Ajker Patrika

মানসিকতা নিয়ন্ত্রণের দায় নিজের ওপর বর্তায়

বাসব রায়
মানসিকতা নিয়ন্ত্রণের দায় নিজের ওপর বর্তায়

ফেসবুক এমন একটি মাধ্যম, যেখানে খুব সহজেই মানুষকে ধোঁকা দেওয়া সম্ভব এবং সুযোগসন্ধানী অনেকেই সেই কাজগুলো করে চলেছে। মানুষ নিজের পরিচয় আড়াল করে আকর্ষণীয় পদ-পদবি আর বেশভূষা ধারণ করে প্রতারণা করে যাচ্ছে। কোনো না কোনোভাবে এমন ফাঁদে পড়লে নিশ্চিত সর্বনাশ এবং কখনো কখনো তা মৃত্যুর ঝুঁকিতে পর্যন্ত গড়ায়। যদিও এমন প্রতারণা প্রায়ই সশরীরে ঘটানো হচ্ছে এবং নানারকম জটিলতায় ও ভয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা দুর্ভাবনায় পরিণত হচ্ছে। 

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মানুষ মিথ্যে পদ-পদবি বা পেশার ব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। আর দুঃখজনক হলো, আমাদের দেশের কিছু নারী বিভ্রান্ত হয়ে নানাবিধ ঝক্কিঝামেলায় পড়ছেন। ফেসবুকের অপরিচিত কারও ওপর এতটা নির্ভরযোগ্যতা বা বিশ্বাস হয় কী করে? তবে কিছু নারীও একইভাবে প্রতারণা করছেন কিছু পুরুষের সঙ্গে। বিষয়টি বেশ অবাক লাগার মতো বৈকি! যেখানে পরিচিতদের ঠিকমতো চেনা যায় না, আত্মীয়স্বজন দ্বারা মানুষ প্রতারিত হচ্ছে সেখানে একটি অপরিচিত আইডি কত সহজেই কতটা কাছাকাছি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। অবাক বলেই অবাক!

দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার প্রাইমারির গণ্ডি না পেরোনো মামুন নামের ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি ছেলেটি প্রায় ৫০ জন মেয়ের সঙ্গে প্রেম এবং ১২টি বিয়ে করেছেন। তিনি কখনো ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো ইঞ্জিনিয়ার এসব পদবি তাঁর আইডিতে ব্যবহার করতেন। একশ্রেণির নারী প্রলুব্ধ হয়ে তথাকথিত ম্যাজিস্ট্রেট বা ইঞ্জিনিয়ার ভদ্রলোকটিকে পাওয়ার জন্য সবকিছু বিলিয়ে দিতেন! এমন দুর্বলতার সুযোগে মামুন চ্যাটিং বা সরাসরি মিলনের ভিডিও বা ক্লিপস গোপনে রেখে দিয়ে সেগুলো দিয়ে ব্ল্যাকমেল করতেন। তখন এসব মেয়ে শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা। আরও যন্ত্রণাদায়ক হলো, উচ্চশিক্ষিত নারীরাও এসব লোভ-লালসার পথ থেকে দূরে নেই।

বেচারা মামুন যখন এমন কলাকৌশল প্রয়োগ করে সফল হওয়া শুরু করেন, তখন তিনি হয়তো নিত্যনতুন প্রক্রিয়ার প্রয়োগে ইতিবাচক সাফল্যের পথে ধাবিত হতে থাকেন। কারণ, অসম্ভব সাফল্যের আনন্দ তাঁকে আরও অন্ধকার অপরাধজগতে টেনে নিতে সহায়তা করে। কিন্তু অপরাধী ধরা পড়বেই আর মামুনও এখন যথারীতি কাস্টডিতে। দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থামতে তাঁর সাজা নিশ্চিত হোক, সেটাই কামনা করি। কিন্তু মামুনকে কুখ্যাত হওয়ার সুযোগ দেয় যারা তাদেরও সাজা হওয়া দরকার। অন্যভাবে নেবেন না; ক্ষোভ থেকেই এমন স্বগতোক্তি বের হলো।

যেখানে নিয়মিত অ্যাওয়ার্নেস প্রোগ্রামসহ ধর্মীয় বোধ জাগরণের সব চেষ্টা আমাদের সমাজে চলমান, সেখানে আমাদের হীন ভাবাবেগের বুঝি আর শেষ নেই। বিপদের নানারকম ভয়ংকর ঘটনাবলি অহরহ ঘটমান বা চলমান, সেখানে এসব দেখে, বুঝেও আমরা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছি। বিচারের দায় যেমন রাষ্ট্রের, ঠিক আমাদের মানসিকতাকে নিয়ন্ত্রণের দায় কিন্তু ঘুরেফিরে নিজের ওপরই বর্তায়।

লেখক: কবি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত