Ajker Patrika

সড়কে নিম্নমানের কাজ বন্ধ এলাকাবাসীর বাধায়

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
সড়কে নিম্নমানের কাজ বন্ধ এলাকাবাসীর বাধায়

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার দেওহাটা-ধানতারা ২ হাজার ৫৫০ মিটার আঞ্চলিক সড়ক পাকার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিমেন্টের পরিমাণ কম দিয়ে নিম্নমানের খোয়া ও বালুর ব্যবহার বেশি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন কাজ বন্ধ করে দেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান জানান, প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারের জন্য দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পেয়েছে। এর মধ্যে ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয়ে দেওহাটা থেকে কোর্টবহুরিয়া পর্যন্ত ২ হাজার ৫৫০ মিটার অংশের কাজ পেয়েছে টাঙ্গাইলের ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। তবে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন নাভিলা এন্টারপ্রাইজ নামে টাঙ্গাইলের অপর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৪০০ মিটার আরসিসির কাজ সম্পন্ন করেছে।

অপর দিকে কোর্টবহুরিয়া থেকে ধানতারা পর্যন্ত ১১ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার ২৪ টাকা ব্যয়ে ৬ কিলোমিটার কাজের দায়িত্ব পেয়েছে এমএসসিএমআই-ইইসিসি (জেভি) নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। তবে এই অংশের ঠিকাদার এখনো কাজ শুরু করেনি।

এদিকে দেওহাটা অংশের সিসি ঢালায় কাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের খোয়া ও বালু ব্যবহারের পাশাপাশি সিমেন্টের পরিমাণ কম ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন এ নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দেওহাটা-ধানতারা-ধামরাই সড়কের দেওহাটা থেকে বিলগজারিয়া পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটারের আঞ্চলিক সড়কটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জনগুরুত্বপূর্ণ। এ সড়কটি নির্মিত হলে জেলার কয়েকটি উপজেলা ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার যানবাহন বিকল্প পথে কম সময়ে রাজধানীর সঙ্গে যাতায়াত করতে পারবে। কিন্তু নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কোর্টবহুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছানোয়ার হোসেন ও দেওহাটা গ্রামের নজরুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ১২ বস্তা খোয়া ৬ বস্তা বালুর মধ্যে এক ব্যাগ সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। সকালে ঢালায় করা হলেও বিকেলেও তা জমছে না।

সরেজমিন কোর্টবহুরিয়া অংশে গিয়ে ঢালাইকাজে ব্যবহার করা সিমেন্টের পরিমাণ কম ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ঢালাইকাজ চললেও সেখানে প্রকৌশল অফিসের কাউকে দেখা যায়নি। এ সময় দুজন নির্মাণশ্রমিক ঠিকাদারের নির্দেশে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, ‘১২ বস্তা খোয়া, ৬ বস্তা বালুর মধ্যে ১ বস্তা সিমেন্ট ব্যবহার করতে বলা হয়েছে আমাদের।’

তদারকির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভিলা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার সাইদুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের খামখেয়ালিতে এ অংশে সিমেন্টের তুলনায় বালু ও খোয়ার ব্যবহার বেশি হয়েছে। তবে বারবার চেষ্টা করেও নাভিলা এন্টারপ্রাইজের মালিক সোহেল রানার সঙ্গে যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গোড়াই ইউপির চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শুনেছি নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় জনগুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক এ সড়কের কাজ এলাকাবাসী বন্ধ করে দিয়েছে। আমিসহ এলাকাবাসী চাই যথাযথ নিয়ম মেনে ঠিকাদার কাজ করুক।’ এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের নির্মাণকাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারকে নোটিশ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প: ইউএনও-উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শুনানি কাল

চীন–রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে কয়েক দশকের মার্কিন প্রচেষ্টা ভেস্তে দিচ্ছেন ট্রাম্প: জন বোল্টন

‘হানি ট্র্যাপের’ ঘটনা ভিডিও করায় খুন হন সাংবাদিক তুহিন: পুলিশ

আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন’ দুর্নীতির প্রমাণ আছে: সাবেক সচিব

স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান— ৯৯৯–এ স্বামীর ফোন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত