Ajker Patrika

লেনদেনের নতুন বাস্তবতা মোবাইল ফোন

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩: ১৩
লেনদেনের নতুন বাস্তবতা মোবাইল ফোন

মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বা এমএফএস পুরো আর্থিক লেনদেনের চিত্রই পাল্টে দিয়েছে। এর ফলে সশরীর ব্যাংকে গিয়ে লেনদেন করার দিন প্রায় শেষের পথে। প্রযুক্তি আর্থিক সেবাকে মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। প্রতিনিয়ত এ সেবা লেনদেনকে করেছে সহজ ও দ্রুততর। হাতের মোবাইল ফোনটি দিয়েই এখন টাকা পাঠানো, ব্যাংক থেকে টাকা তোলা, মোবাইল রিচার্জ, রেমিট্যান্স, বিল পরিশোধ, সরকারি ভাতা, বেতন-বৃত্তি প্রদানসহ নানান লেনদেনের কাজ সারা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সংস্থাটি ২০১০ সালে এমএফএস সেবার জন্য ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক অনুমোদন দেয়। পরের বছরে কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায়, এমক্যাশ, ট্যাপ, মাইক্যাশ, টেলিক্যাশ, ট্যাপ এন পে, ওকে ওয়ালেটসহ ১৭টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ব্যাংকের বিশেষ মডেলে রয়েছে ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠান। এসব এমএফএস প্রতিষ্ঠার এক যুগের মধ্যেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব ঘটেছে। এ সময়ে সারা দেশে এমএফএসের হিসাবধারীর সংখ্যা ১৮ কোটি ছাড়িয়েছে। তাদের এজেন্ট সংখ্যা ১৫ লাখের বেশি। আর মাসে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা।

দেশে ২০১১ সালের মার্চে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। একই বছরের জুলাইতে এমএফএস সেবায় আসে ব্র্যাক ব্যাংক। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ‘রকেট’ নামে প্রথম এ সেবা শুরু করলেও প্রথমবারের মতো ‘বিকাশ’ নামে আলাদা সাবসিডিয়ারি গঠন করে ব্র্যাক ব্যাংক। বিকাশ ও রকেটের বাইরে এমএফএস সেবা রয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এমক্যাশ, মার্কেন্টাইলের মাইক্যাশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ফার্স্ট পে শিওর ক্যাশ, ওয়ান ব্যাংকের ওকে ব্যাংকিং, রূপালী ব্যাংক শিওর ক্যাশ, সাউথইস্টের টেলিক্যাশ, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ইসলামিক ওয়ালেট, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের স্পট ক্যাশ, মেঘনা ব্যাংকের ট্যাপ এন পে, ইউসিবির উপায় এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের ট্যাপ। ব্যাংকগুলোর বাইরে এখন ‘নগদ’ ডাক বিভাগের সঙ্গে মুনাফা ভাগাভাগির ভিত্তিতে এমএফএস সেবা দিচ্ছে। পাশাপাশি এমএফএস হিসাব ছাড়া এখন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড থেকে টাকা আনা যাচ্ছে। রেল, বাস ও বিমানের টিকিট; হোটেল বুকিং ও রাইড শেয়ারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্ট অপশন এমএফএসের মার্চেন্ট পেমেন্টকে নাগরিকদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের মোবাইল আর্থিক সেবা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের অন্যতম বাহন হিসেবে স্বীকৃত। এটি ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা জনগণকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় এনেছে। শুরুতে টাকা পাঠানোর জন্য ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউটের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল সেবা যুক্ত করেছে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। মোবাইল রিচার্জ করা, বিদেশ থেকে সরাসরি রেমিট্যান্স পাওয়া, মোবাইল অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থের ওপর মুনাফা, বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি সেবার বিল পেমেন্ট, ব্যাংক থেকে এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা আনা, এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভাতা ও উপবৃত্তি বিতরণ, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকসহ বিভিন্ন শিল্পের শ্রমিকদের বেতন বিতরণ, এমএফএস অ্যাকাউন্টে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ন্যানো ঋণ এবং মাসিক সঞ্চয় সেবাসহ প্রতিনিয়তই নতুন সেবায় সমৃদ্ধ হচ্ছে এমএফএস খাত।

এ বিষয়ে নগদের হেড অব কমিউনিকেশনস মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, দৈনন্দিন লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য এবং ব্যবহারে সুবিধার জন্য মানুষ ধীরে ধীরে মোবাইল আর্থিক সেবার ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন সহজ হওয়ায় মানুষ এ মাধ্যমে লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সহজ ও বিস্তৃত নেটওয়ার্ক দেশব্যাপী বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লেনদেন করতে ঝামেলা না থাকায় সেবাটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত