Ajker Patrika

ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

আলী আকবর সাজু, ভালুকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৪
ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

ভালুকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, আবাসিক এলাকা ও ফসলি জমির পাশে আইন অমান্য করে গড়ে তোলা হয়েছে অন্তত ১২টি ইটভাটা। অনুমোদনবিহীন এসব ভাটায় অবাধে কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট। এসব ভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। টপ সয়েল কাটায় উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলি জমি। এরপরও এসব ভাটা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খারুয়ালী, ধলিয়া, মেদিলা, মেদুয়ারী, ভান্ডাব, বিরুনীয়া, পুরুড়া, রাংচাপড়া, শান্তিগঞ্জ, চান্দরাটি ও উড়াহাটি গ্রামে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। ভরাডোবা নারাঙ্গী পাড়া মিরাজ ইটভাটায় দেখা যায়, কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ভাটার চিমনি থেকে আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে ছাই মিশ্রিত ধোঁয়া। একই চিত্র ধলিয়া পলাশতলী গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পাশাপাশি তিনটি ইটভাটায়। ওই ভাটাগুলোয় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইটভাটার সৃষ্ট ধোঁয়ায় শিশু ও বয়স্করা বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পরিবেশ বিপর্যয় ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

একটি ইটভাটা পাশের বাসিন্দা শহীদ পাঠান বলেন, ‘লাকড়ি পোড়ানোর সময় ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় এলাকা ছেয়ে যায়। এসব ধোঁয়ায় গাছের ফল ও খেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’

অপরদিকে ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে ইট তৈরির কাঁচা মাল হিসেবে ব্যবহার করায় জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। জমিতে ফসল উৎপাদনও কমে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৩ কার্যকর হয়েছে ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে। এই আইন অনুযায়ী, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, উন্নয়নের স্বার্থে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা অর্থাৎ জিগজাগ ক্লিন, হাইব্রিড হফম্যান ক্লিন, ভাটিকেল সফটক্লিন বা অনুরূপ উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। আবাসিক, জনবসতিপূর্ণ সংরক্ষিত বনভূমি এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।

এ ছাড়া বনাঞ্চল থেকে কমপক্ষে দুই কিলোমিটার দূরে ভাটা স্থাপন করার বিধান থাকলেও তা মানছে না কেউ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছারপত্র, জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ও লাইসেন্স ব্যতীত ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এসব নিয়ম অমান্যকারীর বিরুদ্ধে জেল জরিমানার বিধান থাকলেও বছরের পর বছর এসবের তোয়াক্কা না করেই চালানো হচ্ছে ইটভাটা।

এ বিষয়ে ইটভাটা মালিক সমিতির সহসভাপতি হুমায়ুন কবির খান বলেন, উপজেলায় ১০ টির মতো ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ২-৩ টির লাইসেন্স রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাটা মালিকেরা জানান, ম্যানেজের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে এসব ইটভাটা। এতে তাঁদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল বাকীউল বারী বলেন, একটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। অন্য ইটভাটার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদার বলেন, ভালুকা উপজেলায় ৩-৪টি ইটভাটার বৈধতা রয়েছে। অন্য ভাটার কোনো বৈধতা নেই। অবৈধ ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীরা নারীবিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে: ৬৮ মানবাধিকার সংগঠন

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত