Ajker Patrika

পুড়ল চার ভাইয়ের শেষ সম্বল

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২১, ২০: ৪৩
পুড়ল চার ভাইয়ের শেষ সম্বল

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আগুন লেগে আপন চার ভাইয়ের চারটি ঘুর পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের চর এতমামপুর গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে চারটি টিনশেডের দোচালা ঘর ও ঘরে থাকা আসবাবপত্র-তৈজসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

পরিবারটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জ্বলন্ত চুলা থেকে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে প্রায় সাত লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, চর এতমামপুর গ্রামের মৃত হাসেম আলীর চার ছেলে ময়েন আলী খাঁ (৪০), চয়েন আলী খাঁ (৩৫), জয়নাল আলী খাঁ (৩২) ও বাবু আলী খাঁ (৩০। তাঁরা পেশায় জেলে ও দিনমজুর।

এদিকে আগুন লাগার খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

প্রতিবেশীরা জানায়, ময়েন আলীর খাঁর স্ত্রী রেখা খাতুন মঙ্গলবার সকালে মাটির চুলায় রান্না করছিল। এ সময় তিনি হলুদ আনতে শয়নকক্ষে যান। কয়েক মিনিটের মধ্যে চুলার কাছে ফিরে এসে দেখেন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে জয়নাল আলী খাঁর ঘরে। এ সময় আগুন আগুন বলে তিনি চিৎকার শুরু করেন তিনি।

রেখার চিৎকার শুনে প্রথমে বাড়ির লোকজন এবং পরে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁরা কেউ কলস ভরা পানি ছিটান, কেউ কলার গাছ নিক্ষেপ করেন, কেউবা পাশের বাড়ির সাবমার্সিবল মোটর দিয়ে পানি ছিটান। এভাবে তাঁদের প্রায় চল্লিশ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে চার ভাইয়ের চারটি বসতঘর ও সকল আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এ বিষয়ে ময়েন আলী খাঁর স্ত্রী রেখা খাতুন বলেন, গরিব মানুষ আমরা। সকাল সকাল রান্না করে একটি কারখানায় কাজে যাই। প্রতিদিনের ন্যায় আজও সকালে রান্না করছিলাম। তরকারি রান্নার জন্য ঘরে হলুদ আনতে গিয়েছিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যে ফিরে এসে দেখি বিশাল আগুনের শিখা। আগুন দেখেই চিৎকার শুরু করি।

প্রতিবেশী আদম আলী মৃধা বলেন, চেঁচামেচি শুনে ছুটে এসে আগুন দেখতে পাই। সবাই মিলে পানি ছিটিয়ে ও কলাগাছ ফেলে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আরেক প্রতিবেশী স্বপন আলী বলেন, অল্প জায়গায় চার ভাইয়ের বসবাস। এলাকার সবচেয়ে গরিব মানুষ ওরা। পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা দরকার।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জয়নাল আলী খাঁ বলেন, আমরা চার ভাই কখনো মাছ ধরে বিক্রি করি। কখনো অন্যের কাছ থেকে মাছ কিনে বিক্রি করি। আবার কখনো অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আগুন আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। আমরা পথে বসে গেছি। এখন পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হবে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। সরকারি অন্যান্য সহযোগিতার জন্য লিখিত আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত