রাজীব কুমার সাহা
বাংলা ভাষায় একটি অতিপরিচিত শব্দ হলো ‘মুষলধারা’; বিশেষ করে বর্ষাবিধৌত আমাদের দেশে প্রবল বেগে বৃষ্টি বোঝাতে প্রয়োগ করা হয় ‘মুষলধারে’ শব্দটি। আবার হঠাৎ করে ঝমঝমিয়ে যখন বৃষ্টি নামে, তখনো আমরা সেই বৃষ্টিকে বলি মুষলধারে বৃষ্টি।
প্রবল বেগে বৃষ্টিপাত বোঝাতে ইংরেজি প্রবাদে ব্যবহার করা হয় ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ শব্দগুচ্ছ; অর্থাৎ বিড়াল-কুকুরের সঙ্গে বৃষ্টির সম্পর্ক জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন? মুষল বা বিড়াল-কুকুরের সঙ্গে বৃষ্টির কী সংযোগ? তবে চলুন জেনে নিই, বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বিড়াল-কুকুর এবং মুষলের সম্পর্কের আদ্যোপান্ত।
সংস্কৃত ‘মুষল’ শব্দের অর্থ হলো যথাক্রমে মুগুর, মুদ্গর, গদা; ঢেঁকির মোনা; হামানদিস্তার ডাঁটি এবং উদূখলের পেষণদণ্ড। এটি বিশেষ্য পদ। অর্থটি একটু পরিষ্কারভাবে বললে ঢেঁকির প্রান্তভাগে সংযুক্ত শুঁড়সদৃশ্য দণ্ডটি হলো মুষল। আবার শস্যাদি চূর্ণ করার জন্য উখলিতে যে মোটা দণ্ড ব্যবহার করা হয়, সেটিও মুষল। সংস্কৃত ‘মুষল’ এবং ‘ধারা’ শব্দসহযোগে গঠিত হয়েছে মুষলধারা শব্দটি। এটি বিশেষ্য পদ।
মুষলধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো মুষলের মতো স্থূল ধারায় পতন; অর্থাৎ যে বৃষ্টি মুষলের মতো স্থূল ধারায় (ক্রমাগত বড় বড় ফোঁটায়) পতিত হচ্ছে। অনবরত ক্ষুরধারভাবে বৃষ্টি হওয়ার এ অবস্থা বোঝাতে ইংরেজি প্রবাদে ব্যবহার করা হয় ‘ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ শব্দগুচ্ছ আর বাংলায় ‘মুষলধারে’।
কথিত রয়েছে গ্রিক উপকথা থেকেই ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ বাগধারাটির জন্ম। তবে ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৩৮ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত ইংরেজ লেখক জোনাথন সুইফটের এক ব্যঙ্গাত্মক লেখায় একটি চরিত্রের কথোপকথনে এই বাগধারাটির বর্তমান রূপ ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ কথাটি উঠে আসে। তবে অধিকাংশের মতে, বাগধারটির উদ্ভব সপ্তদশ শতকে লন্ডনে সংঘটিত প্রবল বৃষ্টিপাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে ব্রিটিশ শহরগুলোর পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা খুব একটা উন্নত ছিল না। সেসময় ভারী বৃষ্টিপাত হলেই শহরগুলোতে ছোটখাটো বন্যার সৃষ্টি হতো। ফলে বন্যার পানিতে ডুবে কুকুর-বিড়ালের মতো অনেক প্রাণী মারা যেত। ক্রমাগত বর্ষণের পর প্রাণীগুলোর মৃতদেহ ভেসে থাকত চারপাশের পানিতে। অনেকে মনে করতেন, এই প্রাণীগুলো বাইবেলে উল্লিখিত সেই ব্যাং ঝরে পড়া বৃষ্টির মতোই আকাশ থেকে ঝরে পড়েছে।
আকাশ থেকে মাছ ও পাখির মতো ছোটখাটো প্রাণী বৃষ্টির সঙ্গে ঝরে পড়ার অনেক ঘটনা থাকলেও কুকুর-বিড়াল ঝরে পড়ার মতো ঘটনা রীতিমতো বিরল। তবে আকাশ থেকে না পড়লেও রাস্তায় ভেসে থাকা কুকুর কিংবা বিড়ালের মৃতদেহ থেকেই হয়তো এ বাগধারাটি এসেছে বলে অনুমান করা হয়।
বিরামহীন স্থূল ধারায় (বড় বড় ফোঁটায়) যখন বৃষ্টি পড়তে থাকে, সেই অবস্থাকে বলা হয় ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ বা ‘মুষলধারায় বর্ষণ’। অনুরূপ উদূখলে যখন অনেকে একত্রে ধান ভানেন, সেই দৃশ্যটি তখন বৃষ্টিধারার মতো মনে হয়। কেননা ধান ভানার সময় মুষল একটা নির্দিষ্ট ছন্দে ক্রমাগত সশব্দে পতিত হতে থাকে। মূলত উদূখলে মুষল পড়ার এ দৃশ্যটির সঙ্গে তুলনা করেই বৃষ্টিপাতের প্রবলধারাটি বাংলা ভাষায় মুষলধারার রূপ পরিগ্রহ করেছে।
লেখক: আভিধানিক ও প্রাবন্ধিক
বাংলা ভাষায় একটি অতিপরিচিত শব্দ হলো ‘মুষলধারা’; বিশেষ করে বর্ষাবিধৌত আমাদের দেশে প্রবল বেগে বৃষ্টি বোঝাতে প্রয়োগ করা হয় ‘মুষলধারে’ শব্দটি। আবার হঠাৎ করে ঝমঝমিয়ে যখন বৃষ্টি নামে, তখনো আমরা সেই বৃষ্টিকে বলি মুষলধারে বৃষ্টি।
প্রবল বেগে বৃষ্টিপাত বোঝাতে ইংরেজি প্রবাদে ব্যবহার করা হয় ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ শব্দগুচ্ছ; অর্থাৎ বিড়াল-কুকুরের সঙ্গে বৃষ্টির সম্পর্ক জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন? মুষল বা বিড়াল-কুকুরের সঙ্গে বৃষ্টির কী সংযোগ? তবে চলুন জেনে নিই, বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বিড়াল-কুকুর এবং মুষলের সম্পর্কের আদ্যোপান্ত।
সংস্কৃত ‘মুষল’ শব্দের অর্থ হলো যথাক্রমে মুগুর, মুদ্গর, গদা; ঢেঁকির মোনা; হামানদিস্তার ডাঁটি এবং উদূখলের পেষণদণ্ড। এটি বিশেষ্য পদ। অর্থটি একটু পরিষ্কারভাবে বললে ঢেঁকির প্রান্তভাগে সংযুক্ত শুঁড়সদৃশ্য দণ্ডটি হলো মুষল। আবার শস্যাদি চূর্ণ করার জন্য উখলিতে যে মোটা দণ্ড ব্যবহার করা হয়, সেটিও মুষল। সংস্কৃত ‘মুষল’ এবং ‘ধারা’ শব্দসহযোগে গঠিত হয়েছে মুষলধারা শব্দটি। এটি বিশেষ্য পদ।
মুষলধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো মুষলের মতো স্থূল ধারায় পতন; অর্থাৎ যে বৃষ্টি মুষলের মতো স্থূল ধারায় (ক্রমাগত বড় বড় ফোঁটায়) পতিত হচ্ছে। অনবরত ক্ষুরধারভাবে বৃষ্টি হওয়ার এ অবস্থা বোঝাতে ইংরেজি প্রবাদে ব্যবহার করা হয় ‘ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ শব্দগুচ্ছ আর বাংলায় ‘মুষলধারে’।
কথিত রয়েছে গ্রিক উপকথা থেকেই ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ বাগধারাটির জন্ম। তবে ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৩৮ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত ইংরেজ লেখক জোনাথন সুইফটের এক ব্যঙ্গাত্মক লেখায় একটি চরিত্রের কথোপকথনে এই বাগধারাটির বর্তমান রূপ ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ কথাটি উঠে আসে। তবে অধিকাংশের মতে, বাগধারটির উদ্ভব সপ্তদশ শতকে লন্ডনে সংঘটিত প্রবল বৃষ্টিপাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে ব্রিটিশ শহরগুলোর পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা খুব একটা উন্নত ছিল না। সেসময় ভারী বৃষ্টিপাত হলেই শহরগুলোতে ছোটখাটো বন্যার সৃষ্টি হতো। ফলে বন্যার পানিতে ডুবে কুকুর-বিড়ালের মতো অনেক প্রাণী মারা যেত। ক্রমাগত বর্ষণের পর প্রাণীগুলোর মৃতদেহ ভেসে থাকত চারপাশের পানিতে। অনেকে মনে করতেন, এই প্রাণীগুলো বাইবেলে উল্লিখিত সেই ব্যাং ঝরে পড়া বৃষ্টির মতোই আকাশ থেকে ঝরে পড়েছে।
আকাশ থেকে মাছ ও পাখির মতো ছোটখাটো প্রাণী বৃষ্টির সঙ্গে ঝরে পড়ার অনেক ঘটনা থাকলেও কুকুর-বিড়াল ঝরে পড়ার মতো ঘটনা রীতিমতো বিরল। তবে আকাশ থেকে না পড়লেও রাস্তায় ভেসে থাকা কুকুর কিংবা বিড়ালের মৃতদেহ থেকেই হয়তো এ বাগধারাটি এসেছে বলে অনুমান করা হয়।
বিরামহীন স্থূল ধারায় (বড় বড় ফোঁটায়) যখন বৃষ্টি পড়তে থাকে, সেই অবস্থাকে বলা হয় ‘রেইনিং ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ বা ‘মুষলধারায় বর্ষণ’। অনুরূপ উদূখলে যখন অনেকে একত্রে ধান ভানেন, সেই দৃশ্যটি তখন বৃষ্টিধারার মতো মনে হয়। কেননা ধান ভানার সময় মুষল একটা নির্দিষ্ট ছন্দে ক্রমাগত সশব্দে পতিত হতে থাকে। মূলত উদূখলে মুষল পড়ার এ দৃশ্যটির সঙ্গে তুলনা করেই বৃষ্টিপাতের প্রবলধারাটি বাংলা ভাষায় মুষলধারার রূপ পরিগ্রহ করেছে।
লেখক: আভিধানিক ও প্রাবন্ধিক
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫