Ajker Patrika

ঘোলা পানি

সম্পাদকীয়
ঘোলা পানি

পাহাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চল। প্রকৃতি সেখানে চোখকে আরাম দেয়। বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব নেই শহরের মতো। দম নেওয়াটা সহজ। নদী আর ঝিরিগুলোই পানির উৎস। বছরের পর বছর সেখানকার মানুষ সবুজে বাঁচে আর নদী বা ঝিরির জলেই প্রতিদিনের কাজ চালায়। কারণ, সেখানে ভূগর্ভস্থ বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ইদানীং নদী-ঝিরির পানি খেয়ে অনেকেই ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগে ভুগছে।

কেন আর কীভাবে সেই পানি দূষিত হলো, সেই কারণও স্থানীয়রা খুঁজে পেয়েছেন—নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছ আর অবাধে তোলা হচ্ছে সেখানকার পাথর। তাই নদী আর ঝিরির পানি হয়ে পড়ছে ঘোলা, দূষিত।

এটি কোনো গল্প নয়। বান্দরবানের থানচি উপজেলার দক্ষিণ নাইন্দারীপাড়া ও উত্তর নাইন্দারীপাড়া গ্রামের মানুষ পড়েছে এ রকম সংকটে। গ্রাম দুটির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শঙ্খ নদ ও মগকক্রী নামের ঝিরি থেকে তারা পানি সংগ্রহ করে। গাছ কাটা ও পাথর উত্তোলনের ফলে এই নদ আর ঝিরির পানি ঘোলা ও দূষিত হয়ে গেছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর।

আজকের পত্রিকার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ১০-১৫ বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে যে উন্নয়নকাজ চলছে, বিশেষ করে যোগাযোগব্যবস্থার জন্য সড়ক নির্মাণ, সে জন্য মরতে হচ্ছে গাছেদের আর উঠতে হচ্ছে পাথরদের! আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে পিচ ঢালাইয়ের জন্য পাথরদের তো উঠতেই হবে আর গাছেরা সরে না গেলে সড়কের জন্য জায়গা হবে কী করে? আর সড়ক না হলে আমরা কী করে দেখতে যাব সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য? আমাদের একটু আরামের ভ্রমণের জন্য স্থানীয়রা পড়ছে বিপদে।

এই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার উপায়ও কিন্তু সবার জানা। স্থানীয়রা বিশুদ্ধ পানির জন্য জলাধার নির্মাণ ও গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য দাবি করছেন। অনেক বছর আগে নাকি এখানে একটি নলকূপ বসানো হয়েছিল। কিন্তু সেটি এখন অকার্যকর। বিকল্প নলকূপ বসানোর কোনো চেষ্টাও করা হয়নি। আবার শুষ্ক মৌসুমে ছোট ঝিরিগুলো শুকিয়ে যায়। তখন তো পানির সংকটে পড়তেই হয় স্থানীয়দের। উত্তর নাইন্দারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি নলকূপ আছে। সেটা থেকে পানি পাওয়া যায় খুবই কম। শিক্ষার্থীদের জন্য এর পানি সংরক্ষণ করায় স্থানীয়রা সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করার সুযোগ পায় না।

বান্দরবানের এই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের এ একটি নলকূপ যে কোনো সাহায্য করতে পারছে না, তা তো সবাই বুঝতেই পারছে। থানচি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সদ্য যোগ দেওয়া উপসহকারী প্রকৌশলী রেদোয়ান আহম্মেদ জানিয়েছেন, কিছু গভীর নলকূপের বরাদ্দ তিনি হাতে পেয়েছেন। ইউপি সদস্যরা চাহিদা দিলেই নাকি সেগুলো শুকনো মৌসুমের আগে স্থাপনের চেষ্টা করা হবে।

তাহলে এবার প্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষরা সময়মতো কাজটা করে ফেললেই হয়। স্থানীয়দের দুর্ভোগ দূর করতে পানি ঘোলা হওয়ার আগেই তা করা উচিত ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় স্কুলশিক্ষক গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত