Ajker Patrika

নানা সংকটে ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা

হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী (বরগুনা)
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৯
নানা সংকটে ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা

বেতাগী উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন রোগীরা। বেশির ভাগ ক্লিনিকে ওষুধের সংকট। নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ ঠিক থাকে না। অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার কারণে এসব ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সদর ইউনিয়নের ছোট কেওড়াবুনিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিতে এসেছিলেন বটতলা গ্রামের গৃহবধূ ইয়াসমিন বেগম। রোদে পুড়ে ক্লিনিকে আসার পর সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) জানালেন ডায়াবেটিস এবং প্রেশার মাপার যন্ত্র নষ্ট। মন খারাপ করে ফিরে যাওয়ার সময় ইয়াসমিন বলেন, ‘দুই দিন ধরে শরীরটা খারাপ যাচ্ছে। আমি ডায়াবেটিকের রোগী। এসেছিলাম প্রেশার এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে। সামান্য ডায়াবেটিস ও প্রেশার যদি পরীক্ষা করতে না পারি, তাহলে হাসপাতালে (ক্লিনিক) এসে লাভ কী?’

ছোট কেওড়াবুনিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বিয়াম্মাতুমুল সীমা বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে প্রেশার, ডায়াবেটিস ও ওজন মাপার মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। মেশিন ঠিক না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা দিতে পারছি না।’

শুধু কেওড়াবুনিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে নয়, উপজেলার ১৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রায় প্রতিটিতেই এমন পরিস্থিতি। এগুলোতে নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল। অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার কারণে এসব ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।।

জানা যায়, গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে সারা দেশে চালু করা হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবল না থাকা, অবকাঠামোগত সুবিধার অভাব আর প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অন্যান্য উপকরণ না থাকায় স্বাস্থ্যসেবায় কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না বেতাগী উপজেলার ক্লিনিকগুলোতে। আর প্রয়োজনীয় তদারকি না থাকায় অনেক কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সময় মতো অফিসে পাওয়া যায় না। অনেকে অফিসে আসেন দেরিতে, আবার ক্লিনিক ছাড়েন নির্ধারিত সময়ের আগে। ফলে ক্লিনিকগুলোতে আসা রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

গত রোববার দুপুরে সরেজমিন উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী কমিউনিটি ক্লিনিক, মোকামিয়া ইউনিয়নের মোকামিয়া করুনা কমিউনিটি ক্লিনিক ও বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের দক্ষিণ করুনা কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিএইচসিপি না থাকায় ঝোপখালী কমিউনিটি ক্লিনিকটি দুই সপ্তাহ থেকে বন্ধ রয়েছে।

ঝোপখালি গ্রামের বাসিন্দা রুস্তম আলী মুসুল্লি বলেন, ‘আমাদের ক্লিনিকের তিন বছর ধরে সিএইচসিপি পদে কেউ নেই। ওই পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে যিনি আছেন তিনি টিকা কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তিনি যেদিন সময় পান ওই দিন এসে ক্লিনিক খোলেন। ’

ঝোপখালী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি’র দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারী মো. সোহেল বলেন, ‘সিএইচসিপি পদে কেউ না থাকায় আমাকেই সব কাজ করতে হয়। বর্তমানে টিকাদান কার্যক্রম চলমান থাকায় ক্লিনিকে যেতে পারি না। তাই বাধ্য হয়েই ক্লিনিক বন্ধ রাখতে হয়।’

বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. তেন মং বলেন, ‘শুরুর দিকে ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবার মান ভালো ছিল। বর্তমানে সিএইচসিপিদের অবহেলা ও নানা ধরনের সংকটে ক্লিনিকগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। তবে, এমন পরিস্থিতিতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সেবার মান বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

লাইভ-২ (২৩ জুন, ২০২৫) ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপল ইসরায়েল, তেহরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি থেকে বিদায় নিচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত