুলো গুদামজাত হয়ে যায়, উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মজুত থাকে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আরও একটি সুযোগ তৈরি হয়।
একদা বাজেট ছিল খুবই ক্ষুদ্র এবং অর্থনীতিটাও ছিল ছোট। এখন অর্থের বাজার বড় হয়েছে, বাজেটও স্ফীত হয়েছে। সেই সঙ্গে টাকার মূল্যমান কমে গিয়ে একটা স্ফীত নয়া মুদ্রাস্ফীতি গড়ে উঠেছে। এর সুবিধাভোগী হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীরা, যাঁদের বেতন এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ঘুষের টাকাও দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর সুবিধা হয়েছে ব্যবসায়ীদের, পরিবহন মালিকদের, যাঁরা দাম বাড়াতে একটুও দ্বিধাবোধ করেন না। কতজন এই মূল্যবৃদ্ধিতে জীবন হারাল, হাহাকারে পড়ে গেল, এ নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই আর সরকার তো ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও দুর্নীতিবাজ কমিশন এজেন্টদের ওপর নির্ভর করে। এ রকম অবস্থায় মুনাফা, কমিশনের টাকা, ঘুষের টাকা সব চলে যাচ্ছে বিদেশের ব্যাংকে। বিত্তবানদের টাকায় বিদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফুলেফেঁপে উঠেছে।
এ কথা স্বীকার করছি, দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সেই উন্নয়নের খরচও হচ্ছে বিশাল। ধীরগতিতে চলা এই অবকাঠামো উন্নয়নে বারবার প্রাক্কলিত মূল্য বেড়েই চলেছে। ষাটের দশকে দেখেছি সৎ সরকারি চাকরিজীবীরা পে-কমিশন দিলেই আতঙ্কিত হয়ে যেতেন। কারণ একেবারেই অকারণে জিনিসপাতির দাম বেড়ে যেত, টাকার মূল্য কমে যেত। বাজেট এলেও তাই। এমনি করেই দশকের পর দশক চলছে, কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি কমানো বা মানুষের ব্যয়ের বোঝা কমানোর কোনো প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
বাজেট কিছু অর্ধশিক্ষিত অর্থনীতি জানা আমলাদের হাতে। কারণ রাজনীতিবিদেরা বাজেট বোঝার চেষ্টা করেন না এবং খুব মনোযোগ দিয়ে তো নয়ই, একেবারে সামান্য মনোযোগ দিয়েও বাজেটটা বোঝার চেষ্টা করেন না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে বাজেটেরই গুণগান গাইতে থাকেন। সংসদের বাইরে থাকা রাজনীতিবিদেরা বিরোধিতার জন্যই কিছু বিরোধিতা করেন, কিন্তু জনগণ এর মধ্যে সম্পৃক্ত হতে পারে না।
এযাবৎ পৃথিবীতে বহু অর্থনীতিবিদ এসেছেন, অর্থনীতিতে প্রচুর অঙ্কের কারসাজি ঢুকেছে, কিন্তু অর্থনীতিকে রাজনৈতিক এবং মানবিক করার প্রচেষ্টা তেমন একটা দেখা যায়নি। একমাত্র সহজ বোধগম্য অর্থনীতি হচ্ছে কার্ল মার্ক্সের ডাস ক্যাপিটাল। যেখানে পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে ব্যাখ্যা করে একটা সহজ পথের সন্ধান দেওয়া হয়েছে। তাতে রাশিয়ার মতো একটি বিশাল দেশ ৭০ বছর ধরে একটা নতুন অর্থনীতির জন্ম দিয়েছিল। এই অর্থনীতি প্রয়োগের ফলে দেশে ব্যাপক উন্নয়নসাধন করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা হয়ে পৃথিবীর দেশে দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং অধনবাদী বিকাশের ব্যবস্থা হয়েছে।
চীন দেশেও বিপ্লবের পর একই ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু পুঁজিবাদের তীব্র আক্রমণে এবং কিছু মানুষের লোভ-লালসা আকাশচুম্বী হওয়ায় তারা ফিরে গেছে আবার পুরোনো ব্যবস্থায়। এখানে ধনবিজ্ঞানীদের একটা বড় ভূমিকা আছে। এই বিজ্ঞানীরা শুধু অর্থনীতির কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকেননি। তাঁরা বিপণনকে একটা শিল্পে পরিণত করেছেন। বিপণনের নতুন নতুন কলাকৌশলে এবং গণমাধ্যমের বিকাশকে এমনভাবে কাজে লাগিয়েছেন যে মানুষ পণ্য এবং ভোগে বিপুলভাবে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আজকাল সৃজনশীল শিল্পের ক্ষেত্রেও এই বিপণন প্রভূতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই অর্থনীতি এখন আর অর্থনীতির জায়গায় নেই। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ধনবিজ্ঞান। কীভাবে ধনী হওয়া যায়, এ বিজ্ঞানটি এখন মুখ্য।
সামগ্রিক বণ্টনব্যবস্থা এমনভাবে ভেঙে পড়েছে যে অর্থনীতি তাকে সামাল দিতে পারছে না। রাষ্ট্র জনগণের ওপর বিপুল ট্যাক্স বসিয়ে দিলেও ধনী লোকেরা ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার নানা কৌশল আবিষ্কার করেছেন। একমাত্র চাকরিজীবী এবং মধ্যবিত্তরা, যাঁদের রাজনৈতিক প্রভাব নেই, তাঁরাই এই ট্যাক্সের বোঝা বহন করে চলেছেন। ধনবিজ্ঞানীরা অর্থ উপার্জনের নানা পথ বের করে ফেলেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা কোনো উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তাঁরা শুধু তথ্য বিক্রি করে বিপুল পরিমাণে অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদেরা রাষ্ট্রের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কালক্রমে সেই জায়গাগুলো চলে গেছে সবজান্তা আমলাদের হাতে। এই আমলারা শুধু বোঝেন ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট। একপর্যায়ে তাঁরা ভিক্ষা করে দেশের অর্থনীতি চালাতেন। এই আমলাদের তখন ভিক্ষুক বলে আখ্যায়িত করা হতো। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ এবং অন্য সব দাতা সংস্থার কাছে নতজানু হয়ে দেশ চালাতেন এবং সেই থেকে উন্নত বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মিসকিন বলে অভিহিত হতো। কালক্রমে সেই অপবাদ কিছুটা ঘুচেছে। ধনবিজ্ঞানীদের পরামর্শে অদূরদর্শী আমলাদের ব্যবস্থাপনায় দেশের বণ্টনব্যবস্থায় একটা নতুন অভিঘাত এসেছে। সেই অভিঘাতে মধ্যবিত্তশ্রেণি প্রায় ধ্বংসের পথে, কিন্তু উচ্চবিত্তের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। যে মধ্যবিত্তশ্রেণি শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করত, সেই শ্রেণির ভূমিকা পালনে আর কোনো অবকাশ থাকেনি।
শিক্ষার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে মাদ্রাসা শিক্ষা দারিদ্র্য ও বেকারত্বের পথ খুলে দিয়েছে আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি স্কুল একধরনের অভিবাসনমুখী সম্প্রদায় গড়ে তুলেছে। এই অভিবাসনমুখী সম্প্রদায় আসলে দেশের অর্থ পাচারের মূল কারণ। তাঁরা ছোটবেলা থেকেই দেশকে বসবাসের অযোগ্য বলে মনে করেন, যদিও তাঁরা দেশের অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। তাঁরা পড়ালেখা করতে বিদেশে যান এবং সেখান থেকে আর ফেরেন না। আবার আরেক শ্রেণি সপরিবারেই বিদেশে অবস্থান করেন।
অর্থনীতিবিদেরা এটা পরিমাপ করতে পারবেন যে পঞ্চাশ বছরে আমাদের দেশের বিত্ত কী পরিমাণে বিদেশে পাচার হয়েছে। সেই পরিমাণ অর্থ যদি দেশে বিনিয়োগ হতো তাহলে দেশে কত বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারত।
সব দেশেরই আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল হচ্ছে রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা। বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শে সংস্কৃতিমান লোকদের সংস্পর্শে এসে দেশের সব ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। এমনকি বিরোধী দলের পরামর্শও নিয়ে থাকে ক্ষমতাসীন দল। আমাদের দেশের রাজনীতিটা সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, রাজনীতি ও সংস্কৃতি কীভাবে পাশাপাশি অবস্থান করেছে। ষাটের দশকের আন্দোলন এবং ছয় দফা রাজনীতি-অর্থনীতি ও সংস্কৃতির এক যুগপৎ ফলাফল।
প্রকৃত মেধা দেশপ্রেমিকদের নানা ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের রাজনৈতিক বিশ্লেষণের গুরুত্ব দিয়েই দেশের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দীর্ঘ দিন জবাবদিহিহীন রাজনীতি এসব মহৎ ভাবনাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। জাতীয় সংসদকে বারবার অকার্যকর করে আমলাতন্ত্রের আধিপত্যকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমলাতন্ত্রের আধিপত্যের ক্ষেত্রে কোনো সংস্কারকাজ ৫০ বছরে হয়নি। থানা থেকে উপজেলা, মহকুমা থেকে জেলা এসব ঘটেছে, কিন্তু কার্যকর ক্ষমতার ক্ষেত্রে আমলাদের আধিপত্য রয়ে গেছে। সংসদ সদস্যরা অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও ক্ষমতার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি।
একবার বিশ্বব্যাংকের এক কর্মকর্তা কোনো এক জেলা থেকে ঘুরে এসে বলেছিলেন, জেলা প্রশাসকদের ক্ষমতার এ রকম অপব্যবহার তিনি কোথাও দেখেননি। কোটি টাকার ওপরে গাড়ি, অঢেল তেল, নানা ধরনের উৎসবের আয়োজন, এলআর ফান্ড নামের একটি জবাবদিহিহীন ফান্ড নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের দিন-রাত অতিবাহিত হয়।
বর্তমানে যদিও একটু-আধটু নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, তবু অকারণে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশযাত্রার এক অপচয়ী সংস্কৃতি রয়ে গেছে। অথচ অর্থ বরাদ্দের একটা বড় খাত হওয়া উচিত ছিল শিক্ষা এবং দুর্ভাগ্যজনক হলো, শিক্ষকদের এখনো তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে রাখা হয়েছে, যাঁদের বেতন ত্রয়োদশ গ্রেডে। তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী উচ্চশিক্ষিত হলেও তিনি কী শিক্ষা দেবেন? আমলা, রাজনীতিবিদেরা ওই প্রাইমারি স্কুল থেকে পাস করলেও তাঁরা শিক্ষকদের শ্রদ্ধার চোখে দেখেন না; বরং কোচিং ও নিয়োগ-বাণিজ্যের মধ্যে তাঁদের বেঁধে রেখেছেন।
যদিও এ লেখাটি অনেকের চিন্তার ও লেখার চর্বিত চর্বণ, তবুও একমাত্র মানুষেরই শুভবুদ্ধির উদয় হয় বলে সেই শুভবুদ্ধির প্রত্যাশায় রইলাম।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সরকারের বাজেট ঘোষণা হবে। নানানভাবেই বাজেটে কোন পণ্যের দাম কত টাকা বাড়বে—এ ব্যাপারটি আগেই ফাঁস হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী পণ্যগুলো গুদামজাত হয়ে যায়, উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মজুত থাকে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আরও একটি সুযোগ তৈরি হয়।
০১ জুন ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সরকারের বাজেট ঘোষণা হবে। নানানভাবেই বাজেটে কোন পণ্যের দাম কত টাকা বাড়বে—এ ব্যাপারটি আগেই ফাঁস হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী পণ্যগুলো গুদামজাত হয়ে যায়, উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মজুত থাকে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আরও একটি সুযোগ তৈরি হয়।
০১ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সরকারের বাজেট ঘোষণা হবে। নানানভাবেই বাজেটে কোন পণ্যের দাম কত টাকা বাড়বে—এ ব্যাপারটি আগেই ফাঁস হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী পণ্যগুলো গুদামজাত হয়ে যায়, উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মজুত থাকে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আরও একটি সুযোগ তৈরি হয়।
০১ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সরকারের বাজেট ঘোষণা হবে। নানানভাবেই বাজেটে কোন পণ্যের দাম কত টাকা বাড়বে—এ ব্যাপারটি আগেই ফাঁস হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী পণ্যগুলো গুদামজাত হয়ে যায়, উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মজুত থাকে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আরও একটি সুযোগ তৈরি হয়।
০১ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫