Ajker Patrika

শিক্ষক লাঞ্ছনা ছাত্রলীগ নেতার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ০৭
শিক্ষক লাঞ্ছনা ছাত্রলীগ নেতার

অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পাওয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের প্রভাষককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারীর বিরুদ্ধে।

গত বুধবার বিকেলে কলেজের বাংলা বিভাগের ৩০২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর শিক্ষক পরিষদ জরুরি সভা করে পালং মডেল থানায় অভিযোগ দেয়। তবে এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর বুধবার রাতেই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ।

জানা গেছে, গত বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক সম্মান চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীদের ভাইভা ছিল। এ জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন প্রতিনিধি এবং এক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এক্সটার্নাল হিসেবে ভাইভা বোর্ডে যুক্ত হন। ভাইভা শেষে অতিথিদের জন্য খাবারের আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই আয়োজনে দাওয়াত না দেওয়ার অভিযোগে নেতা-কর্মীদের নিয়ে হাজির হন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী এবং সাধারণ সম্পাদক রাসেল জমাদ্দার। এ সময় খাবারের কক্ষে থাকা শিক্ষকদের কাছে ছাত্রলীগ সভাপতিকে দাওয়াত না দেওয়ার কারণ জানতে চান ছাত্রলীগের নেতারা। বিষয়টি নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক বি এম সোহেলকে লাথি মারেন সোহাগ ব্যাপারী ও তাঁর অনুসারীরা। পরে অন্য শিক্ষকেরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। রাতেই বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক করে শিক্ষক পরিষদ। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই রাতেই ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধসহ থানায় লিখিত অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষকদের দাবি, রাতেই শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল পালং মডেল থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়।

গতকাল সকালে শিক্ষককে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে কলেজ ক্যাম্পাস এবং সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা কলেজে পড়ালেখার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, সোহাগ ব্যাপারী এই কলেজের কোনো ছাত্র নন। প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রচ্ছায়ায় তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এই কমিটি ঘোষণার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সোহাগ ও রাসেল। কলেজের বিভিন্ন কাজে চাঁদা দাবি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তাঁদের ভয়ে কেউ কলেজে মুখ খুলতে সাহস পান না।

জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. মহাসিন মাদবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগে অন্যায়কারীর কোনো স্থান নেই। তাঁরা শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ফলে গত বুধবার রাতেই জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।’

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রের এমন আচরণ খুবই নিন্দনীয় ও অমার্জনীয় অপরাধ। ঘটনার পর শিক্ষক পরিষদের সব সদস্যদের নিয়ে সভা করে রেজল্যুশন করা হয়। একই সঙ্গে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।’

অভিযুক্ত সোহাগ কলেজের কোন বর্ষের শিক্ষার্থী, জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ জানান, ‘সোহাগ কখনো এই কলেজের শিক্ষার্থী ছিল না। এখনো সে আমাদের ছাত্র না। কীভাবে সে কলেজ শাখার সভাপতি হয়েছে, তার উত্তর সংগঠনই ভালো দিতে পারবে।’

এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা রেকর্ড করা হয়নি। পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত