Ajker Patrika

৫০ স্কুলে সুপেয় পানি নেই

রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ২০: ১১
৫০ স্কুলে সুপেয় পানি নেই

দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানি বঞ্চিত বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী। শুষ্ক মৌসুমে তীব্র লবণাক্ততা প্রবণ উপকূলীয় এ এলাকায় দিন দিন সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে।

সরকারিভাবে গভীর নলকূপ, ওয়াটার হার্ভেস্ট ট্যাংক ও সোলার সিস্টেমের আওতায় বেশ কিছু বিদ্যালয়কে সুপেয় পানির অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এখনো ৫০টি বিদ্যালয়ের শিশুরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ উপজেলার ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ২০ হাজার শিশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি বিদ্যালয়ের ৪ হাজার ৫৪০ জন শিশু সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। রামপালের পেড়িখালী, মল্লিকেরবেড়, হুড়কা, রাজনগর ও রামপাল সদরের কিছু এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রসাদনগর ভৈরবডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতাধীন একটি সুপেয় পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। প্ল্যান্টটি বিদ্যালয়সহ আশপাশের মানুষের সুপেয় পানির সংকট দূরীকরণের জন্য স্থাপন করা হয়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্ল্যান্টটি অকেজো পড়ে আছে। এটি থেকে পানির সুবিধা পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশির ভাগই কম বয়সী ও শিশু শিক্ষার্থী। এসব শিশুরা পানি পান না করতে পেরে পিপাসার্ত থাকে। এতে তাদের অনেক কষ্ট হয়। মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি থেকে শিক্ষার্থীদের অনেকেই পানি পান করতে আসে। তবে অনেক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের পানি পান করতে আশপাশের অনেকের বাড়িতে যেতে হয়।

সিংগড়বুনিয়া বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. বাবু বলেন, ‘আমরা বাড়ি থেকে পানি নিয়ে আসি। যেদিন পানি আনতে ভুলে যাই, সেদিন লাইব্রেরিতে গিয়ে পানি খেতে হয়। সব সময় আবার স্কুলে পানি থাকেও না। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়।’

সুপেয় পানি সংকটে একই রকম দুর্ভোগের কথা জানায় বেতকাটা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া। সুমাইয়া বলে, ‘বাড়িতে ভালো খাবার পানি নেই। স্কুলেও নেই।’

মল্লিকেরবেড় ইউপি চেয়ারম্যান ছাবির আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ১০টি বিদ্যালয়ের কোনটিতে খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। এ কারণে জরুরিভাবে এ বিদ্যালয়গুলোতে পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

হুড়কা ইউপি চেয়ারম্যান তপন কুমার গোলদার বলেন, ‘পানির জন্য আমাকে লোকজন প্রশ্ন করে, আমি তার জবাব দিতে পারি না।’

এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘উপজেলার ১২৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে আমরা ৮৯টি বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি। পূর্বে স্থাপনকৃত অনেক নলকূপ অকেজো অবস্থায় আছে। বরাদ্দ পেলে ও পর্যায়ক্রমে সকল বিদ্যালয়ে নলকূপ, ওয়াটার হার্ভেস্ট ট্যাংক স্থাপন করে পানির সংকট দূর করা হবে।’

রামপাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে খাবার পানির যে সংকট রয়েছে তা খুব শিগগিরই নিরসন করা হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে সুপেয় পানির সংকটে না পড়ে সে জন্য বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত