Ajker Patrika

বন্ধু, তোমার পথের সাথি কে...?

আশান উজ জামান
বন্ধু, তোমার পথের সাথি কে...?

যাদের নিয়ে জীবন, তাদের কাউকে আমরা ভালোবাসি, কেউ আমাদের প্রেম-সম্পর্কের, কেউ আবার আত্মীয়; কিন্তু এমন যদি কেউ থাকে যাকে আমরা ভালোও বাসি, কিছুটা যার সঙ্গে প্রেম প্রেম ভাবও আছে, আবার সম্পর্কটা আত্মারও, সে হলো বন্ধু; অর্থাৎ বন্ধু হলো একের ভেতর সব। ছোটদের মতো বায়না করে, করে বড়দের মতো শাসন;

দরকারে পথ দেখায় নেতার মতো, আবার করে অনুসরণও। তবে সবচেয়ে বেশি যেটা করে, তা হলো পাশে থাকা, সহ্য করা। এসব দেখতে গেলে দেখা যাবে বন্ধু বলে যাদের আমরা ভাবি, তাদের অনেকেই হয়তো স্রেফ পরিচিত কিংবা সহপাঠী, সহযাত্রী বা সহজীবী, কিন্তু বন্ধু না। সেই হিসেবে আমাদের অনেকেরই অনেক বন্ধু আছে, কিন্তু সত্যিকারের বন্ধু হয়তো একজনও নেই। এটা খুবই কষ্টের কথা, কারণ সবাই আমরা অসম্পূর্ণ, আর সেই খামতি পূরণ করে ‘দুজন মিলে’ হলেও এক হওয়ার সামর্থ্য সত্যিকারের একজন বন্ধুরই থাকে।

‘বা’, ‘অথবা’, আর ‘কিংবা’ আমার এমনই তিনজন বন্ধু। মাঝেমাঝে তিনজনকে আলাদা মনে হয়, আবার দেখি রূপে-অরূপে এক হয়ে ওরা মিলেমিশে আছে।

নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম, ফলে ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’র সঙ্গেও বেশ সখ্য আমার। স্বভাবগতভাবে ওরা সংশয়ী, ভয়তেড়ে, আর অতিসাবধানি। প্রতিটি কাজের শুরুতে ভয়, ঝুঁকি, লজ্জা, এটা-সেটা ভারী ভারী না-বোধক শব্দ তুলে কথা বলে। উদ্যম কমিয়ে দেয়, বাধাও দেয় কখনো কখনো। জীবনে বহু কাজ আমি এদের পাকে পড়ে করতে পারিনি, হাতে পেয়েও ফেলে দিয়েছি জীবন বদলে দিতে পারত, এমন বহু সুযোগ। প্রায়ই মনে হয় ওদের জায়গায় যদি আমি ‘তবু’কে কাছে পেতাম, ভালো হতো। সংশয় আর ভয়ের সময়ে পড়োপড়ো গাছের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো শক্ত লাঠির মতো শক্তি নিয়ে পাশে দাঁড়ায় সে; নিরস্ত করে ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’কে। আর দৃঢ়স্বরে বলে, ‘বাধা-বিপত্তি আছে, হেরে যাওয়ার ঝুঁকি আছে, আছে হারিয়ে যাওয়ার ভয়, তারপরও কাজটা করতে হবে।’

এসব ক্ষেত্রে অবশ্য ‘বা’, ‘অথবা’ আর ‘কিংবা’ আরও ভালো। ওরা জানে থেমে থাকলে প্রমত্তা নদীতেও পলি জমে, চর জাগে। তাই জয়-পরাজয়, ভয়-সংশয় আর ভেঙে পড়া কিংবা দুঃখ-ব্যথার রাতে একের পর এক বিকল্প নিয়ে পাশে থাকে। সাহস দেয়, উদ্যম জোগায়। বলে, ‘একটা দরজা বন্ধ হয়েছে? ভেঙে পোড়ো না, এই এই দরজা তোমার সামনে এখনো খোলা।’

‘এবং’ ‘ও’ ‘আর’ও খারাপ না; মাঝেমাঝে বরং তাদেরই চাই বেশি। তবে সমস্যা হলো, ওরা একসঙ্গে থাকতে চায়, একসঙ্গেই করতে চায় সবকিছু। কিন্তু জীবন নামের এই পথ যার, হাঁটতে তো তাকেই হবে। সময় ও সুযোগের যোগ মিললে সঙ্গী হিসেবে কেউ না কেউ থাকবে বটে, তবে কারও হাঁটা তো কেউ এসে হেঁটে দেবে না। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সবার অপেক্ষায় থাকলে অপেক্ষাটাই হয়, চলাটা হয়ে ওঠে না। গতি কমে যায়, ক্ষতি বেড়ে যায়। 
ঠিকমতো বন্ধু বেছে নেওয়া তাই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু বন্ধু কি আর বেছে বেছে পাওয়া যায়? না, তবে বেছে বেছে তাদের বাদ তো দেওয়া যায়!

চিটাগুলোকে উড়িয়ে দিতে পারলে শেষে ঠিক বন্ধুরাই পড়ে থাকে পাশে। আর কে না জানে, ঠিক বন্ধুই সবচেয়ে সুন্দর করে পূর্ণ করে তোলে আমাদের! 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষার্থীদের ‘কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে’ সপরিবারে পালিয়েছেন বিএসবির বাশার

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬, ভারতে ১০

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত