ড. মো. ফখরুল ইসলাম
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিভীষিকা এখন শিশু হত্যায় রূপ নিয়েছে। যুদ্ধের প্রধান কুশীলবরা ভয়ংকর এ যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করেই চলেছেন। ইউক্রেনের চিকিৎসা শহর খারকিভের সাধারণ হাসপাতালে হামলা চালানোর পর এবার শিশু হাসপাতালকে টার্গেট করে বিমান থেকে রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনটি শিশু হাসপাতাল বোমা মেরে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা ছাড়াও ইউক্রেনের পাঁচটি বড় শহর বেশি আক্রান্ত হয়েছে। রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ, সুমি ও মারিউপলের সরকারি-বেসরকারি অফিস, মার্কেট, বসতবাড়ির সিংহভাগ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় জমে আছে পরিত্যক্ত অবিস্ফোরিত বোমা, ভাঙাচোরা ভারী জিনিসের স্তূপ। মানুষ জীবন রক্ষার তাগিদে ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পোল্যান্ড, মলদোভা, বেলারুশ, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া প্রভৃতি দেশের সীমান্তের দিকে ছুটে পালাচ্ছে। গোলার আঘাতে মুমূর্ষু শিশুদের নিয়ে একটি চিকিৎসা রিলিফ ট্রেন পোল্যান্ডে গিয়েছিল কয়েক দিন আগে। কিন্তু ভয়াবহ আক্রমণ শুরু হলে সেই সাহায্য বন্ধ হয়ে যায়। যুদ্ধাহত শিশুদের ইউক্রেনের বিভিন্ন শিশু হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছিল।
কিন্তু ১০ মার্চ ইউক্রেনের তিনটি শিশু হাসপাতালে বিমান দ্বারা বোমা হামলা করে ইতিহাসের ন্যক্কারজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে রুশ বাহিনী। নানা অজুহাতে দেশটিতে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার শুরু করেছে বলে সংবাদে জানা গেছে। শত শত বেসামরিক মানুষের লাশের গণকবর দেওয়া হচ্ছে একই গর্তের মধ্যে। ন্যুরেমবার্গের পর এ যেন আধুনিক মানবসভ্যতার ধ্বজাধারী নিষ্ঠুর মানুষদের এক অসভ্য ইতিহাস নতুন করে লেখা হয়ে যাচ্ছে।
শিশুদের নিয়েই প্রতিটি পরিবারের ভবিষ্যতের দিনপঞ্জি তৈরি হয়। পৃথিবীর সব দেশে মানুষের আশা-ভরসা ও ভবিষ্যতের বেঁচে থাকার কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয় শিশুকল্যাণ কর্মসূচির মাধ্যমে। তাই তো শিশুদের অগ্রাধিকার দিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক শিশুসদন, শিশুশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, শিশু দিবস।
আজকের শিশুরা আগামী দিনের নাগরিক। একটি শিশুর জন্ম নিয়ে কোনো পরিবারের যেমন আশা, ভরসা ও ভাবনা থাকে, তেমনি ওদের ভালোভাবে বেড়ে ওঠার জন্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের চিন্তা-ভাবনার অন্ত নেই।
পৃথিবীতে শিশু দিবস নিয়ে অনেকগুলো ধারা, বিভিন্ন নামকরণ প্রবণতা বিদ্যমান। তাদের একটি আন্তর্জাতিক ধারা, অন্যটি জাতীয় ধারা। সব ধারাই নিয়মানুযায়ী সক্রিয়ভাবে পালন করার প্রবণতা লক্ষণীয়।
প্রথম ধারায় আছে বৈশ্বিকভাবে আলাদা আলাদা বিশ্ব শিশু দিবস ও আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালনের নাম ও তারিখ। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিবছর ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়। আবার আন্তর্জাতিকভাবে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস ও প্রথম সপ্তাহকে শিশু অধিকার সপ্তাহ হিসেবে পালন করা হয়।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালন করা হয় ১ জুন এবং ১১ অক্টোবর বিশ্বে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালন করা হয়।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণভাবে একেকটি দেশ বছরের একেকটি দিনকে তাদের জাতীয় শিশু দিবস পালন করে থাকে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় শিশু দিবস প্রতিবছর জুনের দ্বিতীয় রোববার। চীনে ৪ এপ্রিল। জাপানে ৫ মে। জার্মানিতে ২০ সেপ্টেম্বর। ব্রিটেনে ৩০ আগস্ট। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৪ নভেম্বর ও পাকিস্তানে ১ জুলাই জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়ে থাকে। ভারতে ১৪ নভেম্বর হলো দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহরুর জন্মদিন। ওই দিনটিকে স্মরণে রেখে তারা ১৯৬৭ সাল থেকে ১৪ নভেম্বরকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে স্মরণে রেখে ১৯৯৭ সাল থেকে সরকারিভাবে ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
আমাদের দেশে বিত্তশালী ও শহুরে বা গ্রামীণ সচ্ছল পরিবারের নিরাপদ পরিবেশের শত ফুল ফোটার জন্য অনেক যত্ন-আত্তির অন্ত থাকে না। অন্যদিকে অসচ্ছল ও বস্তির অনিরাপদ পরিবেশ ও পরিস্থিতির মধ্যে অনাদর, অপুষ্টি ও অবহেলায় জন্ম নেওয়া শতকোটি শিশুর কথা সবার মনে থাকে না। তাদেরও ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। এ জন্য গ্রামের নিম্ন আয়ের পরিবার, শহরের বস্তি এলাকার ভাসমান শিশু, পরিত্যক্ত শিশু, টোকাই, কর্মজীবী শিশু—সবার জন্য সমান সুযোগ প্রদানের নীতিমালা গ্রহণ ও সেগুলো আশু বাস্তবায়নের দিকে নজর দেওয়া উচিত।
এ তো গেল সাধারণ নীতিকথা। করোনাকালের ভয়াবহতা শেষ না হতেই মানুষরূপী হায়েনারা যদি যুদ্ধের নামে শিশুদের অবলীলায় হত্যা করার জন্য মেতে ওঠে, তাহলে মানবসভ্যতা সভ্য হওয়ার দাবিদার হয় কীভাবে? মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিনে, আফগানিস্তান, সুদানে কত হাজার হাজার শিশুকে প্রতিদিন গোলার আঘাতে হত্যা করা হচ্ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান জাতিসংঘ বা তার বিশেষায়িত সংস্থাগুলো সংরক্ষণ করছে কি? অথবা কোনো মানবদরদি সংগঠন তাদের কথা স্মরণ করছে? তারা সবাই শিশু দিবসের নামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন তারিখকে নিজেদের নাম ভাঙানোর কাজে ব্যবহার করতে তৎপর। সেটাকেও শুধু এক দিনের সেমিনার, অনুষ্ঠান বা উৎসবের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যায়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সৈন্যরা নিরীহ মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ শুরু করলে সেই আক্রমণ প্রতিহত করা শুরু হয়। এতে দুই দেশের সৈন্য ও সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে শিশুরাও নিহত হচ্ছে। এমনকি শিশুদের চিকিৎসা করার জায়গা, অর্থাৎ হাসপাতালগুলোতে বিমান ও কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কোন ধরনের নিষ্ঠুরতা? ওদের কি নিজেদের শিশুসন্তান নেই?
শিশুদের প্রতি বড়দের দরদ কি নিষ্ঠুরতায় পর্যবসিত হয়ে ধুলোয় মিশে গেছে? তা না হলে দেশে দেশে শিশুদের ওপর নির্মম অত্যাচারের খড়্গ কেন? যুদ্ধে শিশুহত্যা ছাড়াও দেশে দেশে শিশু পাচার বন্ধ হয় না কেন? শিশু নির্যাতন, শিশু চুরি ও বিক্রি, শিশুশ্রম, শিশু পর্নোগ্রাফি বন্ধ করা যায় না কেন? এত সমস্যার মধ্যে শিশুরা বড়দের কারণে লোভ, হিংসা ও রেষারেষির জন্য যুদ্ধের বলি হবে কেন? রাসায়নিক ও পরমাণু অস্ত্র কি শিশুহত্যার জন্য বানানো হয়েছে? আমরা হিরোশিমার পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর সেখানে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে ১২ বছরের এক শিশুকে তার মৃত বাবার জন্য কাঁদতে দেখেছি। যুদ্ধের কারণে এতিম শিশুরা কি যুগের পর যুগ ধরে নিহত বাবা-মায়ের জন্য রোদন করতে থাকবে?
যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের মাটি, বাতাস, পরিবেশ নষ্ট করে, মা-শিশু হত্যা করে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুহারা ও শরণার্থী করার দায় কি পুতিন নিতে পারবেন? শিশুশূন্য সামনের পৃথিবীটা কি এই মানবিক দায় নিতে পারবে? শিশুরা না থাকলে আগামী দিনে কে আগলে রাখবে এই সবুজ ধরিত্রীকে? এই ভয়ংকর অমানবিক দায় নেওয়ার জন্য পৃথিবীর কোনো শিশুদরদি নেতা বা কোনো আন্তর্জাতিক শিশুকল্যাণ সংস্থা কতটা প্রস্তুত, তা কেউই মুখ ফুটে বলছে না কেন?
এখন দুটি দেশ যুদ্ধ করলেও কার্যত পুরো পৃথিবীর মানুষ নিজেদের একে অপরের শত্রু-মিত্র নামে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলছে। এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এই শত্রুতা আরও বেড়ে গিয়ে মানুষে-মানুষে চরম হিংসা, শ্রেণিবিবাদ ও গৃহবিবাদ শুরু হয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখতে হলে ইউক্রেনসহ অন্যান্য দেশের যুদ্ধাক্রান্ত শিশুদের রক্ষাকল্পে বিশ্বের প্রতিটি শান্তিকামী দেশে তাদের শিশুদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে সব যুদ্ধবাজ নেতা, দেশ ও তাদের দোসরদের এই ঘৃণ্য বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিভীষিকা এখন শিশু হত্যায় রূপ নিয়েছে। যুদ্ধের প্রধান কুশীলবরা ভয়ংকর এ যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করেই চলেছেন। ইউক্রেনের চিকিৎসা শহর খারকিভের সাধারণ হাসপাতালে হামলা চালানোর পর এবার শিশু হাসপাতালকে টার্গেট করে বিমান থেকে রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনটি শিশু হাসপাতাল বোমা মেরে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা ছাড়াও ইউক্রেনের পাঁচটি বড় শহর বেশি আক্রান্ত হয়েছে। রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ, সুমি ও মারিউপলের সরকারি-বেসরকারি অফিস, মার্কেট, বসতবাড়ির সিংহভাগ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় জমে আছে পরিত্যক্ত অবিস্ফোরিত বোমা, ভাঙাচোরা ভারী জিনিসের স্তূপ। মানুষ জীবন রক্ষার তাগিদে ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পোল্যান্ড, মলদোভা, বেলারুশ, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া প্রভৃতি দেশের সীমান্তের দিকে ছুটে পালাচ্ছে। গোলার আঘাতে মুমূর্ষু শিশুদের নিয়ে একটি চিকিৎসা রিলিফ ট্রেন পোল্যান্ডে গিয়েছিল কয়েক দিন আগে। কিন্তু ভয়াবহ আক্রমণ শুরু হলে সেই সাহায্য বন্ধ হয়ে যায়। যুদ্ধাহত শিশুদের ইউক্রেনের বিভিন্ন শিশু হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছিল।
কিন্তু ১০ মার্চ ইউক্রেনের তিনটি শিশু হাসপাতালে বিমান দ্বারা বোমা হামলা করে ইতিহাসের ন্যক্কারজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে রুশ বাহিনী। নানা অজুহাতে দেশটিতে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার শুরু করেছে বলে সংবাদে জানা গেছে। শত শত বেসামরিক মানুষের লাশের গণকবর দেওয়া হচ্ছে একই গর্তের মধ্যে। ন্যুরেমবার্গের পর এ যেন আধুনিক মানবসভ্যতার ধ্বজাধারী নিষ্ঠুর মানুষদের এক অসভ্য ইতিহাস নতুন করে লেখা হয়ে যাচ্ছে।
শিশুদের নিয়েই প্রতিটি পরিবারের ভবিষ্যতের দিনপঞ্জি তৈরি হয়। পৃথিবীর সব দেশে মানুষের আশা-ভরসা ও ভবিষ্যতের বেঁচে থাকার কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয় শিশুকল্যাণ কর্মসূচির মাধ্যমে। তাই তো শিশুদের অগ্রাধিকার দিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক শিশুসদন, শিশুশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, শিশু দিবস।
আজকের শিশুরা আগামী দিনের নাগরিক। একটি শিশুর জন্ম নিয়ে কোনো পরিবারের যেমন আশা, ভরসা ও ভাবনা থাকে, তেমনি ওদের ভালোভাবে বেড়ে ওঠার জন্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের চিন্তা-ভাবনার অন্ত নেই।
পৃথিবীতে শিশু দিবস নিয়ে অনেকগুলো ধারা, বিভিন্ন নামকরণ প্রবণতা বিদ্যমান। তাদের একটি আন্তর্জাতিক ধারা, অন্যটি জাতীয় ধারা। সব ধারাই নিয়মানুযায়ী সক্রিয়ভাবে পালন করার প্রবণতা লক্ষণীয়।
প্রথম ধারায় আছে বৈশ্বিকভাবে আলাদা আলাদা বিশ্ব শিশু দিবস ও আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালনের নাম ও তারিখ। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিবছর ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়। আবার আন্তর্জাতিকভাবে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস ও প্রথম সপ্তাহকে শিশু অধিকার সপ্তাহ হিসেবে পালন করা হয়।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালন করা হয় ১ জুন এবং ১১ অক্টোবর বিশ্বে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালন করা হয়।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণভাবে একেকটি দেশ বছরের একেকটি দিনকে তাদের জাতীয় শিশু দিবস পালন করে থাকে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় শিশু দিবস প্রতিবছর জুনের দ্বিতীয় রোববার। চীনে ৪ এপ্রিল। জাপানে ৫ মে। জার্মানিতে ২০ সেপ্টেম্বর। ব্রিটেনে ৩০ আগস্ট। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৪ নভেম্বর ও পাকিস্তানে ১ জুলাই জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়ে থাকে। ভারতে ১৪ নভেম্বর হলো দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহরুর জন্মদিন। ওই দিনটিকে স্মরণে রেখে তারা ১৯৬৭ সাল থেকে ১৪ নভেম্বরকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে স্মরণে রেখে ১৯৯৭ সাল থেকে সরকারিভাবে ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
আমাদের দেশে বিত্তশালী ও শহুরে বা গ্রামীণ সচ্ছল পরিবারের নিরাপদ পরিবেশের শত ফুল ফোটার জন্য অনেক যত্ন-আত্তির অন্ত থাকে না। অন্যদিকে অসচ্ছল ও বস্তির অনিরাপদ পরিবেশ ও পরিস্থিতির মধ্যে অনাদর, অপুষ্টি ও অবহেলায় জন্ম নেওয়া শতকোটি শিশুর কথা সবার মনে থাকে না। তাদেরও ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। এ জন্য গ্রামের নিম্ন আয়ের পরিবার, শহরের বস্তি এলাকার ভাসমান শিশু, পরিত্যক্ত শিশু, টোকাই, কর্মজীবী শিশু—সবার জন্য সমান সুযোগ প্রদানের নীতিমালা গ্রহণ ও সেগুলো আশু বাস্তবায়নের দিকে নজর দেওয়া উচিত।
এ তো গেল সাধারণ নীতিকথা। করোনাকালের ভয়াবহতা শেষ না হতেই মানুষরূপী হায়েনারা যদি যুদ্ধের নামে শিশুদের অবলীলায় হত্যা করার জন্য মেতে ওঠে, তাহলে মানবসভ্যতা সভ্য হওয়ার দাবিদার হয় কীভাবে? মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিনে, আফগানিস্তান, সুদানে কত হাজার হাজার শিশুকে প্রতিদিন গোলার আঘাতে হত্যা করা হচ্ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান জাতিসংঘ বা তার বিশেষায়িত সংস্থাগুলো সংরক্ষণ করছে কি? অথবা কোনো মানবদরদি সংগঠন তাদের কথা স্মরণ করছে? তারা সবাই শিশু দিবসের নামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন তারিখকে নিজেদের নাম ভাঙানোর কাজে ব্যবহার করতে তৎপর। সেটাকেও শুধু এক দিনের সেমিনার, অনুষ্ঠান বা উৎসবের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যায়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সৈন্যরা নিরীহ মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ শুরু করলে সেই আক্রমণ প্রতিহত করা শুরু হয়। এতে দুই দেশের সৈন্য ও সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে শিশুরাও নিহত হচ্ছে। এমনকি শিশুদের চিকিৎসা করার জায়গা, অর্থাৎ হাসপাতালগুলোতে বিমান ও কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কোন ধরনের নিষ্ঠুরতা? ওদের কি নিজেদের শিশুসন্তান নেই?
শিশুদের প্রতি বড়দের দরদ কি নিষ্ঠুরতায় পর্যবসিত হয়ে ধুলোয় মিশে গেছে? তা না হলে দেশে দেশে শিশুদের ওপর নির্মম অত্যাচারের খড়্গ কেন? যুদ্ধে শিশুহত্যা ছাড়াও দেশে দেশে শিশু পাচার বন্ধ হয় না কেন? শিশু নির্যাতন, শিশু চুরি ও বিক্রি, শিশুশ্রম, শিশু পর্নোগ্রাফি বন্ধ করা যায় না কেন? এত সমস্যার মধ্যে শিশুরা বড়দের কারণে লোভ, হিংসা ও রেষারেষির জন্য যুদ্ধের বলি হবে কেন? রাসায়নিক ও পরমাণু অস্ত্র কি শিশুহত্যার জন্য বানানো হয়েছে? আমরা হিরোশিমার পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর সেখানে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে ১২ বছরের এক শিশুকে তার মৃত বাবার জন্য কাঁদতে দেখেছি। যুদ্ধের কারণে এতিম শিশুরা কি যুগের পর যুগ ধরে নিহত বাবা-মায়ের জন্য রোদন করতে থাকবে?
যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের মাটি, বাতাস, পরিবেশ নষ্ট করে, মা-শিশু হত্যা করে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুহারা ও শরণার্থী করার দায় কি পুতিন নিতে পারবেন? শিশুশূন্য সামনের পৃথিবীটা কি এই মানবিক দায় নিতে পারবে? শিশুরা না থাকলে আগামী দিনে কে আগলে রাখবে এই সবুজ ধরিত্রীকে? এই ভয়ংকর অমানবিক দায় নেওয়ার জন্য পৃথিবীর কোনো শিশুদরদি নেতা বা কোনো আন্তর্জাতিক শিশুকল্যাণ সংস্থা কতটা প্রস্তুত, তা কেউই মুখ ফুটে বলছে না কেন?
এখন দুটি দেশ যুদ্ধ করলেও কার্যত পুরো পৃথিবীর মানুষ নিজেদের একে অপরের শত্রু-মিত্র নামে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলছে। এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এই শত্রুতা আরও বেড়ে গিয়ে মানুষে-মানুষে চরম হিংসা, শ্রেণিবিবাদ ও গৃহবিবাদ শুরু হয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখতে হলে ইউক্রেনসহ অন্যান্য দেশের যুদ্ধাক্রান্ত শিশুদের রক্ষাকল্পে বিশ্বের প্রতিটি শান্তিকামী দেশে তাদের শিশুদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে সব যুদ্ধবাজ নেতা, দেশ ও তাদের দোসরদের এই ঘৃণ্য বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫