Ajker Patrika

ম্যানার শেখানো

সম্পাদকীয়
ম্যানার শেখানো

ছাত্রলীগ এখন ছাত্রদের ম্যানার শেখাচ্ছে। শেখাবেই-বা না কেন, আদব–কায়দা জানা মানুষদের নিয়েই তো তাদের কারবার। কেউ যদি আদব–কায়দা না জানে, তাহলে তাদের কে শেখাবে সেটা? শিক্ষকদের ওপর এসব ছেড়ে দিলে চলে না। তাঁরা যদি এই ‘বেয়াদব’দের ক্ষমা করে দেন? তাই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী চড়াও হয়েছিলেন তিনজন ছাত্রের ওপর। তাঁরা এমনভাবে ছাত্রদের মেরেছেন যে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাঁদের ঘুরে আসতে হয়েছে হাসপাতাল।

ছাত্রলীগের এখন অনেক কাজ। যেখানে সম্ভব, সেখানেই তারা তাদের পদচারণা রাখতে চায়। তাদের যে ক্ষমতা আছে, সেটা দেখানোর নানা চেষ্টা থাকে তাদের কাজে। ম্যানার শেখানোর ব্যাপারটাও সে রকমই কিছু। সিনিয়রদের কথা শোনে না জুনিয়ররা, আর সেটা হচ্ছে বেয়াদবি—এমনই অভিযোগে মারা হয়েছে তিন ছাত্রকে। কিন্তু কোন কথা শুনতে হবে তাঁদের? যাঁরা পড়াশোনা করতে এসেছেন, তাঁরা পড়াশোনাটা করছেন তো? শিক্ষকদের সঙ্গে সম্মান রেখে কথা বলছেন তো? অধিত বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন তো? নাকি ‘সিনিয়র’ ছাত্রদের সব কথার জবাবে ‘জি হুজুর’ বলছেন? আর সেটা না বললেই তাঁদের কপালে জুটছে চপেটাঘাত! আহা! মারপিট করতে কি কম শক্তি খরচ হয়? কম ক্যালরি পোড়ে? জিম যদি দূরে হয়, তাহলে ছাত্রাবাসে বসেই তো ছাত্রদের মারপিট করে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা যায়। ছাত্রলীগ নেতারা কি শরীর ভালো রাখার এ রকম একটি সহজ পথ আবিষ্কার করে ফেললেন? যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে তো দেশের তাবৎ জিমনেসিয়ামের শনির দশা হবে। সারা দেশের ছাত্রলীগ নেতারা যদি একযোগে ‘জুনিয়র’ ছাত্রদের ‘ম্যানার’ শেখাতে শুরু করেন, তাহলে বড়সংখ্যক ‘ক্লায়েন্ট’ হারাবে জিমগুলো।

আবার ভিন্ন ঘটনাও ঘটতে পারে। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘর ছেড়ে দেওয়া হতে পারে জিমের জন্য। হ্যাঁ, এ রকম গেস্টরুম হলেও আপত্তি নেই। সে জিমে যন্ত্রপাতি কেনার কোনো দরকার নেই। দরপত্র আহ্বান করে ব্যায়ামের যন্ত্রপাতির জন্য টাকা তুলে নিয়ে সেটা অন্য কোনো কাজে লাগাতে কোনো অসুবিধা নেই। আসল যন্ত্র তো হাত আর পা। এই দুই অঙ্গের সুচারু ব্যবহারই তো নিজ শরীর সতেজ রাখতে সাহায্য করে। একবার পা ছুড়ে মারায় কত ক্যালরি খরচ হয়, তা কি আপনি জানেন? আপনি না জানলেও নিশ্চয়ই ছাত্রলীগ নেতারা জানেন। হাত এবং পা ছুড়ে জুনিয়রদের বারোটা বাজিয়ে দিলে কার কী আসে যায়?

রসিকতা থাক। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ বলেছেন, মারধরের কথা তিনি শোনেননি, ভুল-বোঝাবুঝির কথা শুনেছিলেন এবং তা মিটমাট হয়ে গেছে বলেও শুনেছেন। তাঁর কথা যদি মেনে নিতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, শিক্ষক বা কর্তৃপক্ষ আসলে এসব ব্যাপারে মৌন থাকাকেই নিরাপদ বলে মনে করেন। এবং তা শিক্ষার জন্য দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি বয়ে আনে। এ ঘটনাটাও সেই মৌনতারই ইঙ্গিত দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় স্কুলশিক্ষক গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত